মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের নীচে টাঙানো ‘তাঁতসাথী’র ব্যানার।—নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বর্ধমানে ঘোষণা করলেন আরও একটি প্রকল্প। ‘তাঁতসাথী’ প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব তাঁত শ্রমিকরা পাবেন তাঁত যন্ত্র। মমতা বলেন, ‘‘এক লক্ষ তাঁতিকে ধাপে ধাপে আগামী ছ’মাসে তাঁতযন্ত্র দেব।’’
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দপ্তরের দাবি, তাঁত যন্ত্র ছাড়াও এই প্রকল্পে সুতো ব্যাঙ্ক থেকে সুতো দেওয়া হবে। সহজ কিস্তিতে ব্যাঙ্ক ঋণও মিলবে।
সরকারি সূত্রে খবর, বর্ধমানে এই প্রকল্প ঘোষণা হলেও, এ ব্যাপারে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটীর শিল্প দপ্তর প্রস্তুতি শুরু করেছিল মাস দুয়েক আগে। দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ প্রকল্পের নাম দিয়েছিলেন তাঁতশ্রী। মুখ্যমন্ত্রীর তা বদলে নাম দেন ‘তাঁতসাথী।’ বর্ধমানের সভাতে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করতে শুরু হয় তড়িঘড়ি কাঠের তাঁতযন্ত্র সংগ্রহ। এ দিন সভায় মুখ্যমন্ত্রী তাঁতযন্ত্র তুলে দেন ৬ জনের হাতে। সভা শেষের পর কালনা, কাটোয়া এবং পূর্বস্থলীর ৬৯ জনকে তাঁতযন্ত্র দেওয়া হয়।
মুখ্যামন্ত্রীর সভার সাজ। বর্ধমানে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা পর তাঁতশ্রমিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। পূর্বস্থলী২ ব্লকের তাঁতশ্রমিক গৌরি বিশ্বাস বলেন, ‘‘অতীতেও দেখা গিয়েছে, অনেকে সরকারি তাঁত যন্ত্র পেয়ে খোলা বাজারে বিক্রি করে দিয়েছে। কারণ এদের কাছে আগে থেকেই তাঁত ছিল।’’ তাঁর আশঙ্কা, এর উপরে যদি যন্ত্র বিলিতে রাজনৈতিক রং দেখা হয়, তাহলে গরিব তাঁতিদের হাতে কতটা যাবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
তবে এদিন তাঁত যন্ত্র পেয়ে উজ্জীবিত বাসনা বিশ্বাস,শ্যামল বসাক, সিরাজুল হকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, একটি তাঁত যন্ত্রের দাম ২০ হাজার টাকারও বেশি। এই অর্থ জোগাড়ের ক্ষমতা ছিল না। বাধ্য হয়ে অন্য মালিকের তাঁতে টাঙ্গাইল শাড়ি বুনতে হত। নিজেদের তাঁতে কাপড় বুনে বাজারে বিক্রি করলে মুনাফা দেড়গুণ বেড়ে যাবে।
কালনা ১ ব্লকের দুলেপাড়া বেলতলা তন্তুবায় টাঙ্গাইল সমবায় সমিতির সম্পাদক হরেকৃষ্ণ দেবনাথ জানান, শুধু যন্ত্র দিলেই হবে না।তাঁত বোনার জন্য পুঁজিরও ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
মন্ত্রী স্বপনবাবু জানান বেশি মজুরি দিয়ে পন্য কেনা সহ সাধারণ তাঁতিদের উন্নয়নে শুরু থেকেই সরকার নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে এদিনের তাঁতসাথী প্রকল্পের ঘোষণা সব কিছুকে ছাপিয়ে গেল। সত্যিকারের গরীব তাঁতিরা এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন কি? মন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, এর আগে গরিব তাঁতিদের কথা এভাবে কি কেউ ভেবেছিল?
ছবি: উদিত সিংহ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন
• অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির সব ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া হবে। ২০ লক্ষ সাইকেলের বরাত দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। সেগুলি এলে আরও ২০ লক্ষ দেওয়া হবে।
• ৪১টি মাল্টিসুপার হাসপাতাল তৈরি হবে রাজ্যে। ৩০টি মহকুমা হাসপাতালে সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট) হবে।
• কন্যাশ্রী প্রকল্পে ২২ লক্ষ নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১৪ অগস্টের মধ্যে আরও ২ লক্ষ হবে।
• ৩ লক্ষ লোককে জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে। ৭০টি জায়গায় পথচারীদের বিশ্রামের জন্য ‘পথসাথী’ তৈরি করা হচ্ছে।
• আশা কর্মীদের মাসিক বেতন দেড় হাজার টাকা করা হয়েছে। আরও বাড়ানোর চেষ্ঠা চলছে। ভাল কাজ করুন। সুযোগ হলে আমরা আপনাদের নিশ্চয় দেখব।
• ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের বেতন বাড়ানো হয়েছে।
• শক্তিগড়ে ল্যাংচা হাব তৈরি হবে। রাজ্য সরাকার জমি দেবে। বিশ্ব বাংলা ব্যঙ্ক গড়া হবে।
• সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের আর্থিক সাহায্যের জন্য অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ থাকলেও অনেকেই পারেন না। তাদের জন্য বিডিওদের বিশেষ. ক্যাম্প করার নির্দেশ।
• এনবিএফ কর্মীদের উন্নতির জন্য কমিটি গড়া হয়েছে। সেই কমিটি রিপোর্ট দিলে, তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
• ২০০টি কিসান মান্ডি গড়া হবে এ রাজ্যে। তার মধ্যে ১০০টি ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy