Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হারানো মাটিতে বিশেষ কমিটি, ঘাসফুল ফোটানোর তোড়জোড়

খড়্গপুর গ্রামীণের মতো এলাকায় যে আস্ত পঞ্চায়েতই হাতছাড়া হবে তা কল্পনাও করতে পারেনি শাসক দল।

পঞ্চায়েত ভোটে খারাপ ফল হয়েছে কেশিয়াড়িতে। তাই ওই বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে খামতি রাখতে চাইছে না তৃণমূল। বাঘাস্তি পঞ্চায়েতের পলাশিয়া এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত ভোটে খারাপ ফল হয়েছে কেশিয়াড়িতে। তাই ওই বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে খামতি রাখতে চাইছে না তৃণমূল। বাঘাস্তি পঞ্চায়েতের পলাশিয়া এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০৮:০৩
Share: Save:

বৈঠকে বসে লোকসভা কেন্দ্র স্তরে নির্বাচনী কমিটি গঠনের কাজ সেরে ফেলেছে তৃণমূল। তবে এখানেই থেমে থাকছে না রাজ্যের শাসকদল। পশ্চিম মেদিনীপুরে গত পঞ্চায়েত ভোটে যে সব এলাকায় দলের ফল তুলনায় খারাপ হয়েছে, সেই সব এলাকায় বাড়তি নজর দিচ্ছে তারা। ঠিক হয়েছে এই সব এলাকার জন্য গড়া হবে বিশেষ নির্বাচনী কমিটি। যে কমিটি ওই এলাকায় মাটি কামড়ে পড়ে থাকবে। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, শীঘ্রই এই বিশেষ কমিটি গঠনের কাজ শুরু হবে। এ ব্যাপারে দলের জেলা নেতৃত্ব নিজেদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনাও সেরেছেন। আলোচনায় ছিলেন লোকসভা কেন্দ্র স্তরের নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান তথা দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, ভাইস- চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।

পঞ্চায়েতে যে সব এলাকায় তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছে, সেখানে কি লোকসভায় বিশেষ কমিটি হবে?

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির স্বীকারোক্তি, ‘‘কিছু এলাকায় বিশেষ কমিটি হবে। এ নিয়ে দলে আলোচনাও হয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছি।’’ দলের এক সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, মেদিনীপুর লোকসভার অন্তর্গত মেদিনীপুর গ্রামীণের ৪টি, শালবনির ৫টি এবং খড়্গপুর গ্রামীণের ৩টি অঞ্চলে বিশেষ কমিটি হবে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গেও প্রাথমিক আলোচনা সেরেছেন শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব। সব জেনে বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাশের কটাক্ষ, ‘‘ওরা আরও কমিটি করুক। কিছুতেই কিছু হবে না। জয় বিজেপিরই হবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি এলাকায়, বিশেষত জঙ্গলমহল এলাকায় তৃণমূলের ফল ভাল হয়নি। বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত দলের হাতছাড়া হয়েছে। এরমধ্যে মেদিনীপুর গ্রামীণ, শালবনি, খড়্গপুর গ্রামীণের কিছু পঞ্চায়েতও রয়েছে। মেদিনীপুর গ্রামীণ কিংবা খড়্গপুর গ্রামীণের মতো এলাকায় যে আস্ত পঞ্চায়েতই হাতছাড়া হবে তা কল্পনাও করতে পারেনি শাসক দল। আরও কিছু এলাকায় সেয়ানে- সেয়ানে টক্কর হয়েছে। অল্প ব্যবধানে জিতেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ২১টি গ্রাম পঞ্চায়েত গেরুয়া- শিবিরের দখলে এসেছে। জেলায় দলের ৩৮৯ জন পঞ্চায়েত সদস্য জিতেছেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দলীয় সূত্রে খবর, সবদিক খতিয়ে দেখে কয়েকটি এলাকায় বিশেষ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। রবিবারই মেদিনীপুরে এক বৈঠকে বসেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠক থেকে লোকসভা নির্বাচনী কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি লোকসভা কেন্দ্রস্তরেই। পৃথকভাবে প্রচার কমিটিও হয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, মেদিনীপুরে এ বার কঠিন লড়াই হতে চলেছে, এটা বুঝতে পেরেই আগেভাগে ঘর গোছাতে শুরু করেছে তৃণমূল। ‘হারানো’ এলাকাতেও তারা ‘এগোনোর’ প্রস্তুতি শুরু করেছে। দলের এক কর্মিসভায় মেদিনীপুরের তৃণমূলপ্রার্থী মানস ভুঁইয়াকেও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘মেদিনীপুর আসন এখন পশ্চিমবঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু।’’ মানসের অবশ্য দাবি, এই আসন নিয়ে অহেতুক আলোচনা হচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও দলের কর্মীদের জানিয়েছেন, ‘‘যে ভাবেই হোক, বড় ব্যবধানে জিততে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE