Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

অধীর-ডালুর পথ সুগমে হাত বামের

দীপা দাশমুন্সি, আব্দুল মান্নান, শঙ্কর মালাকারেরা যখন জোটের বিরোধিতা করেছেন এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র সেই সুরেই দিল্লির কাছে সওয়াল ও বামেদের আক্রমণ করেছেন, অধীর ও ডালুবাবু একেবারেই তা করেননি।

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০১:৪৬
Share: Save:

জোট বা সার্বিক সমঝোতার রাস্তা থেকে সরে এসেছে কংগ্রেস। কিন্তু কংগ্রেসের দুই সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী ও আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীর জয়ের রাস্তা পরিষ্কার করতে হাত বাড়িয়ে দিতে চাইছে বামফ্রন্ট। খব বড় অঘটন না ঘটলে বহরমপুর ও মালদহ দক্ষিণ লোকসভা আসনে প্রার্থী দিচ্ছে না বামেরা।

সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণ দেখিয়েই ওই দুই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সিপিএম। তবে তাদের আসল উদ্দেশ্য, বিজেপি ও তৃণমূলকে রুখতে বামেদের ‘আন্তরিকতা’য় কোনও ঘাটতি নেই, এই বার্তা জনসমক্ষে রেখে যাওয়া। দীপা দাশমুন্সি, আব্দুল মান্নান, শঙ্কর মালাকারেরা যখন জোটের বিরোধিতা করেছেন এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র সেই সুরেই দিল্লির কাছে সওয়াল ও বামেদের আক্রমণ করেছেন, অধীর ও ডালুবাবু একেবারেই তা করেননি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে অধীরবাবুই তিন বছর আগে বামেদের সঙ্গে বোঝাপড়ার পথে এগিয়েছিলেন। আর ডালুবাবু এখনও বামেদের সঙ্গে সম্মানজনক জোটের পক্ষে মত দিচ্ছেন। তাঁদের দুই আসন ছেড়েই ‘সদিচ্ছা’র বার্তা দিতে চাইছে বামেরা।

পরিসংখ্যান কষে সিপিএম এবং বামফ্রন্ট ঠিক করেছে, যে সব আসনে গত বার ২০%-এর নীচে তারা ভোট পেয়েছিল, সেখানে এ বার প্রার্থী দেওয়া হবে না। বহরমপুরে গত বার আরএসপি প্রার্থী ১৯.৫৪% এবং মালদহ দক্ষিণে সিপিএম প্রার্থী ১৯.১৮% ভোট পেয়েছিলেন। সংগঠন এবং ভোটপ্রাপ্তির খতিয়ান সামনে রেখেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আমাদের লড়াই এখানে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নয়। লড়াইটা বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেখানে অধীর বা ডালু চৌধুরী জিতে গেলে কোনও সমস্যা তো নেই!’’

সার্বিক সমঝোতা যেখানে নেই, সে ক্ষেত্রে দুই আসনে প্রার্থী না থাকলে বাম কর্মী-সমর্থকদের অবস্থান কী হবে? সিপিএম এবং আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর দুই সদস্যের এক সুরে জবাব, ‘‘খুব সহজ। বিজেপি এবং তৃণমূলকে যিনি হারাতে পারবেন, তাঁকেই সমর্থন করা হবে।’’ পরিস্থিতির নাটকীয় মোড়ের কথা ভেবে অবশ্য বহরমপুরে ইদ মহম্মদ এবং মালদহ দক্ষিণে আক্রম হোসেনের নাম প্রার্থী হিসেবে আস্তিনে রাখা আছে। প্রয়োজন হলে তখন ওই দুই আসনেও প্রার্থী ঘোষণা হবে। নচেৎ বামফ্রন্ট লড়াই করবে রাজ্যের ৪০ আসনে।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্রার্থী না দেওয়ার যে সাংগঠনিক মাপকাঠি ঠিক হয়েছে বাম শিবিরে, সেই অঙ্ক মানলে দার্জিলিং-ও ছেড়ে রাখা উচিত। কারণ, সেখানে গত বার সিপিএম প্রার্থীর ভোট ছিল ১৪.৬৩%। বাম নেতাদের যুক্তি, পাহাড় থেকে কোনও সর্বসম্মত প্রার্থী ঠিক করার আলোচনার মাঝপথে কংগ্রেস সরে দাঁড়িয়েছে। উল্টে সেখানে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন শঙ্করবাবু, যিনি জোটের বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন। তাই দার্জিলিং খালি রাখেনি বামেরাও!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Adhir Chowdhury Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE