মালদহে ভাষণ দিচ্ছেন রাজনাথ সিংহ। নিজস্ব চিত্র
ভোটের সময় কেউ ভয় দেখালে তার নাম লিখে রেখে পরে তাঁর কাছে তা পাঠিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তাঁর বক্তব্য, ভোট মিটলে তিনি সে-সব দেখে নেবেন।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের তিন জায়গায় নির্বাচনী সভা করেন রাজনাথ। দুপুরে উলুবেড়িয়া কেন্দ্রের আমতায় সভা করে তিনি চলে যান মালদহে। সেখানে প্রথমে ইংলিশবাজার এবং পরে চাঁচলে বক্তৃতা করেন। তিনটি সভাতেই বিজেপি কর্মীদের প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাওয়াই, ‘‘যদি কেউ ভোট না-দিতে ধমক দেয়, ভয় দেখায় তবে তার নাম লিখে রাখুন। সেই নাম স্থানীয় নেতাদের দেবেন। তাঁরা তা আমার কাছে পৌঁছে দেবে। ভোটের পরে তাদের আমরা দেখে নেব।’’ এ প্রসঙ্গেই রাজনাথের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনে এ রাজ্যের মানুষ ভোট দিতে পারেননি। ‘গুন্ডাগিরি’ করে মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। বিজেপি এর জবাব দেবে। এ ক্ষেত্রে কোনও দলের নাম অবশ্য তিনি করেননি।
চাঁচলে সভার শুরুতেই রাজনাথ বলেন, ‘‘মা, মাটি, মানুষ কিছুই এখানে সুরক্ষিত নয়। বিজেপিই সেই সুরক্ষা দিতে পারে। তৃণমূলের পায়ের তলায় মাটি নেই।’’ আমতায় তাঁর দাবি, ‘‘দু’দফার ভোটে রাজ্যের প্রতিটি আসনই যে বিজেপি পাবে, তা তৃণমূলও বুঝে গিয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ওদের এত সমস্যা। তবে নির্বাচনের পরবর্তী পর্যায়ে আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি ভাল করেই জানেন রাজ্যের পরিস্থিতি। তবু ওঁকে এ-সব কথা বলতে হচ্ছে। না বললে, উনি বিজেপির টিম থেকে বাদ পড়বেন।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আশা করব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে উনি এমন কিছু বলবেন না বা করবেন না, যা তাঁর পদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা নষ্ট করে।’’
উলুবেড়িয়ায় রাজনাথের জনসভা শুরু হয় বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ। ঠা ঠা রোদে মাঠে ভিড় হয়নি বললেই চলে। মালদহের সভায় তুলনায় ভিড় ছিল বেশি। চাঁচলের সভার শেষ পর্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রসিকতা করে বলেন, ‘‘আপনারা তো জলখাবার কিছুই খাওয়ালেন না। কিছু বলবেন?’’ তখনই দর্শকাসন থেকে আওয়াজ ওঠে ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বলুন।’’ রাজনাথের সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘‘না, থাক। আমার সমস্যা আছে।’’
কী সেই ‘সমস্যা’? উত্তর পায়নি জনতা। রাজনৈতিক মহলের খবর, প্রথম সভায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজনাথের মন্তব্য জেনেই ক্ষোভ তৈরি হয় রাজ্যের শাসক দলের অন্দরে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে ‘ঠিক’ বলছেন না, তা নিয়ে ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করেন দলের শীর্ষ নেতারা।
তার পরেই তাঁর শেষ প্রচার সভায় রাজনাথ মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কিছু বলতে না-চাওয়ায় বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ মাত্রা পেল বলে অনেকের অভিমত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy