ভোটের-হাওয়া: রঘুনাথপুরের ব্যাঙপাহাড়ের মাঠে। ছবি: সঙ্গীত নাগ।
রোদে-জল টিকে গেলে সেটাকে পাকা রঙ বলা যায়। প্রচণ্ড রোদের মধ্যেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার মাঠে ভিড় দেখে তৃণমূল এখন দাবি করছে, রঘুনাথপুরে তাদের সংগঠনের ভিত পোক্ত।
দলের অন্দরের খবর, গোড়ায় অবশ্য নেতাদের বুক ধুকপুক করার মতো অবস্থা হয়েছিল। কথা ছিল, সোমবার রঘুনাথপুর ১ ব্লকের আড়রার ব্যাঙপাহাড়ের মাঠে দুপুর ২টোয় সভা শুরু হবে। পৌনে তিনটের সময়ে দেখা যায়, মাঠে হাতে গোনা কিছু লোক। কিন্তু তার পরে এক এক করে মিছিলগুলি ঢুকতে শুরু করে। সাড়ে তিনটের সময়ে অভিষেক যখন পৌঁছন, তখন প্রচুর লোক চলে এসেছে। মঞ্চ থেকে অভিষেক দাবি করেছেন, প্রায় হাজার পনেরো লোক হয়েছে এ দিন। পুলিশ অবশ্য বলছে, হাজার দশেক।
গত পঞ্চায়েতে রঘুনাথপুরে তৃণমূলের ফল ভাল হয়নি। এই বিধানসভা এলাকায় তিনটি পঞ্চায়েত সমিতি। তার মধ্যে রঘুনাথপুর আর সাঁতুড়িতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল বিজেপি। পরে অবশ্য বিজেপির নির্বাচিত সদস্য দলবদল করায় দু’জায়গাতেই বোর্ড গড়ে তৃণমূল। যেখানে এ দিনের সভা হয়েছে, সেই আড়রা পঞ্চায়েতেও সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল বিজেপি। এক জন নির্দল এবং এক জন বিজেপির সদস্য তৃণমূলে আসার পরে বোর্ডও তাদের হাতে আসে।
এমন একটা পরিস্থিতিতে ছিল যুব তৃণমূল সভাপতি তথা দলের জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেকের সভা। ভিড় টানাটা এক প্রকার পরীক্ষা ছিল বিধানসভা এলাকার নেতৃত্বের জন্য। অভিষেক বলেন, ‘‘রঘুনাথপুরের নেতাদের কাছে সভাটা চ্যালেঞ্জ ছিল। তিন-চার দিনের নোটিসে সভাস্থল পরিবর্তন করা হয়েছে। আমি বলেও দিয়েছিলাম, বাইরে থেকে কোনও লোক আনা যাবে না। তার পরেও এই ৪৫-৪৬ ডিগ্রি গরমে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে এত মানুষ এসেছেন।’’ রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ির আবার বক্তব্য, ‘‘দ্বিগুণ লোক হত। গরমের জন্য কিছু কম হয়েছে।’’
অভিষেক অভিযোগ করেছেন, বিজেপির জেতা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে কোনও কাজ হচ্ছে না। দখল নিয়ে মারামারি করছে। তবে বিজেপির এক জেলা নেতার পাল্টা অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনই তো ওই পঞ্চায়েতগুলিকে কার্যত ঠুটো করে রেখেছে। স্থায়ী সমিতিও গঠন করা হয়নি।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করেন অভিষেক। অভিযোগ তোলেন রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার। আসানসোলে প্রচারে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘দুর্নীতি আর অপরাধই তৃণমূলের রাজত্বে নন স্টপ। বাকি সব কাজে দিদি স্পিড ব্রেকার।’’ এ দিন অভিষেক পাল্টা বলেন, ‘‘সারদা কেলেঙ্কারিতে সব থেকে বড় যে অভিযুক্ত তাঁকে পাশে নিয়ে মোদী সভা করছেন। উনি ঠিকই বলেছেন। আমাদের বাংলার মুখ্যমন্ত্রী স্পিড ব্রেকারই বটে। কারণ তিনি ওঁদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে বাংলায় রুখে দিয়েছেন।’’
অভিষেকের বক্তব্য, ‘‘মোদীকে কেউ যদি উৎখাত করতে পারেন সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই, ইডি দেখিয়ে অনেক দলকেই মোদীবাবু ধমকে চমকে রাখছেন। আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পারেননি।’’ এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী এবং বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘আমাকে ভোট দেওয়া মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য ভোট দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy