Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

পুরুলিয়ায় জিতবেন কে, বাজি স্ট্যাম্প পেপারে

বাজি ধরেছেন গ্রামেরই মাণিক মাহাতো এবং অমৃত মাহাতো ওরফে মন্তা।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৯ ০৩:২০
Share: Save:

চায়ের দোকানে বন্ধুদের আড্ডায় উঠেছিল ভোট-প্রসঙ্গ। পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে জয় কার হবে, তা নিয়ে কথায় কথায় বাজি ধরেছিলেন দুই বন্ধু। কিন্তু তাতে বিশ্বাস ছিল না জনতার। তাই আনা হল ১০ টাকার ‘নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার’। লেখা হল বাজির শর্ত—যিনি হারবেন তাঁকে দিতে হবে নগদ এক লক্ষ টাকা। সাঁটানো হল দু’জনের ছবি। সাক্ষী হিসেবে সই করেন ২৪ জন। মঙ্গলবার সকালে পুরুলিয়া মফস্সল থানার ঘোঙা গ্রামে হয়েছে এই ‘বেটিং’। বিকেলে সেই স্ট্যাম্প পেপারের ছবি ছড়িয়ে পড়ে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য়।

বাজি ধরেছেন গ্রামেরই মাণিক মাহাতো এবং অমৃত মাহাতো ওরফে মন্তা। ওই দুই যুবক এ দিন ফোনে জানান, সকালে গ্রামের চায়ের দোকানের আড্ডায় আলোচনা চলছিল পুরুলিয়া লোকসভা আসনে কোন দল জিতবে তা নিয়ে।

মাণিকের দাবি, জিতবেন বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। অমৃতের দাবি, জয় হবে তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতোর। আলোচনা তুঙ্গে উঠলে মাণিক প্রস্তাব দেন, জয়-পরাজয় নিয়ে টাকার বাজি ধরা হোক। তাতে রাজি হন অমৃত। জনতা প্রস্তাব দেয় লিখিত চুক্তি করতে হবে। তাতেও রাজি দুই বন্ধু। জোগাড় হয় স্ট্যাম্প পেপার। সেখানে লেখা হয়, বিজেপি প্রার্থী জিতলে মাণিককে ১ লক্ষ টাকা দেবেন অমৃত। আর তৃণমূল প্রার্থী জিতলে অমৃতকে ১ লক্ষ টাকা দেবেন মাণিক।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অমৃত বলেছেন, ‘‘মাণিক নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার জোগাড় করে আনল। তাতেই সব লেখা হয়েছে।’’ মাণিক বলেন, ‘‘আড্ডাতেই ঠিক হয়, স্ট্যাম্প পেপারে লেখা থাকবে চুক্তির কথা।’’ সেই স্ট্যাম্প

পেপারের ছবিই ‘ভাইরাল’ হয়। তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্কের মন্তব্য, ‘‘আমি দলের কর্মীদের কাছ থেকে খবরটা পেয়েছি। এ ধরনের কাজ সমর্থন করি না। নির্বাচনে জয়-পরাজয় আছে। কিন্তু এ ভাবে কেন বাজি ধরা হবে?’’ জ্যোতির্ময়েরও প্রতিক্রিয়া, ‘‘জয়-পরাজয় নিয়ে অনেক জায়গাতেই আলোচনা চলছে। কিন্তু তা নিয়ে বেটিং সমর্থনযোগ্য নয়।’’

আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, ‘নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে’ লিখে এ ভাবে বাজি ধরা আইনসিদ্ধ নয়। পুরুলিয়া আদালতের আইনজীবী বিশ্বরূপ পট্টনায়েকের কথায়, ‘‘এ-তো পরিষ্কার বেটিং। এটা করা যায় না।’’

নির্বাচন কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে, তারা খতিয়ে দেখবে। জেলা পুলিশের এক কর্তাও জানিয়েছেন, কেউ নথি-সহ লিখিত অভিযোগ জানালে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। অমৃত এবং মাণিক অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘অতশত ভেবে বাজি ধরিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE