Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রবিবাসরীয় ভোটপ্রচার জমজমাট

ভোট প্রচারে তাই প্রার্থীদের অনেকেই যোগ দিলেন দোলের উৎসবে। কেউ সামিল হলেন আদিবাসীদের নৃত্যানুষ্ঠানে। আবার কেউ চা তৈরি করে খাওয়ালেন দলীয় কর্মীদেরই। ভোট ঘোষণার পরে প্রথম রবিবারের প্রচারেই বৈচিত্র দুই জেলায়

বাড়ি গিয়ে প্রচার আরামবাগের সিপিএম প্রার্থী শক্তিমোহন মালিকের। ছবি: মোহন দাস।

বাড়ি গিয়ে প্রচার আরামবাগের সিপিএম প্রার্থী শক্তিমোহন মালিকের। ছবি: মোহন দাস।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:৩২
Share: Save:

আকাশ যদিও মেঘলা, তবু তো বসন্ত!

ভোট প্রচারে তাই প্রার্থীদের অনেকেই যোগ দিলেন দোলের উৎসবে। কেউ সামিল হলেন আদিবাসীদের নৃত্যানুষ্ঠানে। আবার কেউ চা তৈরি করে খাওয়ালেন দলীয় কর্মীদেরই। ভোট ঘোষণার পরে প্রথম রবিবারের প্রচারেই বৈচিত্র দুই জেলায়

সকালে উত্তরপাড়ায় কর্মিসভা করেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘মা মাটি মানুষের’ গানে তালি দিতে দিতে গলা মেলাতে দেখা যায় তাঁকে। তাল মেলাতে থাকেন কর্মীরাও। এর পর তিনি ডোমজুড় এবং জগৎবল্লভপুরে কর্মিসভা করেন। সন্ধ্যায় আবার তাঁকে পাওয়া যায় রিষড়ায় মারোয়াড়ি সংগঠনের হোলি মিলনোৎসবে উৎসবে। সেখানেও গানবাজনায় মেতে ওঠেন তিনি। বাইরে তখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি।

আরামবাগে শাসক দলের প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার দুপুরে কর্মিসভা করেন। সন্ধ্যা নামার মুখে তিনিও গোঘাটের রঘুবাটীতে আদিবাসীদের নাচের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। মাঠে নেমে নৃত্যশিল্পীদের হাত ধরে ধামসা-মাদলের তালে তালে কোমর নাড়াতেও দেখা যায় তাঁকে। চন্দননগরে কর্মিসভা করেন হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগ।

কর্মীদের চাঙ্গা করতে উত্তরপাড়ায় বক্তৃতা শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

হুগলির সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহাও ছুটির দিনে কর্মিদের সঙ্গে মোলাকাতে ব্যস্ত ছিলেন। সকালে তিনি চন্দননগরের চাউলপট্টিতে দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সেরে নেন। চাউলপট্টি মন্দিরের সামনে থেকে উর্দিবাজার এলাকায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে পায়ে হেঁটে প্রচার চালান। এই শহরে পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত শাসক দলকে উদ্দেশ্য করে বামপ্রার্থীর খোঁচা, ‘‘যাদের পুরসভা চালানোর ক্ষমতা নেই, তারা চালাবে দেশ! এখানে শাসকদলে দলাদলি চরমে।’’ বিকেলে প্রদীপবাবু সিঙ্গুরের দলুইগাছাতে কর্মিসভা করেন। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্যনেতা শ্যামল চক্রবর্তী এবং আরামবাগের দলীয় প্রার্থী শক্তিমোহন মালিক। সকালে আরামবাগ শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার চালান শক্তিমোহনবাবু।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল এবং সিপিএম। পাশাপাশি উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভাকেন্দ্রের উপ-নির্বাচনেও প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল। লোকসভায় তৃণমূল প্রার্থী সাজদা আহমেদ, পূর্ব বিধানসভায় তাদের প্রার্থী ইদ্রিশ আলি। উ‌লুবেড়িয়া লোকসভার সিপিএমের প্রার্থী মাকসুদা বেগম— রবিবার তিনজনেই ব্যস্ত থাকলেন কর্মিসভা নিয়ে।

সাজদা আহমেদ এদিন বিকেলে শ্যামপুরে তিনটি কর্মিসভা করেন। ইদ্রিশ এ দিন উলুবেড়িয়ায় দলের কার্যালয়ে তাঁর বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন কাউন্সিলর, পঞ্চায়েতের প্রধান ও সদস্য, দলের বিভিন্ন পদাধিকারীর সঙ্গে আলাপ করেন। মাকসুদা সকালে চেঙ্গাইলে একটি রক্তদান শিবিরে যোগ দিয়ে জনসংযোগ শুরু করেন। সেখান থেকে সোজা বাউড়িয়া। পুলওয়ামা জঙ্গি হামলায় নিহত জওয়ান বাবলু সাঁতরার স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। যদিও লোকসভা ভোট নিয়ে কোনও কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন নিহত জওয়ানের স্ত্রী মিতা সাঁতরা। সৌজন্য সাক্ষাতের কথা বলেছেন মাকসুদাও। চেঙ্গাইল থেকে তিনি বাগনান এবং আমতায় দলীয় কার্যালয়ে কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হন। আমতায় একটি মিছিলেও হাটেন। চেঙ্গাইলে রক্তদান শিবিরের আগে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় মাকসুদাকে চা খাওয়ানোর কথা বলেন কয়েকজন। চা তৈরি করতে এগিয়ে যান প্রার্থী নিজেই। মাকসুদা বলেন, ‘‘২০০৯ সালের পর থেকে উলুবেড়িয়ার কথা সংসদে আর বলেনি কেউ। অথচ, উলুবেড়িয়া কৃষি ও শিল্প—দুই-ই আছে। মানুষই আমাকে জয়ী করবেন তাঁদের কথা বলার জন্য।’’

তৃণমূলের হাওড়া গ্রামীণ জেলা সম্পাদক পুলক রায় বলেন, ‘‘নির্বাচনের দেরি আছে। তবুও আমরা প্রচারে ফাঁক রাখতে চাই না। তবে প্রাথমিক ভাবে কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কটা প্রার্থীরা ঝালিয়ে নিচ্ছেন। পরে জনসভা বা অন্যান্য কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’’ সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘কর্মীদের সঙ্গে প্রার্থীর প্রাথমিক পরিচিতির কাজটি এগিয়ে রাখা হচ্ছে। অন্যান্য কর্মসূচি পরে ঘোষণা করা হবে।’’

বিজেপি অবশ্য এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি কোথাও। দুই জেলাতেই প্রচারে কিছুটা পিছিয়েই তারা। যদিও বিজেপি নেতারা তা মানতে নারাজ। দলের আরামবাগ জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “প্রতিদিনই তৃণমূলের নেতারা কর্মী-সমর্থক নিয়ে আমাদের দলে আসছেন। সেটাই তো বড় প্রচার! প্রার্থী ঘোষণা হলে জোরকদমে প্রচার চলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE