Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

খুন করে দেহে আগুন দিয়েছিল প্রেমিকার বাবা!

সায়নী, মদনমোহন-সহ ৬জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে সায়নীর মা পরী মণ্ডল, ভাই সোমশঙ্কর মণ্ডল এবং রঞ্জিতের দুই বন্ধু পবিত্র সিংহ ওরফে সমীর ও অসিত দাস। সোমবার ধৃতদের কাঁথি আদালতে তোলা হয়। 

মা-বাবার সঙ্গে সায়নী। গ্রেফতার হওয়ার পর। নিজস্ব চিত্র

মা-বাবার সঙ্গে সায়নী। গ্রেফতার হওয়ার পর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভূপতিনগর শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:২৫
Share: Save:

প্রথমে গলা টিপে খুন, তারপর ঝোপের পাশে দেহ ফেলে পেট্রল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া। ভূপতিনগর থানার খানাজাদাপুরের যুবক রঞ্জিত মণ্ডলকে এ ভাবেই খুন করা হয়েছে বলে জানাল পুলিশ। পুলিশের আরও দাবি, রঞ্জিতের প্রেমিকা সায়নী মণ্ডলের বাবা মদনমোহন মণ্ডলই এই খুন করেছে। মদনমোহন সে কথা জেরায় কবুল করেছে বলেও দাবি পুলিশের।

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভি সোলেমান নেসাকুমার বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে সায়নীর বাবা মদনমোহন মণ্ডল অপরাধ স্বীকার করেছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে সে-ই নিজের বাড়িতে রঞ্জিতকে প্রথমে গলা টিপে খুন করে। তারপর বাড়ির অন্যদের নিয়ে রঞ্জিতের দেহ ঝোপের পাশে ফেলে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।’’

সায়নী, মদনমোহন-সহ ৬জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে সায়নীর মা পরী মণ্ডল, ভাই সোমশঙ্কর মণ্ডল এবং রঞ্জিতের দুই বন্ধু পবিত্র সিংহ ওরফে সমীর ও অসিত দাস। সোমবার ধৃতদের কাঁথি আদালতে তোলা হয়। সায়নী, তার বাবা, মা এবং ভাইকে ৫ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আর রঞ্জিতের দুই বন্ধুকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

তদন্তকারীরা আগেই জানিয়েছিলেন, ত্রিকোণ প্রেমের জেরে সম্ভবত খুন হয়েছে রঞ্জিত। পুলিশ সূত্রের দাবি, জেরায় জানা গিয়েছে— ঘটনার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করেছিলেন রঞ্জিত। তারপর সায়নীর বাড়ি থেকে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। মত্ত অবস্থাতেই রঞ্জিত পৌঁছন সায়নীর বাড়িতে। পুলিশ জানিয়েছে, ইদানীং রঞ্জিতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছিলেন সায়নী। ঘটনার রাতে সায়নীর বাড়িতে গিয়ে তার কারণ জানতে চান রঞ্জিত। সায়নীর হাত ধরে তাঁর সঙ্গে যাওয়ার প্রস্তাবও দেন। কিন্তু সায়নী রাজি হয়নি।

এই সময়ই সায়নীর বাবা রঞ্জিতের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার গলা টিপে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, এরপর বেশ কিছুটা সময় সায়নীর বাড়িতেই রঞ্জিতের দেহ পড়েছিল। পরে সায়নীর পরিজনেরা রঞ্জিতের দেহ বাড়ির কাছের ঝোপের পাশে নিয়ে যায়। সেখানেই পেট্রল ঢেলে দেহে আগুন দেওয়া হয়। ন পুলিশ ঘটনাস্থলে একটি বোতলও পেয়েছে। অনুমান, তাতেই পেট্রল রাখা ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, রঞ্জিতের মোবাইলের পাশাপাশি সায়নী ও তার পরিবারের সদস্যদের মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে কল লিস্ট।

রবিবার ময়নাতদন্তের পরে রঞ্জিতের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে তাঁর অন্ত্যেষ্টি হয়েছে। রঞ্জিতের দাদা সুরজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘ভাইকে যারা খুন করেছে, তাদের সকলের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime Police Investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE