কোচবিহারে রাসমেলার মাঠে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: হিমাংশুর়ঞ্জন দেব
দিদি ভয় পেয়েছেন— রবিবার কোচবিহারে রাসমেলার মাঠের সভা থেকে সরাসরি বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিড়ের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা যত মোদী মোদী করেন, এক জনের ঘুম উড়ে যায়। জানেন তিনি কে? তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্পিডব্রেকার দিদি। রাতে শান্তিতে ঘুমোতে পারছেন না তিনি।’’
কেন ভয় পেয়েছেন দিদি, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গকে দিদি ও ভাইপোর জুটি গুন্ডা, তোলাবাজ, অনুপ্রবেশকারীদের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে তুলেছে।’’ এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই রাজত্ব শেষ হয়ে যাবে, তাই দিদির এত ভয়! এর আগে শিলিগুড়ির কাওয়াখালির সভা থেকেও ভয়ের কথা বলেছিলেন মোদী। মাঠের ভিড় দেখে সে দিন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এই ভিড় দেখে দিদি ভয় পেয়ে যাবেন। এ দিনও রাসমেলার মাঠে ভিড় দেখে তিনি একই কটাক্ষ করেন।
তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব অবশ্য বলছেন, সভায় যতই জনসমাগম হোক, তাতে ভয়ে কিছু নেই। কারণ, এর অনেকটাই টাকা খরচ করে নিয়ে আসা। এ দিন ফালাকাটার জনসভা থেকে এই একই অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তৃণমূলের অনেকেই বলছেন, তাই মোদীর সভার লোক সংখ্যা দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তা ছাড়া, মমতার সভাতেও যথেষ্ট ভিড় হচ্ছে।
মোদী এ দিন ভয়ের উপরেই বেশি জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ ঠিক করেছে, দিদির হাত থেকে মুক্ত হবে। এই ভাবনা দেশেরও ভাবনা।’’ তিনি আরও দাবি করেন, বামেদের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার পরে মমতাও তাদেরই পথে চলেছে। তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় কিন্তু তা হয়নি। মানুষ বামেদের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে বিজেপিকে দিয়েছে।’’ তাঁর কথায়, এখানেও তা-ই হবে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মোদীর কথায়, মা-মাটি-মানুষের সঙ্গে যে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। তিনি বলেন, ‘‘মা-মাটি-মানুষ এক দিকে, তৃণমূলের সত্যতা আর এক দিকে। যারা ভারতকে টুকরো টুকরো করতে চাইছে, ভোটব্যাঙ্কের জন্য দিদি তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।’’ এই প্রসঙ্গে নাম না করে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি। ওমর সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের জন্য এক জন এবং বাকি ভারতের জন্য আর এক জন প্রধানমন্ত্রীর কথা বলেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ উস্কে মোদী বলেন, ‘‘দিদি এখন এমন লোকেদের সঙ্গে চলেছেন, যারা ভারতে দু’টি প্রধানমন্ত্রী চায়।’’ মোদীর কথায়, ‘‘এটা মাকে অপমান।’’ এর পাশাপাশি এ দিনও মোদী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, ‘‘২০১৪ সালের আগে প্রায় প্রতিদিন সন্ত্রাসবাদী হামলা হত। একের পর এক জওয়ান শহিদ হতেন। কিন্তু যখন থেকে এই চৌকিদারকে আপনারা বসিয়েছেন, তখন থেকে সন্ত্রাসবাদীদের ঘরে ঢুকে মার দেওয়া হচ্ছে।’’ এর সঙ্গেই মোদী বলেন, ‘‘আর নিজের রাজনীতির ফায়দায় অনুপ্রবেশকারীদের মদত দিচ্ছেন দিদি। এটা বিশ্বাসঘাতকতা।’’
বিজেপির স্থানীয় নেতারা বলছেন, অনুপ্রবেশ থেকে সারদা-নারদ, সব বিষয়কে একজোট করলে মমতার ভয় পাওয়ারই কথা। সেটাই জোর দিয়ে বলেছেন মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy