Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অধীরের বহরমপুরেও নেমে পড়ল আরএসপি

রাজ্যের ৪০টি লোকসভা আসনে প্রার্থী ঘোষণা হয়ে গিয়েছে বামফ্রন্টের।

বহরমপুরে আরএসপি প্রার্থীর দেওয়াল লিখন। নিজস্ব চিত্র

বহরমপুরে আরএসপি প্রার্থীর দেওয়াল লিখন। নিজস্ব চিত্র

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৩৮
Share: Save:

রায়গঞ্জে যদি প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির স্মৃতি জড়িত থাকে, বহরমপুরেও তা হলে ত্রিদিব চৌধুরীর পরম্পরা আছে! সৌজন্যের বার্তা সরিয়ে রেখে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাল্টা যুক্তি খাড়া করে এ বার বহরমপুরেও লড়াই করার প্রস্তুতি শুরু করে দিল বাম শরিক আরএসপি।

লোকসভা ভোটের মরসুমে গোটা দেশেই কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের বোঝাপড়ার এখন দফারফা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বামফ্রন্টের সিদ্ধান্ত উল্টে দিয়েইবেলচা-কোদাল প্রতীকে প্রার্থী ইদ মহম্মদের নামে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের নানা প্রান্তে দেওয়াল লিখতে শুরু করে দিয়েছে আরএসপি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শরিক দলের এই সিদ্ধান্তে সায় আছে মুর্শিদাবাদ জেলা সিপিএমও।আরএসপি-র রাজ্য নেতৃত্ব এর পরে তাঁদের ওই সিদ্ধান্ত আলিমুদ্দিনে রাজ্য বামফ্রন্টের কাছে নিয়ে যাবেন আনুষ্ঠানিক সিলমোহরের জন্য।

রাজ্যের ৪০টি লোকসভা আসনে প্রার্থী ঘোষণা হয়ে গিয়েছে বামফ্রন্টের। বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব ভোটকে একত্রিত করার ‘সদিচ্ছা’র বার্তা দিতে অধীর চৌধুরীর বহরমপুর ও আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীর মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বামফ্রন্ট। জেলা আরএসপি নেতৃত্বকে প্রথমে নিরস্ত করেছিলেন দলের রাজ্য নেতারা। কিন্তু কেরলে বামেদের বিরুদ্ধে স্বয়ং কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দুই শিবিরের সমীকরণের আরও অবনতি হয়েছে। আরএসপি নেতৃত্ব এখন বলছেন, পাশের মুর্শিদাবাদ সিপিএমের জেতা আসন হওয়া সত্ত্বেও সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে। তা হলে বহরমপুরেই বা বামেরা প্রার্থী দেবে না কেন?

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আরএসপি-র মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘প্রথমে বহরমপুরে প্রার্থী না দেওয়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসসারা দেশে যে মনোভাব দেখাচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে আমাদেরও এই কেন্দ্রে লড়াই করতে হবে। বহু বামপন্থী মানুষ আমাদের কাছে বলছেন, তাঁরা বামেদের ভোট দিতে চান। তাঁরা কোথায় যাবেন?’’ দলের জেলা কমিটির মনোভাব জানার পরে আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামী বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের সঙ্গে। সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব আরএসপি-র যুক্তি উড়িয়ে দেননি। ক্ষিতিবাবুর কথায়, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম, বামফ্রন্টের তরফে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করে সার্বিক সমঝোতা হোক। কিন্তু তা হয়নি। এখন ৪০টা আসনে দু’পক্ষের প্রার্থী থাকবে আর দু’টোয় থাকবে না— এই বার্তার কোনও মানে নেই!’’

জরুরি ভিত্তিতে আজ, মঙ্গলবার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক ডেকেছে আরএসপি। তার পরে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন ক্ষিতিবাবুরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আমরা এক রকম ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন আবার চাপ বাড়ছে। বহরমপুরে প্রার্থী দিলে মালদহ দক্ষিণেও একই কথা আসবে।’’ গত বার বহরমপুরে ১৯.৫৪% ভোট পেয়েছিল আরএসপি। দলের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘বড় জোর জামানত যেতে পারে! কিন্তু বামপন্থার স্বার্থেই লড়তে হবে।’’

বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী অবশ্য বলছেন, ‘‘গত বার তৃণমূল, বিজেপি এবং বামেদের সঙ্গে লড়েই কংগ্রেস জিতেছে এখানে। এ বারও একই লড়াই হবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Congress RSP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE