Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

ভোটদানের হার বেশি ‘বিশেষ’ ভোটারদের

মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২৩ এপ্রিল মুর্শিদাবাদ জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরে ভোট হয়েছে।

ফিডিং কর্নার: সিউড়ি ১ ব্লকের একটি বুথে। —নিজস্ব চিত্র।

ফিডিং কর্নার: সিউড়ি ১ ব্লকের একটি বুথে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

গণতন্ত্রের বৃহত্তম ‘উৎসব’-এ বিশেষ নাগরিকদের সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। তৃতীয় দফার ভোটের পরে কমিশন সূত্রের দাবি, শারীরিক প্রতিবন্ধী, পরিযায়ী শ্রমিক, অন্তঃসত্ত্বা ও সন্তানকে স্তন্যদুগ্ধ পান করান এমন মায়েদের ভোটের হার যথেষ্ট বেশি। প্রাথমিক ভাবে মুর্শিদাবাদ এই হিসেব প্রকাশ করেছে। বিশেষ ব্যবস্থাই এই গোত্রের ভোটারদের বুথমুখী করেছে বলে কমিশনের দাবি।

মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২৩ এপ্রিল মুর্শিদাবাদ জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরে ভোট হয়েছে। মালদহ (দক্ষিণ) লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেও মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ও শামসেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। এই সব ক’টি কেন্দ্রের হিসেব করে দেখা গিয়েছে, চার ধরনের বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন ভোটার

বা ‘প্রায়োরিটি’ ভোটারদের ভোটদান হার যথেষ্ট বেশি। শারীরিক প্রতিবন্ধী ভোটারের প্রায় ৭৭%, পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রায় ৬২%, অন্তঃসত্ত্বাদের প্রায় ৭০% ও স্তন্যপান করান এমন মায়েদের প্রায় ৭৭% ভোট দিয়েছেন। এই হার যথেষ্ট বেশি বলে সূত্রের দাবি।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কমিশন সূত্রের খবর, এ বারের লোকসভা ভোটে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে। যাকে কমিশন বলছে, ‘ইনক্লুসিভ ইলেকশন’। সবাই যাতে ভোট দিতে চান, তার জন্য সংবাদপত্র, টিভি, এফএম চ্যানেলে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনগুলিকেও নানা ভাবে প্রচার চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মুর্শিদাবাদের ফলাফল শুনে নির্বাচন কমিশনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘আমাদের প্রচার যে সফল হয়েছে, এই তথ্যই তার প্রমাণ!’’ মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন জানান, বিশেষ ব্যবস্থা কতটা কাজে আসছে তা দেখার জন্য ভোটকর্মীদের কাছে এই তথ্য সংগ্রহের বিশেষ ফর্ম দেওয়া হয়েছিল। ভোটগ্রহণ চলার সময়েই সেই তথ্য সংগ্রহ করেন ভোটকর্মীরা।

এই ফলাফলকে গণতন্ত্রের পক্ষে ‘শুভ ইঙ্গিত’ বলে মনে করছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংগঠন, ‘পশ্চিমবঙ্গ ইলেকশন ওয়াচ’-এর রাজ্য কো-অর্ডিনেটর উজ্জয়িনী হালিম। তাঁর কথায়, ‘‘এই উদ্যোগ যে সাধু তা ফলাফলই বলে দিচ্ছে।’’ তিনি ব্যক্তিগত ভাবেও এই উদ্যোগের উপকারিতা বুঝতে পারছেন। উজ্জয়িনী বলছেন, ‘‘আমার মায়েরও হাঁটতে সমস্যা হয়। ফলে অনেক সময়ই ভোট দিতে গিয়ে অসুবিধায় পড়ি। বৃদ্ধ, অন্তঃসত্ত্বা, প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা সত্যিই প্রয়োজন ছিল।’’

বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ভোট দিতে গিয়ে প্রকাশ্য স্থানে শিশুকে স্তন্যপান করাতে গিয়ে কোনও মহিলা যাতে অসুবিধায় না পড়েন, সে জন্য প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ফিডিং কর্নার তৈরির উদ্যোগী হয়েছে সিউড়ি-১ ব্লক প্রশাসন। ব্লকের ১৬৮টি বুথের প্রতিটিতেই থাকবে শিশুকে স্তন্যপান করানোর জন্য নির্দিষ্ট ঘেরাটোপ। অনেক বুথে সে জন্য আলাদা ঘর চিহ্নিত করা হয়েছে ‘ফিডিং কর্নার’ হিসেবে। যেখানে ঘর নেই, সেখানে তা তৈরি হয়েছে বাঁশ-কাপড়ের ঘেরাটোপে। প্রতিবন্ধী ভোটারদের জন্য থাকবে আলাদা ব্যবস্থাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE