প্রার্থী পরেশ অধিকারীকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
নতুন মুখ। তার উপর বাম দল ছেড়ে সদ্য তৃণমূলে যোগ দিয়েই লোকসভার প্রার্থী। সেই সঙ্গে দলের মধ্যে দ্বন্দ্বের অভিযোগ। সব মিলিয়ে পরেশ অধিকারী যে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পরতে পারেন, তা নিয়ে দ্বিমত নন দলের কর্মীরাই। এই অবস্থায়, দলকে ‘অক্সিজেন দিতে’ কোচবিহার সফরে প্রচারে আসছেন তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার কোচবিহারে দলের জেলা অফিসে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক হয়। হাজির ছিলেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি জানান, ২৫ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার সফরে থাকবেন তৃণমূলনেত্রী। দলীয় সূত্রের খবর, কোচবিহার রাসমেলার মাঠ ও মাথাভাঙায় সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত লোকসভা উপ-নির্বাচনের ফলে দেখা গিয়েছে, কোচবিহার পুরসভা এলাকায় বিজেপি শাসক দলের থেকে এগিয়ে ছিল। এ ছাড়া কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকে বিজেপি অনেকটাই শক্তিশালী। সে জন্যেই রাসমেলার মাঠে সভার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ওই মাঠে সভা হলে দিনহাটা থেকেও কর্মী-সমর্থকরা যোগ দিতে পারবেন। এ ছাড়া মাথাভাঙায় সভা হলে দুটি বিধানসভা ছুঁতে পারবেন মমতা। একদিনে শীতলখুচি, আরেকদিক মাথাভাঙা। শীতলখুচি থেকে বড়মাপের লিড আগের নির্বাচনে পেয়েছিল তৃণমূল, সে কথা যেমন মাথায় রয়েছে, তেমনই মাথাভাঙায় বিজেপির সংগঠন অনেকটাই বেড়েছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অবশ্য জানান, দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। এদিন বৈঠকে বিদায়ী সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় থেকে শুরু করে বিধায়ক উদয়ন গুহ, মিহির গোস্বামী, বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, আব্দুল জলিল আহমেদ-সহ সকলেই হাজির ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। সব বিরোধীদের চক্রান্ত।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব চরমে ওঠার অভিযোগ ওঠে কোচবিহারে। মূল ও যুব তৃণমূলের সংঘর্ষে খুন ও জখমের অভিযোগ ওঠে। পরে যুব সংগঠনের জেলা নেতা নিশীথ প্রামাণিককে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। সেই নিশীথ বিজেপিতে গিয়েছেন। এ বারে বিদায়ী সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কেও টিকিট দেয়নি তৃণমূল। পার্থ যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। নতুন মুখ হিসেবে আনা হয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে আসা পরেশ অধিকারীকে। তিনি বাম আমলে মন্ত্রীও ছিলেন। সেই সব প্রসঙ্গ তুলেই বিরোধীরা নেমেছেন। তবে শাসক দল তা মানতে নারাজ।
রবীন্দ্রনাথ বলেন, “কোচবিহারে আমরা পাঁচ লক্ষের বেশি ভোটে জিতব। যা উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের কাছে যা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে তাতে মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রচারে আসবেন। মানুষের সামনে সব তুলে ধরবেন।” তিনি আরও দাবি করেন, গোটা জেলায় তৃণমূলের আড়াই লক্ষ কর্মী রয়েছে, বিজেপির পাঁচ হাজারের বেশি নেই। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা অবশ্য তৃণমূলের কথাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “তৃণমুল বুঝতে পেরেছে তাঁদের দিন শেষ। মানুষ প্রতিদিন সরে যাচ্ছে। তাই হতাশ হয়ে নানা কথা বলছে। ভোটের ফলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy