Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নির্দল ভোটার কাছে টানতে তৎপর তৃণমূল

কেন এই তালিকা তৈরি? তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ ঠিক কী?

লোকসভার আগে এ বার ‘নির্দল ভোটার’- এর খোঁজ শুরু করেছে তৃণমূল।

লোকসভার আগে এ বার ‘নির্দল ভোটার’- এর খোঁজ শুরু করেছে তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

গত পঞ্চায়েত ভোটে অনেক এলাকায় ‘সর্বসম্মত নির্দল’ প্রার্থীর খোঁজ করতে হয়েছিল বামেদের। লোকসভার আগে এ বার ‘নির্দল ভোটার’- এর খোঁজ শুরু করেছে তৃণমূল। যাঁরা তৃণমূল তো নয়ই, অন্য কোনও দলের ঝান্ডা ধরেও কোনও দিন মিটিং- মিছিলে হাঁটেননি। সভা- সমাবেশে যাননি। দলের এক সূত্রে খবর, জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে একেবারে পাড়াস্তরে এই খোঁজ শুরু হয়েছে। কারা ‘নির্দল’, তাঁদের নামের তালিকাও তৈরি হচ্ছে।

কেন এই তালিকা তৈরি? তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ ঠিক কী? দলের এক সূত্রে খবর, জেলা নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন, শুধু বুথ কমিটি গঠন করে বসে থাকলে হবে না। এ বার পাড়া কমিটি গঠন করতে হবে। আর এই পাড়া কমিটিতে ‘নির্দলদের’ যুক্ত করতে হবে। কেন এমন নির্দেশ? তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘বুথ কমিটি হয়ে গিয়েছে। এ বার পাড়া কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাড়া কমিটিতে বিভিন্নস্তরের মানুষদের হাজির করতে হবে। বিভিন্ন পেশার মানুষদের হাজির করতে হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষক, ডাক্তার, গৃহবধূ, সকলকেই পাড়া কমিটিতে জায়গা দিতে হবে।’’ দলের ঝান্ডা ধরেননি, এমন লোকও পাড়া কমিটিতে থাকবেন? অজিতের জবাব, ‘‘কেন থাকবেন না? আমাদের দলের ঝান্ডা ধরে মিছিল করেননি, এ রকম লোকও যাঁরা আছেন, তাঁদের পাড়া কমিটিতে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, স্থানীয় ‘বিশিষ্টজনেদের’ পাড়া কমিটিতে শামিল করে দলের ভোটব্যাঙ্কই ভারী করতে চাইছে শাসক দল। সেই ভাবনা থেকেও ‘নির্দলদের’ খোঁজ।

দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলপ্রার্থীরা ব্লক ধরে ধরে প্রচার করবেন। কবে কোন ব্লকে যাবেন, সেখানে গিয়ে কী করবেন, সেই সূচি তৈরি হচ্ছে। দলীয় সূত্রের খবর, ব্লকে গিয়ে কর্মিসভা, রোড- শো, জনসভা- সমস্ত কর্মসূচিই করবেন প্রার্থী। শুধু ‘নির্দলদের’ খোঁজ নয়, দলের যে সব কর্মী বসে গিয়েছেন, ভোটের আগে তাঁদের কাছেও পৌঁছনোর নির্দেশ দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। অজিত মানছেন, ‘‘যে সব এলাকায় পঞ্চায়েতে তৃণমূল খারাপ ফল করেছে। সেই সব এলাকায় বসে যাওয়া কর্মীদের দলে ফিরিয়ে আনতে হবে, মুখ ফেরানো ভোটারদের কাছে দলের কর্মীদের যেতে হবে। সমস্যা কী, কোথায় তাঁর যন্ত্রণা শুনতে হবে। যন্ত্রণা উপসমে পদক্ষেপ করতে হবে। ভোটটা বাড়াতে হবে। ব্লক নেতৃত্বকে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

‘হারানো’ ভোট ফিরবে? অজিতের জবাব, ‘‘কেন নয়? পঞ্চায়েতে আমাদের স্থানীয় নেতার উপরে দু:খ- অভিমানে যাঁরা অন্যকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরা এ বার তৃণমূলকেই ভোট দেবেন। কারণ, এটা লোকসভার ভোট। পঞ্চায়েতে যে ভোটটা আমাদের আসেনি, সেই ভোটটাও এ বার আমাদের বাক্সে আসবে। তৃণমূলের ভোট বাড়বেই!’’ ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থীকে ভোট দিন’, বাড়ি বাড়ি প্রচারে এই কথাটাই বেশি করে বলার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

সব শুনে বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাশের কটাক্ষ, ‘‘পঞ্চায়েতে যা হারানোর সেটা তো হারিয়েইছে। ফেরার এতটুকু আশা নেই! নতুন করে আরও হারাবে তৃণমূল! শুধু কিছু সময়ের অপেক্ষা!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE