শনিবার চাঁচলে রাহুল গাঁধীর সভায় ভিড়। নিজস্ব চিত্র
সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিয়ে রাজ্যের অন্য তিন দলের মতো ব্রিগেড সমাবেশ আয়োজনের পথে যায়নি কংগ্রেস। কিন্তু মালদহের চাঁচলে শনিবার রাহুল গাঁধীর সভায় উপচে পড়া ভিড়ে উজ্জীবিত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। ভোট-পর্বের মধ্যেই তাঁরা আরও বারকয়েক কংগ্রেস সভাপতিকে রাজ্যে আনতে চাইছেন। পাশাপাশিই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট কেটে রাহুল আসলে নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত করতে চাইছেন কি না, তৃণমূলের এই খোঁচার জবাবে রাজ্য সরকারের কাছে উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সংক্রান্ত শ্বেতপত্র দাবি করছেন তাঁরা।
উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূর লোকসভা ভোটের আগে দল বদলে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন। মালদহ জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী থাকাকালীন পঞ্চায়েত ভোটের পরে বোর্ড গঠনে তৃণমূলকেই সমর্থন করার জন্য দলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মৌসম। তখনও ক্ষুব্ধ কর্মীদের একাংশ দল ছেড়েছিলেন। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে সেই উত্তর মালদহের সমাবেশে ভিড়ের ছবি রাহুল টুইট করায় জাতীয় স্তরেও গত ২৪ ঘণ্টায় চর্চা হয়েছে। মালদহের মানুষের প্রতি ‘অকৃত্রিম ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা’ জানিয়েছেন রাহুল। আর প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা উৎসাহিত সমাবেশে সংখ্যালঘু, গরিব মানুষের উপস্থিতি দেখে।
কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘দলের কর্মী-সমর্থক এবং সাধারণ মানুষ নিজেদের উদ্যোগে যে ভাবে ছোট ছোট গাড়িতে সমাবেশে এসেছিলেন, সেটা অভাবনীয়! পঞ্চায়েতে ভোট লুঠ হয়েছিল। লোকসভায় সুষ্ঠু নির্বাচন হলে উত্তরবঙ্গে আমাদের ভোট ধরে রাখতে পারাই এখন লক্ষ্য।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিধান ভবনে রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র জানিয়েছেন, আরও কিছু সভার দিনক্ষণ ঠিক করার জন্য রাহুলের দফতরের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করছেন। দীপা দাশমুন্সি, আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীরা চাঁচলে সাক্ষাতেই রাহুলকে এক প্রস্ত অনুরোধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কায়দায় কি কংগ্রেস সভাপতি নানা জায়গায় সভা করবেন? সোমেনবাবু বলেন, ‘‘মোদী কোথাও গেলেই রাহুল গাঁধীকে পিছনে পিছনে যেতে হবে, এমন কোনও কথা নেই! কোথায় কোথায় তাঁকে নিয়ে সমাবেশ হতে পারে, তার পরিকল্পনা চলছে।’’
রাহুলকে কটাক্ষ করায় তৃণমূলকে পাল্টা এক হাত নিয়েছেন সোমেনবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সমাবেশের ভিড় দেখে মতিভ্রম হয়েছে বলে রাজ্যের এক মন্ত্রী দাবি করছেন, এতে বিজেপির সুবিধা হবে! যে মানুষটা বিজেপির ঘুম কেড়ে নিয়েছেন, তাদের হাত থেকে তিন রাজ্য কেড়ে নিয়েছেন, তাঁর প্রতি এমন আক্রমণের জবাব মানুষ দেবেন।’’ মমতার আমলে কৃষকদের আয় তিন গুণ বেড়ে গেলেও রাহুল না জেনে কথা বলেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। সোমেনবাবুর প্রশ্ন, ‘‘কৃষকদের আয় তিন গুণ বেড়ে গেলে আবার ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প করে তাঁদের সহায়তার দাবি কেন করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে? কর্মসংস্থানের কী হাল, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) চাকরিপ্রার্থীদের ২৫ দিনের অনশনেই তা বোঝা যাচ্ছে। আমাদের দাবি, প্রকৃত কর্মসংস্থানের তথ্য জানিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক রাজ্য সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy