Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ভোটের কাজে না-গেলে বেতন ছাঁটাই! ক্ষোভ শিক্ষক শিবিরে

যাঁরা শেষ পর্যন্ত ভোটের কাজ করতে যাবেন না, তাঁদের এপ্রিলের বেতন কাটা হবে এবং শিক্ষকদের সার্ভিস বইয়ে বিষয়টি উল্লেখ করা হবে। 

ভোটের কাজে না-গেলে শিক্ষকদের বেতন কাটা হবে। ছবি: এপি।

ভোটের কাজে না-গেলে শিক্ষকদের বেতন কাটা হবে। ছবি: এপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০০
Share: Save:

দু’-এক জন ব্যতিক্রম ছাড়া শিক্ষক শিবিরের বড় অংশই নির্বাচনের কাজ থেকে অব্যাহতি চান। নির্বাচন কমিশন অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, ভোটের কাজে শিক্ষকদেরও লাগবে। এরই মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক বা জেলা নির্বাচন আধিকারিক অরবিন্দকুমার মীনা বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটের কাজে না-গেলে শিক্ষকদের বেতন কাটা হবে। স্বভাবতই সেই বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে শিক্ষকমহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উত্তর দিনাজপুর জেলার স্কুল পরিদর্শক দেবাশিস সরকারকে লেখা একটি চিঠিতে জেলাশাসক জানিয়েছেন, তাঁরা জানতে পেরেছেন, প্রশিক্ষণের যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্ত্বেও উত্তর দিনাজপুরের অনেক শিক্ষক ভোটের প্রশিক্ষণে যোগ দেননি। যাঁরা শেষ পর্যন্ত ভোটের কাজ করতে যাবেন না, তাঁদের এপ্রিলের বেতন কাটা হবে এবং শিক্ষকদের সার্ভিস বইয়ে বিষয়টি উল্লেখ করা হবে।

প্রশ্ন উঠছে শিক্ষকেরা ভোটের কাজে না-গেলে জেলাশাসক কি তাঁদের বেতন কাটার নির্দেশ দিতে পারেন? জেলাশাসক মীনা বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন বা নির্দেশিকা অনুযায়ী যাঁরা প্রশিক্ষণে যাননি, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ নিতে হবে এবং ভোটের কাজে যেতে হবে। কমিশন বাহিনী দিচ্ছে। প্রশাসন চেষ্টা করছে।’’ কিন্তু নির্বাচন কমিশন কি বেতন কাটারও নির্দেশ দিয়েছে? জেলাশাসকের কাছে অবশ্য এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের একটি বুথ থেকে প্রিসাইডিং অফিসার তথা শিক্ষক রাজকুমার রায় রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হন। পরের দিন, ১৫ মে রায়গঞ্জের সোনাডাঙি এলাকায় রেললাইনের উপরে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল, এখনও সেই রহস্যের কিনারা হয়নি।

এই পর্পিরেক্ষিতে ভোটকর্মীদের একাংশ মঙ্গল ও বুধবার রায়গঞ্জে বিদ্যাচক্র স্কুল-সহ তিনটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিশ্চিত করলে তবেই তাঁরা প্রশিক্ষণ নেবেন। পরে পর্যবেক্ষকের সঙ্গে দেখা করে একই দাবি জানান তাঁরা। জেলাশাসক এ দিন জানান, মঙ্গলবার এমন অনেকেই বিদ্যাচক্র স্কুলে গিয়েছিলেন এবং বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন, যাঁদের ওই দিন ভোটের প্রশিক্ষণ ছিল না। তাঁদের শো-কজ করা হয়েছে। উপযুক্ত জবাব না-পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের প্রশিক্ষণ নিতে যাননি, এমন অন্তত ২০০ শিক্ষককে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নির্দেশমাফিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভোটকর্মী সংহতি মঞ্চের তরফে ভাস্কর ভট্টাচার্য, প্রিয়রঞ্জন পাল জানান, তাঁরা চান, যাঁরা প্রশিক্ষণ নিতে যাননি, তাঁরা কেন যাননি, আরও এক বার সেই কারণ জানতে চাওয়া হোক। ভোটকর্মীরা প্রশিক্ষণ নিতে চান। কাজেও যেতে চান। তবে উপযুক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।

উত্তর দিনাজপুর জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘জেলাশাসক যেমন যেমন নির্দেশ দেবেন, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর বাইরে আমার কিছু বলার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE