অ্যাপ-ক্যাব চালকদের সমস্যা এবং দাবিদাওয়া নিয়ে সোমবার বৈঠকে বসলেন রাজ্যের বর্তমান এবং প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী।
এ দিন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর তরফে পরিবহণ ভবনে গিয়ে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করেন মদন মিত্র। বিকেল চারটে থেকে প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠক হয়। অ্যাপ-ক্যাব চালকদের তরফে মন্ত্রীকে চারদফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপিও দেন মদনবাবু।
ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করলেও চালকদের ন্যায্য প্রাপ্য দিচ্ছে না অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি। অথচ, যখন তখন ‘সার্জ প্রাইস’ বা অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া হচ্ছে।
হলুদ ট্যাক্সির ক্ষেত্রে সরকার কিলোমিটার প্রতি ১৫ টাকায় ভাড়া বেঁধে দিয়েছে। একই ভাবে বাতানুকূল অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়াও কিলোমিটার প্রতি ১৮ টাকায় বেঁধে দেওয়ার দাবি জানান মদন। সংগঠনের অভিযোগ, নিজেদের গাড়ি, জ্বালানি এবং শ্রম দিয়ে কিলোমিটারে ১২-১৩ টাকা আয় করেন চালকেরা।
এ দিনও অবশ্য শহরে অ্যাপ-ক্যাব চড়তে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে যাত্রীদের। যে পথ যেতে ‘পুলে’ অন্য দিন ৬০-৮০ টাকা লাগে, এ দিন সেখানে ভাড়া উঠেছে ২০০ টাকা! ১০০-র জায়গায় ৪০০ টাকাও চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দুপুরের দিকে চাহিদা কমায় ভাড়া খানিকটা কম থাকে বলে দাবি করে থাকে অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি। এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ অবশ্য ঢাকুরিয়া থেকে চাঁদনি চক আসতে ‘পুল’ বা ‘শেয়ার’-এ ২০০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছে। একক ভাবে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের দিতে হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, ক্যাবে ওঠার পরে ভাড়ার অঙ্ক বদলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। তা নিয়ে পরিবহণ দফতরে রোজই অভিযোগ জমা পড়ছে। একটি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার দাবি, ‘‘চাহিদা-জোগান ভারসাম্য ঠিক রাখতেই এই ব্যবস্থা।’’ আচমকা ভাড়া বৃদ্ধির কারণ অবশ্য ব্যাখ্যা করতে পারেননি অ্যাপ-ক্যাবের ওই কর্তা।
গত শুক্রবার ভাড়ার কাঠামোর ব্যাখ্যা চেয়ে ওই সংস্থাগুলিকে চিঠি দিয়েছিল পরিবহণ দফতর। অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির ভাড়ার মূল কাঠামো কীসের ভিত্তিতে ঠিক হয়, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই চিঠির উত্তর দিতে বলা হয়েছে অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলিকে। গাড়ির চালক এবং মালিকের ন্যায্য লভ্যাংশ থাকা উচিত বলে মত পরিবহণ দফতরের। এক পরিবহণ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘ভাড়া বৃদ্ধির তো একটা নির্দিষ্ট নীতি থাকবে! গাড়িতে ওঠার পরে ইচ্ছামতো কোনও ভাড়া আদায় করা যাবে না।’’
দিল্লি এবং বেঙ্গালুরুর মতো শহরে সরকারের হস্তক্ষেপে ক্যাব সংস্থাগুলি যথেচ্ছ ভাড়া আদায়ের প্রবণতা থেকে সরে এসেছে। অনেকেই মনে করছেন, এ রাজ্যেও পরিবহণ দফতর হস্তক্ষেপ করলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
এ দিন অ্যাপ-ক্যাব চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যাত্রীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রাখার ব্যবস্থা তৈরির দাবি জানান মদনবাবু। গত মে মাসে দমদম এলাকায় অ্যাপ-ক্যাব চালক সাধন হালদারকে হত্যা করে তাঁর গাড়ি নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। এ দিন তাঁর স্ত্রীর হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy