Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal

রোজ নাম বদলাচ্ছে ওরা, বাংলা নিয়ে চুপ কেন, তোপ মমতার

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘এর পর তিনটি ভাষাতেই রাজ্যের নাম বাংলা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তা পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। যদিও তার পর দীর্ঘদিন অপেক্ষা করা সত্ত্বেও নিশ্চুপ কেন্দ্র। যা নিশ্চিত ভাবেই রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা। রাজ্যে কোনও অস্তিত্ব না থাকলেও একটি রাজনৈতিক দল পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলানোর সিদ্ধান্তে প্রভাব খাটাতে পারে কি? ’’

গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ১৫:৪০
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টে বাংলা করা নিয়ে এ বার সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের তরফে প্রয়োজনীয় আইনি পদ্ধতি শেষ করা হলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে কোনও সাড়া মিলছে না। এ ভাবেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ আনলেন মমতা।

ওই বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘আমি দেখতে পাচ্ছি, রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে প্রতি দিন দেশের নানা ঐতিহাসিক জায়গার নাম পাল্টে দিচ্ছে বিজেপি। স্বাধীনতার পর অনেক জায়গারই নাম পাল্টানো হয়েছে। উড়িষ্যার নাম পাল্টে হয়েছে ওড়িশা, বম্বে হয়েছে মুম্বই, মাদ্রাজ হয়েছে চেন্নাই, ব্যাঙ্গালোর হয়েছে বেঙ্গালুরু। ভাষা ও রাজ্যের মানুষের অনুভূতির কথা মাথায় রেখেই হয়েছে এই সব পরিবর্তন, যা একেবারেই সঠিক সিদ্ধান্ত।’’

এর পরই মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বঞ্চনার অভিযোগ এনেছেন। তাঁর বক্তব্য, সারা দেশে নাম পরিবর্তনের হিড়িক জারি থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের জন্য পড়ে থাকছে শুধুই বঞ্চনা। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের নাম ইংরেজিতে ‘বেঙ্গল’, হিন্দিতে ‘বঙ্গাল’ এবং বাংলায় ‘বাংলা’ করার কথা ভেবেছিল রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই রাজ্যের নাম বদলানোর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যদিও তিনটি ভাষায় তিন রকম নাম করা সম্ভব নয় বলেই জানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এর পর নতুন করে ফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রাজ্য বিধানসভায়।

আরও পড়ুন: বছরভর একই মেনু, বাঙালি বিয়েবাড়ির পাতে ‘বিদেশি’ অনুপ্রবেশ

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘এর পর তিনটি ভাষাতেই রাজ্যের নাম বাংলা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তা পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। যদিও তার পর দীর্ঘদিন অপেক্ষা করা সত্ত্বেও নিশ্চুপ কেন্দ্র। যা নিশ্চিত ভাবেই রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা। রাজ্যে কোনও অস্তিত্ব না থাকলেও একটি রাজনৈতিক দল পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলানোর সিদ্ধান্তে প্রভাব খাটাতে পারে কি? সাংবিধানিক রীতিনীতি মেনে আমরা ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিলেও কেন্দ্র তা হতে দিচ্ছে না। এটা কি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিধি ভঙ্গ করছে না?’’

আরও পড়ুন: আদিবাসীদের অস্ত্র তুলে নেওয়ার ডাক, জঙ্গলমহলে ফের সক্রিয় হচ্ছে মাওবাদীরা

এই বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রের কাছে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিক্রিয়া দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুপর্ণ মৈত্র-ও টুইটারে কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।

যদিও বাংলা নামে আপত্তি আছে বলে কেন্দ্রকে আগেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল, এই কথা জানানো হয়েছে রাজ্য বিজেপির তরফে। রাজ্যপালের মাধ্যমে সেই বক্তব্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র সায়ন্তন বসু। মূলত তিনটি কারণে বাংলা নামে আপত্তি বিজেপির। সায়ন্তনের কথায়, ‘‘ প্রথমত, পশ্চিমবঙ্গ নামটির সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নাম জড়িত। শ্যামাপ্রসাদের সৌজন্যেই হিন্দু বাঙালিকে ভারতে আশ্রয় দিতে পশ্চিমবঙ্গের জন্ম হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, পশ্চিমবঙ্গ থাকা মানে পূর্ববঙ্গের অস্তিত্ব স্বীকার করে নেওয়া, যা আসলে বাংলাভাগের ইতিহাসের সাক্ষী। তৃতীয়ত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ বানাতে চান, তাই বাংলা নাম ব্যবহার করতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।’’

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া - পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE