আইনুল হক। ফাইল চিত্র
সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার প্রায় আড়াই বছর পরে বিজেপি-তে যোগ দিলেন বর্ধমানের প্রাক্তন পুরপ্রধান আইনুল হক। শনিবার কলকাতায় তাঁর যোগদানের কথা ঘোষণা করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আইনুলের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বর্ধমান শহরের কিছু অনুগামী।
দলের প্রাক্তন নেতার বিজেপি-তে যোগদান প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল থেকে ওঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আমাদের যাঁদের বহিষ্কার করা হয়, তাঁরা বিজেপিতে যান।’’ আইনুল অবশ্য বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে শাসকদলের পালাবদল করতে চাই। সে জন্য এই মুহূর্তে বিজেপি ছাড়া অন্য কোনও দল নেই।’’
বর্ধমানের রাজনীতিতে প্রয়াত সিপিএম নেতা নিরুপম সেনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন আইনুল। ছাত্রজীবনেই তিনি বাম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৮৩ থেকে ছ’বছর এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক ছিলেন। ২০০১-এ সিপিএমের জেলা কমিটিতে ঢোকেন। ২০০৩ সালে পুরভোটে জিতে বর্ধমানের উপ-পুরপ্রধান হন। ২০০৮-এ ফের জিতে পুরপ্রধান হন। ২০১৪ সালে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে ‘কো-অপ্ট’, পরের ফেব্রুয়ারিতে পাকাপাকি সদস্য হন। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রে দল তাঁকে প্রার্থী করে। তৃণমূলের রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হেরে যান আইনুল।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিধানসভা ভোটের পাঁচ মাস পরেই, সে বছর অক্টোবরে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অনৈতিক কাজের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করে সিপিএম। এর পর থেকে তিনি মেয়ের কাছে কখনও দিল্লি, কখনও দক্ষিণ ভারতে থাকতেন। মাঝে-মধ্যে বর্ধমান আসতেন। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, আইনুল দলে যোগ দিতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু দলের বর্ধমান শহরের নেতারা রাজি ছিলেন না। আইনুল অবশ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছের কথা মানতে চাননি। সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরপরই তিনি দাবি করেছিলেন, কমিউনিস্ট মতাদর্শের বাইরে যাওয়ার প্রশ্ন নেই।
তবে বিজেপি সূত্রের দাবি, দলের বর্ধমানের এক নেতার মাধ্যমে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আইনুলের যোগাযোগ তৈরি হয়। দিন তিনের আগে চূড়ান্ত হয়, আইনুল বিজেপি-তে যোগ দেবেন। শনিবার আইনুল বলেন, “আমি রাজনীতির লোক। ৪৩ বছর রাজনীতি করার পরে ডান-বাম বুঝি না। মানুষের জন্য, দেশের স্বার্থে কাজ করতে চাই।’’ তাঁর আরও দাবি, বর্ধমান শহর-সহ জেলার অনেকেই বিজেপি-তে যোগ দেবেন।
তৃণমূলের অন্যতম জেলা সাধারণ সম্পাদক খোকন দাসের বক্তব্য, “আইনুল হককে মানুষ গ্রহণ করেননি। তিনি কোন দলে গেলেন, সে নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy