Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দলে মমতার অনুদান ৩ লক্ষ, সনিয়ার ৫৪ হাজার

কমিশনে জমা পড়া তথ্য বলছে, দলের তহবিলে অনুদান দিয়েছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী। অন্য দিকে নিজেদের নেতা-নেত্রী ছাড়াও কংগ্রেসকে অনুদান দিয়েছে একাধিক কোম্পানি।

— ফাইল চিত্র।

— ফাইল চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৫৯
Share: Save:

ব্যক্তিগত স্তরে অনুদান নিয়েও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের অনুসন্ধানের আওতায় আসতে হয়েছে তৃণমূলকে। কিন্তু কোম্পানি বিশেষজ্ঞদের একাংশের ব্যাখ্যা, সাধারণ ভাবে কোম্পানি সংক্রান্ত বিষয়েই তদন্ত করে মন্ত্রক। তা সত্ত্বেও তৃণমূলের দাখিল করা অনুদান-রিপোর্ট যাচাইয়ের দায়িত্ব মন্ত্রককে কেন দেওয়া হল, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে এ রাজ্যের শাসকদলের অন্দরে।

কমিশনে জমা পড়া তথ্য বলছে, দলের তহবিলে অনুদান দিয়েছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী। অন্য দিকে নিজেদের নেতা-নেত্রী ছাড়াও কংগ্রেসকে অনুদান দিয়েছে একাধিক কোম্পানি।

দলের মোট ৩৩ জন নেতা-মন্ত্রীর মাধ্যমে ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরে ২০ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা অনুদান গ্রহণ করেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেকের মাধ্যমে দলকে সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন।

বাকি বেশির ভাগ নেতা-নেত্রীর অনুদানের অঙ্ক ২৫-৫০ হাজার টাকা। কেউ কেউ অবশ্য এক লক্ষ টাকা দলকে অনুদান দিয়েছেন। তবে প্রত্যেকেই অনুদান দিয়েছেন চেকের মাধ্যমে।

তথ্য অনুয়ায়ী, ওই একই আর্থিক বছরে অনুদান হিসেবে কংগ্রেস গ্রহণ করেছে মোট ২৬ কোটি ৬৫ লক্ষ ৮৮ হাজার ৬২১ টাকা। অনেক বেসরকারি কোম্পানি অনুদান দিয়েছে কংগ্রেসকে। সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ৫৪ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছেন।

কেন্দ্রের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম দিয়েছেন ১০ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও দলের অন্য বহু নেতা-নেত্রী অনুদান দিয়েছেন কংগ্রেসকে। যে কোম্পানিগুলি অনুদান দিয়েছে, তাদের শংসাপত্রের প্রতিলিপি অনুদান-রিপোর্টের সঙ্গেই কমিশনকে জমা দিয়েছে কংগ্রেস।

উল্লেখ্য, নিয়ম মেনে ব্যক্তি বা কোম্পানি—সকলের প্যান (স্থায়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর) নম্বরের উল্লেখও রয়েছে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের অনুদান-রিপোর্টে। এই সামগ্রিক নথি কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, কোম্পানি আইনের আওতায় ওই নথিগুলি যাচাই করে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট কমিশনকে পাঠাবে কর্পোরেট মন্ত্রক।

কর্পোরেট বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, প্যানের মাধ্যমে কোনও কোম্পানির পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানতে পারে মন্ত্রক। প্রয়োজনে ব্যক্তির প্যানের মাধ্যমেও তথ্য যাচাই করা যেতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের অপর একটি অংশের যুক্তি, তৃণমূল বা কংগ্রেসের অনুদান-রিপোর্টে যে অর্থাঙ্কের উল্লেখ রয়েছে, লোকসভার মতো নির্বাচনের নিরিখে তা নেহাতই অল্প। ফলে ওই দু’টি দলের তরফেই প্রশ্ন উঠেছে, কোন উদ্দেশ্যে অনুদান-তথ্য যাচাই করতে হচ্ছে? একইসঙ্গে, যে তহবিলে জমা পড়া অনুদান শুধুমাত্র ব্যক্তিনির্ভর, তার অনুসন্ধানেও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রককে কেন দরকার হল?

যদিও নির্বাচন কমিশনের তরফে এর কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। এখনও উত্তর মেলেনি কমিশনকে পাঠানো দু’টি ই-মেলেরও।

নির্বাচন কমিশন যদি ভবিষ্যতে এর উত্তর দেয়, তখনও তাদের সেই বক্তব্য গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করবে আনন্দবাজার পত্রিকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE