Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal News

মোদীকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি এক হয়েছে, পূর্ব বর্ধমানে তোপ মমতার

বিজেপির সঙ্গে বামেদের আঁতাঁতের অভিযোগ তুলে মমতার আহ্বান, ‘‘যাঁরা এখনও বামপন্থী আছেন, তাঁরা বিজেপির কাছে বিক্রি হয়ে যাবেন না।’’

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ১৮:১৪
Share: Save:

এক দিকে রাজ্যে তৃণমূল সরকারের উন্নয়নমূলক ও সামাজিক কর্মসূচি তুলে ধরা, অন্য দিকে কেন্দ্র তথা বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির মোকাবিলা। এই দুই মন্ত্রেই সোমবার বর্ধমান পূর্বে ভোটপ্রচার করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সময়ের লাল দুর্গে দাঁড়িয়ে তিন তিনটি সভায় বামেদের বিরুদ্ধেও কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী। কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে বুঝিয়ে দিলেন, প্রতিপক্ষ হিসেবে কাউকেই ছোট করে দেখতে রাজি নন মমতা। তিন দলকে এক সারিতে বসিয়ে তাঁর তোপ, এ রাজ্যে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি এক হয়ে লড়াই করছে মোদীকে ফের প্রধানমন্ত্রী বানাতে, আর তিনি লড়ছেন মানুষকে সঙ্গে নিয়ে। মোদীকে গদিচ্যুত করতে।

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর, দেওয়ানদিঘি এবং রায়না। পর পর তিনটি নির্বাচনী জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিস্তীর্ণ এলাকা মূলত গ্রামীন এবং কৃষিপ্রধান এলাকা। তাই কৃষক স্বার্থে গত ৮ বছরে রাজ্য সরকার কী করেছে, প্রতিটি সভাতেই তার খতিয়ান দেন মমতা। ফসল বিমা, কৃষক বন্ধু, ৬০ বছর বয়সের আগে কৃষকের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ-সহ রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলির কথা তুলে ধরে রায়নার সভায় মমতা বলেন, ‘‘প্রতিবছরই ঝড়বৃষ্টিতে এই এলাকায় চাষের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। বন্যায় ফসল ডুবে যাওয়া, কিংবা খরায় পুড়ে যাওয়া, সবেতেই আমরা ক্ষতিপূরণ দিই। আগেও দিয়েছি, ভবিষ্যতেই সেই আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।’’ এছাড়া দামোদর অববাহিকায় সেচের ব্যবস্থা, চাষের উন্নতি এবং ক্ষয়ক্ষতি হলে সাহায্য করতে একটি নতুন প্রকল্পের কাজ চলছে বলেও এ দিন জানান মমতা।

প্রতিদিনের নির্বাচনী জনসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক তথা মেরুকরণের রাজনীতির অভিয়োগ এবং তার মোকাবিলার কথা বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এই ইস্যুতে মমতার কৌশল, কোনও একটি সম্প্রদায়কে তোষণ এবং তা নিয়ে মাতামাতি নয়, বরং বাংলার সংস্কৃতি মেনে সব ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান পালন করাই তাঁর এবং তাঁর সরকারের নীতি। তাঁর অভিযোগ, বাংলায় দুর্গোৎসব, ইদ, বড়দিন— সব ধর্মের অনুষ্ঠান সমান ভাবে এবং সাড়ম্বড়ে পালিত হয়। কিন্তু সেই সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। বাংলার মানুষ এটা মেনে নেবেন না— দাবি মমতার।

আরও পডু়ন: তৃতীয় দফা ভোটের আগেই পুলিশের ৭ অফিসারকে বদলি করল কমিশন

আরও পডু়ন: ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ বিতর্কে দুঃখপ্রকাশ করলেন, ‘প্রচারের উত্তেজনা’য় মন্তব্য, দাবি রাহুলের

অবিভক্ত বর্ধমান জেলার গ্রাম-শহর এবং শিল্পাঞ্চল এক সময় বামেদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। কিন্তু সেই বামেরা এখন পিছনের সারিতে। মমতার মূল প্রতিপক্ষ বিজেপি। তবু মমতার নিশানা থেকে বাদ যায়নি বামেরা। বিজেপির সঙ্গে বামেদের আঁতাঁতের অভিযোগ তুলে মমতার আহ্বান, ‘‘যাঁরা এখনও বামপন্থী আছেন, তাঁরা বিজেপির কাছে বিক্রি হয়ে যাবেন না।’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ রাজ্যে বাম-বিজেপি-কংগ্রেস এক হয়ে লড়ছে মোদীকে ফের প্রধানমন্ত্রী বানাতে। কিন্তু আমরা মানুষকে নিয়ে এক হয়েছি মোদী সরকারকে হঠাতে।’’

২০১৪ সালে বিজেপি যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছিল, সেগুলির কথা এ দিনের সভায় আরও এক বার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মমতা। জনতার উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বলেছিল ১৫ লক্ষ টাকা আপনাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেবে। আপনারা পেয়েছেন সেই টাকা?’’ তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, ‘‘সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হওয়া দূরের কথা উল্টে নোটবন্দি, জিএসটির ফলে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE