Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ছুটির দিনে প্রচারে দাপট মিমি-মুনমুন-নন্দিনীদের

কৃষ্ণনগর সংলগ্ন গ্রাম ও বাজারে কর্মিসভা, জনসংযোগে ব্যস্ত ছিলেন মহুয়া মৈত্র।

আসরে: আসানসোলে ভোট প্রচার শুরু করে দিলেন মুনমুন সেন। রবিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী

আসরে: আসানসোলে ভোট প্রচার শুরু করে দিলেন মুনমুন সেন। রবিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪৭
Share: Save:

খাস কলকাতায় এক দিকে তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় তো অন্য দিকে সিপিএমের নন্দিনী মুখোপাধ্যায়। আসানসোলে শাসক দলের মুনমুন সেন, বারুইপুরে মিমি, সিউড়িতে শতাব্দী রায়, মালদহে মৌসম বেনজির নুরও ছুটির দিনটিকে প্রচারের কাজে লাগিয়েছেন পুরো মাত্রায়। কৃষ্ণনগর সংলগ্ন গ্রাম ও বাজারে কর্মিসভা, জনসংযোগে ব্যস্ত ছিলেন মহুয়া মৈত্র।

সব মিলিয়ে ভোট ঘোষণার পরে প্রথম রবিবার শহর-গ্রামে প্রচারের আলো কাড়ল নারী-বাহিনী। মিছিল ও কর্মিসভা করলেন তাঁরা। এবং ৪১ শতাংশ মহিলা প্রার্থী ও সকলের আগে তালিকা ঘোষণা করার সুবাদে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকল শাসক দল।

নজরুল মঞ্চে কর্মিসভা সেরেই গার্ডেনরিচ ও জোকায় পৌঁছন কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রার্থী মালা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছোট ছোট কর্মিসভা করেন তিনি। তাঁর মতে, এখনই মিছিল না-করে কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে ছোট কর্মিসভাই বেশি কাজ দেবে। তিনি বলেন, ‘‘আমরাই শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরে রাখি। ভোটের ময়দানে প্রথমে ঝাঁপিয়ে পড়ি আমরাই। ৪১ শতাংশ মহিলা প্রার্থী দিয়ে আমাদের দল সেই কাজটা আরও সহজ করে দিয়েছে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিয়ে এ দিনই প্রচার শুরু করেন আসানসোল কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন। তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, মিছিলে পৌঁছনোর আগেই ভিড়ে আটকে যায় মুনমুনের গাড়ি। রিকশায় উঠে তিনি চালককে বলেন, ‘‘আমি আপনাদের প্রার্থী। ভোট দেবেন আমাকে।’’ পরে তিনি হুডখোলা গাড়িতে প্রচার সারেন। বাঁকুড়া থেকে আসানসোলে কেন? মুনমুন বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে বাঁকুড়ার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল আমার। বাঁকুড়ায় গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন, আমাকে নিয়ে ওঁরা খুশি কি না। অনেক কাজ করেছি। দিদি চান, তাই আসানসোলে এসেছি। আসানসোলের বিশেষ কিছু জানি না। কিছু কয়লা খনি আছে বলে জানি। এক সময় এখানে অনেক অনুষ্ঠান করেছি। কাজ করতে এসেছি। আমি জিতবোই।’’

সিউড়িতে দলীয় বৈঠকে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে শতাব্দী রায়।

দিনভর প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন উত্তর মালদহের তৃণমূল প্রার্থী মৌসম নুর। পরপর কর্মিসভা করেন তিনি। দুপুরে মালদহ টাউন হলে বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরামের প্রথম জেলা সম্মেলনে যোগ দেন। পরে ইংরেজবাজার শহরের স্টেশন রোডে ব্যক্তিগত কার্যালয় নুর ম্যানসনে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু কংগ্রেস-সমর্থক তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মৌসম। বিকেলে পুরাতন মালদহ গ্রামীণ ব্লক তৃণমূল কমিটির নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন।

বারুইপুরের কর্মিসভায় মিমি চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।

বৃহস্পতিবার তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করেছিলেন ‘মমতা’র মহিলা ব্রিগেডের অন্যতম সদস্যা শতাব্দী রায়। তৃতীয় বার বীরভূমে শাসক দলের প্রার্থী হওয়ার পরেই ওই দিন রামপুরহাট-২ ব্লকের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরে যান ফুলিডাঙা বাজার এবং শেষে রামপুরহাট ১ ব্লকের তম্বুনি গ্রামে। সাঁইথিয়া, সিউড়ি ও দুবরাজপুর তিন পুর শহর ছুঁয়েই শুক্রবার ভোট প্রচার সারেন শতাব্দী। শনিবার মুরারই ১, ২ এবং নলহাটি ব্লক ও শহরের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রবিবার সিউড়িতে জেলা কমিটির বৈঠক সেরে রওনা দেন কলকাতার উদ্দেশে। সোমবার তাঁর দিল্লি যাওয়ার কথা। ফিরে এসে ফের প্রচারে নামবেন শতাব্দী। তাঁর কথায়, ‘‘মহিলারা অনেক বেশি দায়িত্বসচেতন। নিজের কাজটা ঠিকমতো করতে হবে, সেই দায়িত্ববোধ থেকেই বোধ হয় ওঁরা প্রচারে এতটা ঝাঁপিয়েছেন। তার মানে এই নয় যে, অন্যেরা বসে আছেন।’’

বসে নেই বিরোধী শিবিরের মহিলারাও। সকালে চেতলা বাজারে প্রচার করেন দক্ষিণ কলকাতার সিপিএম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, প্রচারে সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অভিযোগের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে জানান। বিকেলে ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার সারেন সিপিএমের এই অধ্যাপক প্রার্থী। সন্ধ্যায় শকুন্তলা পার্ক এবং বড়িশায় কর্মিসভার মাধ্যমে এ দিনের প্রচার শেষ করেন। আজ, সোমবার সকালে ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডে যাওয়ার কথা তাঁর। বিকেলে কসবা এবং বন্দর এলাকায় কর্মিসভা রয়েছে ওই সিপিএম প্রার্থীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE