আরোহী: হেলমেট ছাড়াই প্রচারে তৃণমূল প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়াল। নিজস্ব চিত্র
দিন সাতেক আগে গোয়ালপোখর এবং চাকুলিয়ায় রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের সমর্থনে সভা করে গেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। আজ, মঙ্গলবার সভা করতে আসছেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। দলের প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালের সমর্থনে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে এ দিনের সভা। তবে দলের তরফে দাবি, কোনও প্রতিপক্ষের পাল্টা সভা নয়, দলের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিই এটি।
দলীয় সুত্রের খবর, এ দিন দলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী হেলিকপ্টারে আসবেন। প্রথমে চাকুলিয়ার নিজামপুরে সভা। সেখান থেকে তিনি গোয়ালপোখরে লোধন হাইস্কুলে যাবেন। এ দিকে দু’টি সভাকে সফল করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করছেন কর্মীরা। দলীয় সূত্রের খবর, প্রচারে ঝাঁপানোর পাশাপাশি দলের প্রার্থীর ঝুলিতে ভোট কী ভাবে নিয়ে আসা যায় তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের রণকৌশলও ঠিক করে দেবেন তিনি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ ও একাধিক পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে যায়। তা সত্ত্বেও তৃণমূলকে এক দিকে চিন্তায় ফেলেছে পদ্ম শিবির, অন্য দিকে সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম। তৃণমূলের অন্দরের খবর, দল হিসেবে সিপিএমের তেমন ঘাঁটি না থাকলেও সংখ্যালঘু এলাকায় তৃণমূলের ভোটের থাবা বসাতে পারেন ব্যক্তি সেলিম। অন্য দিকে হিন্দুত্ববাদী প্রচারের ঝড় তুলছেন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী। তৃণমূলের হিন্দু ভোট নিয়েও তাই শঙ্কায় দলের নেতা কর্মীরা। তার উপরে কাঁটা বিঁধছেন কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি। এক সময়ের সহযোদ্ধা বর্তমান প্রতিপক্ষ তৃণমূল প্রার্থী কানাইয়ালালের ভোটে থাবা বসানোও দীপার লক্ষ্য। প্রচারে দীপা কানাইয়ালালের নাম না করে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দেন।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্য সভায় কর্মীদের নতুন রণকৌশল ঠিক করে দেবেন, তেমনই দলীয় সূত্রের খবর। ইসলামপুরের দীর্ঘ দিনের রাজনীতিবিদ এবং বিধায়ক বর্তমানে পুরপ্রধান কানাইয়ালালের ধর্মনিরেপক্ষ ভাবমূর্তি প্রচারে করে তাঁকে ভূমিপুত্র হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। সেলিম ও দেবশ্রী থাকেন কলকাতায়, দীপা দিল্লি আর কানাইয়ালালের বাড়ি খোদ ইসলামপুরের শহরে।
ভূমিপুত্রের পাল্টা প্রচারে সিপিএম প্রার্থী সেলিমের কটাক্ষ, ‘‘পাঁচ বছরে এলাকার জন্য কাজ করেছি। মানুষের সঙ্গে ছিলাম। যাঁরা ভূমিপুত্র বলে দাবি করছেন, তাঁরা কত দিন এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখে ছিলেন?’’ বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী অবশ্য প্রচারে বলছেন, ‘‘আমি উত্তরের ভূমিকন্যা। আমার আদিবাড়ি তৎকালীন পশ্চিম দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে। আমার পড়াশোনা রায়গঞ্জে।’’ দেবশ্রী প্রচারে আরও বলছেন, ‘‘ব্যবসার সুবাদে থাকা ব্যক্তিকে ভূমিপুত্র বলে না।’’ আর নিজেকে জেলার ‘বৌমা’ বলে দাবি করে দীপা জানান, তিনি কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা। এর আগে তিনি রায়গঞ্জের সাংসদ ছিলেন। গোয়ালপখোরের বিধায়ক ছিলেন।
আর এই তরজার মধ্যে জমে উঠেছে ভোটের প্রচার। এখন আজকের সভায় শুভেন্দু কী বলেন, কী রণকৌশল ঠিক করেন, তার দিকে তাকিয়ে দলের কর্মী নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy