দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সন্দীপ পাল
নির্বাচন লোকসভার। কিন্তু ২৩ মে তার ফল বেরনোর পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর এ রাজ্যে ক্ষমতায় থাকবেন না বলে আগাম ঘোষণা করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এখনকার ‘বাংলা মডেল’কে দেশের মডেল বানানোর স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু দেশ তো বটেই বাংলাও তাঁর সেই স্বপ্নকে ছুড়ে ফেলে দেবে।’’
শনিবার বালুরঘাট কেন্দ্রের বুনিয়াদপুরের এই সভায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে মোদীর আরও দাবি, ‘‘প্রথম দু’দফার ভোটে যে রিপোর্ট পেয়েছি তাতে স্পিডব্রেকার দিদির ঘুমেও ব্রেক লেগে গিয়েছে।’’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় ওঁকে (মমতা) দেখে আগে মনে হত সৎ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হয়ে বুঝলাম যে, উনি বদলে গিয়েছেন। যার ফলাফল ২৩ মে স্পষ্ট হবে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘দিদি মানুষের সঙ্গে গুন্ডাগিরি করছেন। রাজ্যের উন্নয়নে বাধা দিচ্ছেন। তোলাবাজির জন্য এ রাজ্যে শিল্পপতিরা আসতে ভয় পান। আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। মানুষ এটা বুঝে গিয়েছেন। তাই মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিচ্ছেন।’’
এর পরেই পুরুলিয়ায় বিজেপি কর্মীর ‘হত্যা’র প্রসঙ্গ তুলে মোদী বলেন, ‘‘বাংলায় বিজেপির সমস্ত কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে আশ্বাস দিচ্ছি, এই অত্যাচারের ন্যায় মিলবে। অপরাধীদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে। দিদিও অবশ্যই তাঁর কৃতকর্মের সাজা পাবেন।’’
সারদা ও নারদ-কাণ্ডের কথা তুলে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, রাজ্যের মানুষকে ‘ধোঁকা’ দিয়েছেন মমতা। অভিযুক্ত নেতাদের মন্ত্রী করেছেন। তাঁর হুঙ্কার, ‘‘বুয়া-ভাতিজা মিলে বাংলার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছেন। গরিবের টাকা লুট হয়েছে। ভোটের পর পাই পয়সার হিসেব নেওয়া হবে।’’
রাজ্যে এর আগে একাধিক সভা করেছেন মোদী। বারংবার বলেছেন, তাঁর আমলে দুনিয়া জুড়ে ভারতের জয় জয়কার হচ্ছে। এ দিনও সে কথা উত্থাপন করে তিনি বালাকোটে বিমানবাহিনীর এয়ারস্ট্রাইক নিয়ে বিরোধীদের ‘প্রমাণ চাওয়া’র মানসিকতা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা যখন পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গিদের মারলাম, দিদি প্রমাণ চেয়েছিলেন। আপনারা চেয়েছিলেন প্রমাণ? দেশের সেনাবাহিনীর উপর আপনাদের বিশ্বাস আছে। দিদি এবং তাঁর সহযোগীদের নেই।’’
এর আগে একাধিকবার বাংলায় জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) চালু করার কথা বললেও এ দিনের সভায় সরাসরি সেই প্রসঙ্গ তোলেননি মোদী। তবে ঘুরিয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রসঙ্গ তুলে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ‘‘কংগ্রেস, তৃণমূল, বামেরা বিভেদের রাজনীতি করে বলে সংসদে নাগরিকত্ব বিল পাশ করতে দেয়নি।’’ তাঁর আরও দাবি, বিজেপি ক্ষমতায় দ্বিতীয়বার ফিরলে অনুপ্রবেশকারীদের আটকানোর জন্য আরও পদক্ষেপ করা হবে। নাগরিক সংশোধনী বিল যাতে আইনে পরিণত হয়, তার ব্যবস্থা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy