Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

একশো দিনে সেরা জেলাকে শুভেচ্ছা

একশো দিনের প্রকল্পে শ্রমদিবস তৈরির নিরিখে এ বার এখনও পর্যন্ত দেশের জেলাগুলির মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান। মঙ্গলবার সে জন্য জেলা প্রশাসনকে অভিনন্দন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার গুসকরার শিবদায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

মঙ্গলবার গুসকরার শিবদায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

কেদারনাথ ভট্টাচার্য ও সৌমেন দত্ত
কালনা ও গুসকরা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০২:২৪
Share: Save:

একশো দিনের প্রকল্পে শ্রমদিবস তৈরির নিরিখে এ বার এখনও পর্যন্ত দেশের জেলাগুলির মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান। মঙ্গলবার সে জন্য জেলা প্রশাসনকে অভিনন্দন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিন গুসকরায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বর্ধমানে ভাল কাজ হয়েছে। গ্রামীণ কর্মসংস্থানে এখন দেশের মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে। রাজ্যের তরফে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্পের জেলাভিত্তিক যে তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে তাতে পূর্ব বর্ধমান চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি ৯১ লক্ষ কর্মদিবস তৈরি করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও তৃতীয় স্থানে হুগলি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বার গড়ে যেখানে ৩০ দিন কাজ দেওয়া গিয়েছিল, এ বার তা হয়েছে ৬৫ দিন।

ওই তালিকা অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানে প্রায় ৪ লক্ষ ৬৮ হাজার পরিবার কাজ চেয়ে আবেদন করেছে। তাদের মধ্যে কাজ দেওয়া গিয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ ৪৯ হাজারকে। এর নিরিখে দেশে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান। এই জেলার মধ্যে একশো দিনের কাজের বিশ্লেষণে এগিয়ে রয়েছে কালনা মহকুমা। সেখানে পরিবারগুলি গড়ে কাজ পেয়েছে ৬৮.৪৮ দিন। এই মহকুমার মধ্যে আবার গড়ে প্রায় ৭৬ দিন কাজ দিয়ে সবার আগে রয়েছে পূর্বস্থলী ১ ব্লক। প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্যের ব্লকগুলির মধ্যে এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে সার্বিক ভাবে এগিয়ে রয়েছে পূর্বস্থলী ১।

জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতগুলি যেমন ভাল কাজ করেছে, তেমনই প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও নজরদারি চালিয়েছেন। তার ফল মিলেছে।’’ তবে তার পরেও বরাদ্দ না আসার জেরে কাজে সমস্যা রয়ে যাচ্ছে বলে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের অভিযোগ। তাঁরা জানান, মজুরি নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে সে ভাবে ক্ষোভ নেই। কিন্তু নির্মাণদ্রব্যের জন্য ঠিকাদারদের কাছে মোটা টাকা বাকি পড়ে গিয়েছে। ঠিকাদারদের একটি বড় অংশ সে জন্য বেঁকে বসছেন। ইতিমধ্যে গলসি, কেতুগ্রাম ২, খণ্ডঘোষ-সহ বিভিন্ন ব্লক থেকে পঞ্চায়েত প্রধানেরা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে এই সমস্যার কথা জানিয়েছেন।

সভাধিপতি দেবুবাবুর আক্ষেপ, ‘‘চলতি বছরে গড়ে ৭৫ দিন কাজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। টাকার জোগান থাকলে আমরা কর্মদিবসের মতো অন্য সূচকেও দেশের মধ্যে ভাল অবস্থায় থাকতাম।’’ জেলা প্রশাসনের দাবি, চলতি আর্থিক বছরে কেন্দ্রের কাছে পূর্ব বর্ধমান পাবে ১০৪ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। ২০১৬-১৭ বর্ষের জন্য ৫৮ কোটি ৮৪ লক্ষ ও ২০১৫-১৬ বর্ষের ২০ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা বকেয়া। অর্থ্যাৎ, গত তিন বছরে ১৮৪ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের। জেলার ১০০ দিন প্রকল্পের আধিকারিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘৩২ কোটি টাকা পেয়েছি। এখনও ১৫০ কোটি টাকা পাব। সে জন্য আমরা বিভিন্ন মহলে দরবার করে চলেছি।’’

প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, ১০০ দিন প্রকল্পে শ্রমিকদের মজুরির মত এ বার থেকে ইমারতি দ্রব্যের জন্যেও ‘ফান্ড ট্রান্সফার অর্ডার’ বা এফটিও পদ্ধতিতে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা আসছে। তখন অনলাইনে ‘আগে জমা দিলে আগে টাকা মিলবে’ পদ্ধতিতে পঞ্চায়েত বা ব্লক স্তরে টাকা আসবে। এই ব্যবস্থা চালু হলে মজুরির মতোই ঠিকাদারদের পাওনা কমে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE