ফাইল চিত্র।
চন্দ্রবাবু নায়ডুর উদ্যোগে ২২ নভেম্বর দিল্লিতে বিরোধীদের বৈঠক হবে কি না, তা এই মুহূর্তে ঘোর অনিশ্চিত। তবে আজ সোমবার, নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুর বৈঠকের কর্মসূচি চূড়ান্ত। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নবান্নে এই বৈঠক হবে। এ দিনই হায়দরাবাদ থেকে বিশেষ বিমানে চন্দ্রবাবু কলকাতায় পৌঁছবেন।
২২ নভেম্বরের দিল্লিতে সব বিরোধী দলকে নিয়ে বৈঠকের ব্যাপারে চন্দ্রবাবু বেশ কিছু দিন ধরেই তৎপর। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, এর আগে কর্নাটকে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর সঙ্গে ও তামিলনাড়ুতে স্ট্যালিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। অখিলেশ যাদব ও মায়াবতীর সঙ্গেও বৈঠক হয়ে গিয়েছে। আগামিকাল তাঁর লক্ষ্য ‘মিশন মমতা।’
বিভিন্ন সূত্রে রবিবার পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে ২২ নভেম্বরের এই বৈঠক করতে মমতা রাজি নন। তিনি তাঁর উপস্থিতির সম্ভাবনা কার্যত বাতিলই করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাঁর সঙ্গে বিরোধী নেতাদের অনেকের কথা হয়েছে। গত কাল শরদ পওয়ার মমতার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। মমতা কথা বলেন অখিলেশের সঙ্গেও। মমতা মনে করেন, সব বিরোধী দলের শীর্ষ স্তরের নেতাদের এনে সম্মিলিত বিরোধী ঐক্যের ছবিটা ভাল করে তুলে ধরা না গেলে এই বৈঠক এখন না করাই ভাল। সূত্রের খবর, মমতা মনে করেন, কংগ্রেস তো বটেই, অখিলেশ-মায়াবতী-সহ সকলেরই উপস্থিতি নিশ্চিত করলে তার রাজনৈতিক তাৎপর্য অনেক বেশি হবে। যদিও ইতিমধ্যে মায়াবতী যে ভাবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, সেটা তাঁর নজরে আছে। তৃণমূল সূত্র বলছে, সোমবার চন্দ্রবাবুর সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টিও আলোচনায় উঠতে পারে। পাশাপাশি, গুরুত্ব পাবে ১৯ জানুয়ারি মমতার ব্রিগেড সমাবেশ। কারণ সেখানেও সব বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতি চাইছেন মমতা।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ফের মাওবাদী পোস্টার জঙ্গলমহলে
চন্দ্রবাবু মনে করেন, মোদীকে সরাতে গেলে জাতীয় স্তরে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করা বিশেষ জরুরি। অন্য দলগুলিরও এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব রয়েছে। তাঁরই পরামর্শে বিভিন্ন বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌতকে। গহলৌত বিভিন্ন নেতার সঙ্গে ফোনে কথাবার্তা শুরু করতেই ক্ষুব্ধ হন শরদ পওয়ার। প্রশ্ন ওঠে, অশোক গহলৌত কে? বিরোধী শিবিরে অনেকেই বলেন, তা হলে কি চন্দ্রবাবুকে সামনে রেখে কংগ্রেস তার তাস খেলছে?
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)
মায়াবতী এবং অখিলেশ দু’জনেই চন্দ্রবাবুকে জানিয়েছেন, বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে যে হেতু কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের দলের জোট হয়নি, তাই সম্মিলিত বিরোধী জোটের ওই বৈঠকটি বিধানসভার নির্বাচনপর্ব মিটে যাওয়ার পরে করাই ভাল। কংগ্রেস নেতাদের আশঙ্কা, বেশ কিছু আঞ্চলিক নেতার আত্মীয়দের দুর্নীতি নিয়ে বিজেপি তাদের ‘ব্ল্যাকমেল’ করছে। সেই কারণে তারা বিরোধী হয়েও বিরোধী হতে পারছেন না। রাফাল প্রশ্নে রাহুল গাঁধী সরব হলেও তাই অন্যরা টুঁ শব্দটি করছেন না।
সূত্রের খবর, ২২ নভেম্বরের প্রস্তাবিত বৈঠক নিয়ে মমতার সঙ্গে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বেরও কথা হয়েছে। আপাতত ওই বৈঠকের কিছু বাস্তব অসুবিধের কথা নিয়ে দু’তরফে আলোচনা হয়েছে। একটি প্রস্তাব হল, এখন না করে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের সময় এই বৈঠক করতে পারলে ভাল হয়।
চন্দ্রবাবু অবশ্য ২২ নভেম্বরের বৈঠক নিয়ে এখনও হাল ছাড়েননি। তিনি তাকিয়ে আছেন মমতার সঙ্গে সোমবারের বৈঠকের দিকে। যদিও চন্দ্রবাবু জানিয়ে রেখেছেন, মমতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। তাই ২২ নভেম্বরের বৈঠকটি করা না করার প্রশ্নে মমতার অভিমতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেবেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy