Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
৫ বছর সাসপেন্ড রবিন

নীতি যুদ্ধে গেল পদ

পারগানা মহলের ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সামাজিক নেতা ‘জেলা পারগানা’ রবিনের স্ত্রী বিরবাহা তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার পরেই সংগঠনের অন্দরে চরম বিভাজন দেখা দেয়।

রবিন টুডু। নিজস্ব চিত্র

রবিন টুডু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০১:০৩
Share: Save:

ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের তিন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রবিন টুডু ‘জেলা পারগানা’ পদ থেকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য সাসপেন্ড হলেন। পারগানা মহলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রধান ‘পনত পারগানা’ বাদল কিস্কু লিখিত ভাবে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন।

রবিনের স্ত্রী বিরবাহা সরেনকে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে‌ তৃণমূল। আজ, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন দাখিল করার কথা বিরবাহার। তার আগেই পদ থেকে সাসপেন্ড হলেন রবিন। অভিযোগ, সামাজিক সংগঠনের পদে থেকেও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া। একই অভিযোগে পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী যজ্ঞেশ্বর হেমব্রমকেও। তিনি ছিলেন পারগানা মহলের ঝাড়গ্রাম তল্লাটের ‘পারানিক বাবা’। রবিন বলেন, ‘‘এরকম কোনও বিষয় আমি জানি না।’’ পারগানা মহলের সর্বভারতীয় সুপ্রিমো ‘দিশম পারগানা’ নিত্যানন্দ হেমব্রম বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংগঠনের সর্বভারতীয় স্তরে আলোচনা করা উচিত ছিল। বিষয়টি দেখছি।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সাঁওতাল সম্প্রদায়ের বিভিন্ন দাবিতে গত কয়েক বছর ধরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে চলেছে পারগানা মহল। সেই পারগানা মহলের ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সামাজিক নেতা ‘জেলা পারগানা’ রবিনের স্ত্রী বিরবাহা তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার পরেই সংগঠনের অন্দরে চরম বিভাজন দেখা দেয়। রবিনের পক্ষ নেন নিত্যানন্দ। সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব সাফ জানিয়ে দেন, বিরবাহা সরেন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হলে রবিনকে সংগঠনের সামাজিক পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। গত ৭ এপ্রিল বর্ধমানে রাজ্য নেতৃত্বের এক বৈঠকে বিভিন্ন জেলার পারগানা বাবা-রা একযোগে সিদ্ধান্ত নেন, যে রবিনকে ইস্তফা দিতে হবে। সাতদিনের মধ্যে তিনি ইস্তফা না দিলে তাঁকে পদ থেকে সরানো হবে।

রবিন না হয় সামাজিক পদ থেকে ইস্তফা দেননি। কিন্তু যজ্ঞেশ্বরকে সাসপেন্ড করা হল কেন? সূত্রের খবর, সামাজিক সংগঠনের পদে থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন যজ্ঞেশ্বর। জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি তিনি। কিন্তু এ বিষয়টি জানত না সামাজিক সংগঠন। যদিও যজ্ঞেশ্বরের দাবি, ‘‘আমি কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছি বলে সামাজিক পদ থেকে সরতে চেয়ে আগেই সংগঠনকে চিঠি দিয়েছিলাম।’’ বাদল বলেন, ‘‘সামাজিক সংগঠনের পদে থেকেও রাজনীতি করার জন্য রবিন টুডু ও যজ্ঞেশ্বর হেমব্রমকে সামাজিক পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু আমাদের সমাজের অনুশাসন অনুযায়ী সামাজিক পদে থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিধান নেই। তাই রাজ্যস্তরের বিষয়ে সর্বসম্মত ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’’

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, আদিবাসী ভোট বিভাজনের অঙ্ক আরও কঠিন হল। বাদল অবশ্য স্পষ্ট করেছেন, ‘‘ভোট যে যাকে ইচ্ছে দেবেন। এ বিষয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE