—ফাইল চিত্র।
বড় চমক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যসভা নির্বাচনে প্রার্থী করলেন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মানস ভুঁইয়াকে। আজ, রবিবার নিজের ফেসবুক পেজে রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য দলের ৫ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন তৃণমূলনেত্রী। যে ৪ তৃণমূল সাংসদের মেয়াদ এ বার শেষ হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ৩ জনকে ফের প্রার্থী করা হচ্ছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। প্রার্থীদের তিনি শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।
গত বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা যা ছিল, এ বার তার চেয়ে অনেকটা বেশি। তাই রাজ্যসভার যে ৬টি আসনে নির্বাচন হচ্ছে, তার মধ্যে ৫টিতেই তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। আগামী কাল অর্থাৎ সোমবার থেকে মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়া হবে। তার আগে আজ, রবিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে নিজের দলের ৫ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেন। তৃণমূলের প্রার্থীরা হলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, দোলা সেন, মানসরঞ্জন ভুঁইয়া এবং শান্তা ছেত্রী। এঁদের মধ্যে ডেরেক, সুখেন্দুশেখর এবং দোলা এত দিন সাংসদ পদেই ছিলেন। তাঁদের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাঁদের ফের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। আর এক তৃণমূল সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়েরও মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু তাঁকে এ বার আর টিকিট দিচ্ছে না তৃণমূল। চতুর্থ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে কংগ্রেস-ত্যাগী মানস ভুঁইয়ার নাম। আর কার্শিয়াং-এর প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভায় জিএনএলএফ-এর প্রাক্তন পরিষদীয় দলনেত্রী শান্তা ছেত্রী এ বার তৃণমূলের পঞ্চম প্রার্থী। শান্তা অনেক দিন আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
;
এক বছর আগের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে আসা মানস ভুঁইয়া বেশ কিছু দিন আগেই সদলবলে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু সবং-এর বিধায়ক পদ তিনি ছাড়েননি। কংগ্রেসের তরফে একাধিক বার মানস ভুঁইয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি কোন দলে রয়েছেন? মানসবাবু সদুত্তর দেননি। সম্প্রতি বিধানসভাকে তিনি জানান, তিনি কংগ্রেসেই রয়েছেন, তৃণমূলে যোগ দেননি। দলত্যাগ বিরোধী আইনে বিধায়ক পদ খারিজ হওয়া আটকাতেই মানস ভুঁইয়া মিথ্যাচার করছেন বলে কংগ্রেস অভিযোগ করেছিল। তবে মানসবাবু জানান, তিনি কংগ্রেসেরই বিধায়ক। কিন্তু বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের হাত মেলানো মেনে নিতে পারছেন না বলে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন। এ হেন মানস ভুঁইয়ার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করায়, মানসবাবুর অবস্থান নিয়ে আর কোনও সংশয় রইল না। তবে নিজের খাসতালুক সবং-এর বিধায়ক পদ যে তাঁকে শেষ পর্যন্ত ছাড়তে হচ্ছে, তা নিয়েও আর সংশয় রইল না।
আরও পড়ুন: সৌমিত্রকে সম্মানিত করে ‘আপ্লুত’ মুখ্যমন্ত্রী
পাহাড়ের নেত্রী শান্তা ছেত্রীকে প্রার্থী করার মধ্যেও বিশেষ রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সদ্যসমাপ্ত পুর নির্বাচনে পাহাড়ে আশাতীত ফল করেছে তৃণমূল। পাহাড়ের চার পুরসভার মধ্যে তিনটিতেই মোর্চা দাপট দেখিয়েছে ঠিকই। কিন্তু মিরিক পুরসভা একক ভাবে দখল করে নিয়েছে তৃণমূল। সাড়ে তিন দশক পর পাহাড়ের কোনও পুরসভা পাহাড়-কেন্দ্রিক কোনও দলের হাতছাড়া হয়েছে। দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং-এও আসন পেয়েছে তৃণমূল। তার পরেই শান্তা ছেত্রীকে রাজ্যসভায় পাঠানোর কথা ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন— পাহাড়ের গুরুত্ব আরও বাড়তে চলেছে তৃণমূলের কাছে।
এ বারের রাজ্যসভা নির্বাচনে ৫ প্রার্থীকে জেতানোর মতো বিধায়ক তৃণমূলের হাতে রয়েছে। ফলে এই ৫ জনই যে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন, তা প্রায় নিশ্চিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy