Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘রিগিং বন্ধ, তাই এত রাগ দিদির’, কৃষ্ণনগর থেকে হুঙ্কার অমিত শাহের

এ দিন শাহ বলেন, ‘‘মমতা ভুলে গিয়েছেন যে, এর চেয়ে অনেক বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল ২০১১ সালের নির্বাচনে। কমিশন এর চেয়ে অনেক বেশি অফিসারকে বদলি করেছিল।”

কৃষ্ণনগরে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে অমিত শাহ। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

কৃষ্ণনগরে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে অমিত শাহ। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:০৬
Share: Save:

রিগিং করতে পারছেন না বলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের বিরোধিতা করছেন বলে অভিযোগ করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। মমতা রবিবার অভিযোগ করেন, রাজ্যে কমিশন ‘সমান্তরাল’ সরকার চালানোর চেষ্টা করছে।

সোমবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠকে শাহ বলেন, ‘‘ভোট কেবল একটি রাজ্যে হচ্ছে না। দেশের আর কোথাও কোনও দল কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে না। শুধু মমতাদিদিই করছেন। এর থেকেই বোঝা যায়, সমস্যাটা কমিশনের নয়, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি রিগিং করতে পারছেন না বলেই এত রাগ।’’

রবিবার নদিয়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, দিল্লির দুই অফিসার রাজ্যে এসে ‘অসাংবিধানিক’ কাজকর্ম করছেন। তাঁরা বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। রাজ্যের অফিসারদের বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এ দিন শাহ বলেন, ‘‘মমতা ভুলে গিয়েছেন যে, এর চেয়ে অনেক বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল ২০১১ সালের নির্বাচনে। কমিশন এর চেয়ে অনেক বেশি অফিসারকে বদলি করেছিল। সেই সময় বিষয়টি যে-হেতু ওঁর পক্ষে গিয়েছিল, তাই তিনি কিছু বলেননি। এ বার বিষয়টি তাঁর বিপক্ষে যাচ্ছে, এটা বুঝতে পেরে তিনি চিৎকার করছেন।’’ এর পরেই রাজ্যের মানুষকে আশ্বস্ত করে শাহের আবেদন, ‘‘আপনারা পঞ্চায়েতে ভোট দিতে পারেননি। কিন্তু এ বার ৯০% বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। ফলে নির্ভয়ে ভোট দিন।’’

এ দিন উলুবেড়িয়া, কৃষ্ণনগর, রামপুরহাট ও বর্ধমানে নির্বাচনী সভা করেন শাহ। প্রতিটি সভায় এবং সকালের সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর দাবি, রাজ্যে গণতন্ত্র ফেরাতে এবং দুর্নীতি ও তোলাবাজি বন্ধ করতে বিজেপি-কে ভোট দেওয়া প্রয়োজন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাজ্যে হিংসা বাড়ছে। গণতন্ত্র আহত। যে-মমতাদিদি গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন, তাঁর মুখেই এখন গণতন্ত্রের বুলি!’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শাহের বক্তব্য, এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার বিজেপি-কে সভা-সমিতি করার অনুমতি দেয় না। এখন তার জবাব দিচ্ছে জনতা। তৃণমূল নেত্রীর সভায় ভিড় হচ্ছে না বলে শাহের কটাক্ষ, ‘‘ভিড় জমাতে দিদিকে রাস্তায় নেমে পদযাত্রা করতে হচ্ছে।’’

জবাবে তৃণমূলের নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘হয় ওঁরা চোখে ঠুলি পড়েছেন, নয় জেগে ভুল বকছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় লোক উপচে পড়ছে। গুজরাতের মানুষ ভয়ে থাকেন কখন এরা দাঙ্গা করে দেবে। অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যের মানুষ ভয়ে থাকেন কখন গোরক্ষকেরা পিটিয়ে মারবে। এদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র আছে বলেই বাইরে থেকে এসে ওঁরা এখানে কথা বলতে পারছেন।’’

অন্য দিকে, এ দিন সারদা এবং নারদ কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ তুলে ফের তৃণমূলকে বিঁধেছেন শাহ। রামপুরহাটের সভায় তিনি বলেন, ‘‘যারা চুরি করেছে, তারা কি কোনও দিন দোষীদের জেলে ঢোকাবে? এ বার আমরা দেশের ক্ষমতায় এলে ৯০ দিনের মধ্যে দোষীদের জেলে ঢোকানোর ব্যবস্থা করব।’’ যদিও বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রশ্ন, পাঁচ বছর সময় পেয়েও যে বিজেপি সরকার সারদা কেলেঙ্কারিতে যুক্তদের শাস্তি দিতে পারল না, যে সরকারে এথিক্স কমিটি তিন বছরেও নারদ কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে বৈঠক ডাকতে পারল না, তাদের প্রতি মানুষ কী ভাবে বিশ্বাস রাখবেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE