আশা এই সব স্থান সংরক্ষণের। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
এই এলাকার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দ্বারকানাথ ঠাকুরের স্মৃতি। সেই স্মৃতি রক্ষায় সম্প্রতি তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরে স্মৃতি বিজড়িত এলাকার ভোল বদলাবে বলে আশা করছেন এলাকাবাসীর একাংশ।
সম্প্রতি রানিগঞ্জের সিহারসোল রাজবাড়ি মাঠে একটি সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘দ্বারকানাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত শহর এই রানিগঞ্জ। সেই ঐতিহ্য মাথায় রেখে দ্বারকানাথের স্মৃতি বিজড়িত স্থানে পর্যটনের বিকাশের জন্য পর্যটন দফতরকে উদ্যোগী হতে বলব।’’ ওই মঞ্চ থেকে এর পরে তিনি আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে মঞ্চ থেকেই শহরে দ্বারকানাথের নামে কমিউনিটি হল, রাস্তা তৈরির নির্দেশ দেন।
রানিগঞ্জের এগারা পঞ্চায়েতের নারায়ণকুড়ি মথুরাচণ্ডী ঘাট লাগোয়া দামোদর নদের পাড়ে দ্বারকানাথের কয়লাখনি ছিল। ভূগর্ভস্থখনি থেকে কয়লা টেনে তোলার জন্য হলেজঘর, খনিকর্মীদের খনিতে ওঠানামার খনিমুখ, দ্বারকানাথের বসবাসের বাংলো, সংস্থার কাজকর্ম পরিচালনার প্রশাসনিক ভবন, নৌকার মাধ্যমে কয়লা পরিবহণের জন্য নির্মিত জেটির ধ্বংসাবশেষ আজও সেই স্মৃতি ধরে রেখেছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই এলাকাটি নিয়ে দেশ-বিদেশের বহু মানুষের আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু সংরক্ষণে আরও পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি এই এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কলেজ অব আর্টসের’ শিক্ষক এডওয়ার্ড হলিস। সেই সময়ে তিনি আক্ষেপ করেছিলেন, ‘‘কয়লা শিল্পে দ্বারকানাথের বিশিষ্ট ভূমিকা থাকলেও ভারতবর্ষের পযর্টন মানচিত্রে কোথাও এই স্থানের উল্লেখ নেই। আমরা আন্তর্জাতিক স্তরে পর্যটন মানচিত্রে দ্বারকানাথের স্মৃতি বিজড়িত এলাকাকে চিহ্নিত করতে চাই।’’
পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন ২০১৮-র ২৪ মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি করে এলাকাটিকে হেরিটেজ ঘোষণা করে। কিন্তু তার পরেও স্মৃতি বিজড়িত সৌধগুলিকে সংরক্ষণের জন্য কোনও কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। হেরিটেজ ঘোষিত হওয়ার পরে প্রস্তাবিত হেরিটেজ কমিটি ও মথুরাচণ্ডী মন্দির কমিটি যৌথ ভাবে বৈঠক করে একগুচ্ছ প্রস্তাব নেয়। প্রস্তাবগুলি, জেটিকে ঘিরে শিশু উদ্যান, কমিউনিটি হল, গ্রিন সিটি, ধংসপ্রাপ্ত বাংলো চত্বরে প্রদশর্নী কক্ষ, প্রশাসনিক ভবনে গ্রন্থাগার থেকে উপাসনাকেন্দ্র তৈরি করা হবে।
দু’টি কমিটিরই সদস্য ভূতনাথ মণ্ডল। তাঁর আক্ষেপ, সব জায়গায় নানা আশ্বাস মিলেছে কিন্তু কাজ হয়নি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে আশার আলো দেখছেন এলাকাবাসী। এগারা উচ্চ বিদ্যালয়েরর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অশোক গড়াই বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং বিষয়টিতে নজর দেওয়ায়, আশা করি এ বার নিশ্চয় কিছু একটা হবে।’’
মেয়র জিতেন্দ্রবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘রানিগঞ্জের শিশু বাগান এলাকায় দ্বারকানাথ স্মৃতি ভবন তৈরি হচ্ছে। শহরের অন্যতম রাস্তা তাঁর নামে রাখার প্রয়াস শুরু হয়েছে।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এডিডিএ) চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পর্যটন দফতরের সঙ্গে তাঁরা যৌথ ভাবে হেরিটেজ ঘোষিত এলাকায় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy