Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ঝড় আর তুমুল শিলাবৃষ্টির মধ্যেই পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রী

শুধু কলকাতার ব্যবসায়ীরাই নন, শিল্প সম্মেলনে যোগ দিতে ডাকা হয়েছে কালিম্পং, কার্শিয়াং, মিরিকের ব্যবসায়ীদেরও। মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চান, আমরাও অনুষ্ঠানে থাকি। তাই এলাকার শিল্পোদ্যোগীদের নিয়ে যাব।’’

স্বাগত: সোমবার দুপুরে কলকাতা থেকে বিমানে বাগডোগরা এসে পৌঁছন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বিমানবন্দরের বাইরে এসে উৎসাহী বাসিন্দা, পাহাড় থেকে আসা বিভিন্ন সংগঠন, বোর্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

স্বাগত: সোমবার দুপুরে কলকাতা থেকে বিমানে বাগডোগরা এসে পৌঁছন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বিমানবন্দরের বাইরে এসে উৎসাহী বাসিন্দা, পাহাড় থেকে আসা বিভিন্ন সংগঠন, বোর্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

কিশোর সাহা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৮ ০৪:০৫
Share: Save:

পাহাড়ে প্রথম বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন সম্পূর্ণ করে বিনয় তামাঙ্গ নিজে বাগডোগরা এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে। কিন্তু দার্জিলিং পৌঁছনোর আগেই তাঁর কপালে ভাঁজ। বিমল গুরুঙ্গ বা তাঁর অনুগামী কট্টরপন্থীরা গোলমাল বাধাতে পারেন— এই আশঙ্কায় নয়। বিনয়কে চাপে ফেলে দিল পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। যার জেরে সোমবার বিকেলেই ঝোড়ো হাওয়া আর তুমুল শিলাবৃষ্টি পাহাড়ে।

গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল আডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) সূত্রের খবর, মার্চের ঝোড়ো আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখেই ম্যালে দু’দিনের শিল্প সম্মেলনের জন্য শক্তপোক্ত মঞ্চ গড়া হয়েছে। অতিথিরা তো বটেই, সাধারণ পাহাড়বাসীরা যেখানে বসবেন বা দাঁড়াবেন, তারও অনেকটা অংশ ছাউনিতে ঢাকা। জিটিএ থেকে এক হাজার ছাতা আলাদা করে রাখা হয়েছে।

এ দিন বেলা ৩টে নাগাদ বাগডোগরায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন সঞ্জয় বুধিয়া, ময়াঙ্ক জালান, উমেশ চৌধুরী, রুদ্র চট্টোপাধ্যায়রা। শিলিগুড়ি থেকে সিআইআই-এর প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগ দেন। গাড়ি রওনা হয় দার্জিলিঙের দিকে। ততক্ষণে আকাশ কালো করে শুরু হয়েছে ঝোড়ো বৃষ্টি। শিলাবৃষ্টি হচ্ছে কয়েক জায়গায়। রাস্তা, টয় ট্রেনের লাইন শিলায় ঢাকা। যত দূর চোখ যায়, রাস্তাঘাট সব সাদা। তার মধ্যে দিয়ে সাবধানে দার্জিলিং পৌঁছল কনভয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ‘পাহাড় কি রানি’ যেন নিঝুম পুরী!

পথে অবশ্য বৃষ্টি উপেক্ষা করে কয়েক জায়গা দাঁড়িয়ে ছিলেন স্থানীয় লোকজনেরা। তাঁদের ‘দিদি, দিদি’ চিৎকারে থামলেন মুখ্যমন্ত্রী। নিলেন ফুল, খাদা। আর শুনলেন, ‘‘পাহাড় মে শিল্প চাহিঞ্চ (পাহাড়ে শিল্প চাই)।’’ জবাবে তিনি আশ্বাস দিলেন ঠিকই, একই সঙ্গে বলেন, ‘‘পাহাড় শান্ত থাকলেই শিল্প আসবে।’’ সব ঠিক থাকলে পর্যটন, চা, তথ্য-প্রযুক্তি, ফুল-ফলভিত্তিক শিল্পে যে বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা, সেই আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী অনেকে।

শুধু কলকাতার ব্যবসায়ীরাই নন, শিল্প সম্মেলনে যোগ দিতে ডাকা হয়েছে কালিম্পং, কার্শিয়াং, মিরিকের ব্যবসায়ীদেরও। মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চান, আমরাও অনুষ্ঠানে থাকি। তাই এলাকার শিল্পোদ্যোগীদের নিয়ে যাব।’’

ঝড়-বৃষ্টি আর প্রবল ঠান্ডার মধ্যে এই উষ্ণতাটুকু থেকেই আশার আলো দেখছেন বিনয় তামাঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘অশান্তি কাটিয়ে ছন্দে ফিরেছে পাহাড়। এই মেঘও কেটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE