Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Madhyamik Exam 2020

মোবাইল বার করে লেখা শুরু করতেই নজরে?

স্পর্শকাতর কেন্দ্র বলে চিহ্নিত হওয়া সত্ত্বেও ওই স্কুলে সিসি ক্যামেরা ছিল না।

মাধ্যমিকের প্রথম দিনেই এই ছবি মালদহের ভালুকা আরএমএম বিদ্যাপীঠে। ছবি: বাপি মজুমদার

মাধ্যমিকের প্রথম দিনেই এই ছবি মালদহের ভালুকা আরএমএম বিদ্যাপীঠে। ছবি: বাপি মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩৮
Share: Save:

পরীক্ষা শুরু হয়েছে সবে ঘণ্টাখানেক। মঙ্গলবার বাগডোগরার শুভমায়া সূর্যনারায়ণ হাইস্কুলের বাইরে অপেক্ষারত অভিভাবকেরা পেয়ে যান বাংলার প্রশ্নপত্র। সেটি এ বারের কি না, তখনও তা স্পষ্ট নয়। স্কুলের মধ্যেও হট্টগোল শুরু হয়। স্কুল সূত্রে জানা যায়, মোবাইল বার করে উত্তর লিখতে গিয়ে ধরা পড়েছে কয়েক জন। ১৮ জনের কাছ থেকে ১৯টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়। শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক রাম ছেত্রী জানান, এই পরীক্ষার্থীদের এ দিনের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।

অভিযোগ, দুপুর সাড়ে ১২টার কিছু পরে বাগডোগরার ওই স্কুলের বাইরে মির স্যামুয়েল নামে এক যুবকের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র মেলে। দাবি, তিনি মালদহের এক বন্ধুর কাছে ওই প্রশ্নপত্র পেয়েছেন। বাগডোগরার কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তার আর এক বন্ধু। স্যামুয়েল দাবি করেন, উত্তরও পাওয়া যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপে। আর তা পরীক্ষার্থীর মোবাইলে দেওয়া হচ্ছে।

এর পরেই অভিযোগ ওঠে, ওই কেন্দ্রে বহিরাগত এক দল পরীক্ষার্থী মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষা দিতে ঢুকেছে। ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ খুলে তাদের মধ্যে প্রশ্ন-উত্তরপত্র সরবরাহ করা হচ্ছিল বলে দাবি কয়েক জন পরিদর্শকের। তাঁরা জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে এক ছাত্রী মোবাইল বার করে লিখতে গেলে তা নজরে আসে কর্তব্যরত শিক্ষকের। ওই ছাত্রীকে প্রশ্ন করে ১৮ জনের কাছে মোবাইল ফোন মেলে। এক জনের কাছে দু’টি ফোন ছিল।

স্পর্শকাতর কেন্দ্র বলে চিহ্নিত হওয়া সত্ত্বেও ওই স্কুলে সিসি ক্যামেরা ছিল না। দরজায় দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন মাত্র। পরীক্ষার্থীদের কাছে মোবাইল ফোন আছে কি না, তা দেখা হয়নি। স্কুলের ১০০ মিটারের মধ্যে বসেছিল জুয়ার আসর। দু’-এক জন উর্দিধারী পুলিশ টহল দিলেও ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে দেখা যায়নি কোথাও। যুগ্ম আহ্বায়ক জানান, বাজেয়াপ্ত মোবাইলগুলি শিক্ষা দফতরের কাছে দেওয়া হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক গঙ্গাবাহাদুর ছেত্রী ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি।

বাগডোগরায় ইন্টারনেট চালু থাকায় ওই পরীক্ষার্থীদের মোবাইল থেকেই কি প্রশ্নপত্র ছড়িয়েছে? শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার ডিআই রাজীব প্রামাণিক বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কর্তাদের সব জানানো হয়েছে।’’ পর্ষদের উত্তরবঙ্গ দফতর সূত্রের খবর, বাগডোগরার ওই স্কুলে অন্য জেলা থেকে ১১০ জন বাগডোগরার চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের ছাত্র হয়ে পরীক্ষায় বসেছে। তারা মালদহের বাসিন্দা হয়েও বাগডোগরার ওই স্কুলের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে কেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে। এর পিছনে কোনও চক্র সক্রিয় কি না, তা দেখা হচ্ছে। বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে ওই বহিরাগত ছাত্রদের ভর্তি নিতে বলা হয়েছিল। নিয়মমাফিক তাঁরা ভর্তি নিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE