—ফাইল চত্র
নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ বা নির্বাচনের দিন কোনও অনিয়ম অনিয়ম হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে সরাসরি নাগরিকেরাই নজরদারি চালাতে পারবেন। তার জন্যই রয়েছে ‘সিটিজেন ভিজিল্যান্স অ্যাপ’ বা ‘সি-ভিজিল’। কিন্তু এই অ্যাপ কতদূর কার্যকর, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। সম্প্রতি দুর্গাপুরে মহকুমা প্রশাসনের আয়োজিত সর্বদলীয় একটি বৈঠকে এ বিষয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
সিপিএমের অভিযোগ, এই অ্যাপ ব্যবহাররের ক্ষেত্রে মূলত তিনটি ‘অসুবিধা’ রয়েছে। প্রথমত, এই অ্যাপ ব্যবহার করতে গেলে স্থান বোঝানোর জন্য জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) চালু থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় অনেক সময়ে মোবাইল নেটওয়ার্কে সমস্যা হয়। দ্বিতীয়ত, নির্বাচনে কোনও অনিয়ম, হিংসার ঘটনা ঘটলে সেই নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে জিপিএস চালু করে ভিডিয়ো বা ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গে তা অ্যাপে আপলোড করতে হবে। পরে করা যাবে না। কিন্তু তা করতে গেলে অনেক সময়ে বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে। সিপিএমের আশঙ্কা, যদি ভোট লুটের মতো ঘটনা ঘটে, তা হলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিয়ম মেনে এই অ্যাপ ব্যবহার করা অসম্ভব। তৃতীয়ত, নেটওয়ার্ক না থাকলে আপলোড করাও সমস্যার। চতুর্থত, আপলোড করতে হবে পাঁচ মিনিটের মধ্যে। কিন্তু মোবাইল নেটওয়ার্কে আপলোড-স্পিড বহু জায়গাতেই কম থাকায় সমস্যা হবে। পঞ্চমত, সি-ভিজিল অ্যাপ ডাউনলোড করা আছে, এমন মোবাইলেই অ্যাপের নির্দিষ্ট অংশের মাধ্যমে ছবি বা ভিডিয়ো তুলতে হবে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাবি, অ্যাপটি ঠিক মতো কাজ করছে না বলে নাগরিকদের অনেকেও প্রশ্ন তুলেছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘সবাই যাতে নিরাপদে অভিযোগ জানাতে পারেন তেমন ব্যবস্থা থাকাই ভাল।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তরুণ রায় বলেন, ‘‘বিগত বিভিন্ন ভোটে যেভাবে সন্ত্রাস হয়েছে তাতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ কতটা এই অ্যাপ ব্যবহার করতে এগিয়ে আসবেন জানি না!’’
এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি ‘সমাধান’ অ্যাপটি চালু করার দাবি উঠেছে। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে এই অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছিল। ওই দলগুলি জানায়, এই অ্যাপের ‘সুবিধা’ রয়েছে বেশ কিছু।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
যেমন, প্রথমত, এই অ্যাপ ব্যবহারের জন্য জিপিএস ব্যবহার বাধ্যতামূলক ছিল না। দ্বিতীয়ত, ছবি তুলে তা সঙ্গে সঙ্গে আপলোড করারও দরকার পড়ত না। ফলে কেউ কোনও অনিয়ম দেখলে ছবি তুলে নিয়ে সরে পড়তে পারতেন। পরে নিরাপদ জায়গায় গিয়ে তিনি পাঠিয়ে দিতে পারতেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। তৃতীয়ত, ঘটনাস্থলে মোবাইলের নেটওয়ার্ক না থাকলেও কোনও সমস্যা ছিল না।
যেখানে নেটওয়ার্ক আছে তেমন জায়গায় গিয়ে ছবি পাঠিয়ে দেওয়া যেত। চতুর্থত, পাঁচ মিনিটের সময়সীমা ছিল না। পঞ্চমত, যে কোনও মোবাইল বা ক্যামেরায় ছবি তুলে সমাধান অ্যাপ ডাউনলোড করা আছে এমন যে কারও মোবাইল থেকে পাঠানো যেত। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘আমরা মহকুমা প্রশাসনের সর্বদলীয় বৈঠকে ‘সমাধান’ অ্যাপটি চালু করার দাবি জানিয়েছি।’’ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি জানায়, মহকুমা প্রশাসন যাবতীয় বিষয় নির্বাচন কমিশনকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy