ক্ষুব্ধ: প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা। নিজস্ব চিত্র
সরকারের ঘরে মামলার পাহাড়। কবে তার নিষ্পত্তি হবে, কেউ জানে না। আবার নিষ্পত্তি হলেই যে তাতে সরকার জিতবে, তা নিয়েও নিশ্চিত নয় দফতরগুলি। বরং দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ মামলায় হেরে মোটা টাকা দণ্ড দিতে হচ্ছে সরকারকে। শুধু মামলা লড়তেই প্রতি বছর কোষাগার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
এ সব নিয়েই আইন দফতরের উপরে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাজ্যের প্রশাসনিক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সরকারের ৩০ হাজারেরও বেশি মামলা পড়ে রয়েছে। কোষাগার থেকে টাকা খরচ হচ্ছে। আমি এ সব সমাধানের নির্দেশ দিয়েছি।’’
নবান্নের খবর, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং দফতরের সচিবকে এ দিন কার্যত তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের মূল কারণ, যে সব মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, তার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সরকার কেন হারছে, তা নিয়ে।’’ হারের কারণ ব্যাখ্যা করে ওই কর্তার দাবি, অনেক মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী ঠিক মতো লড়ছেন না। অনেক ক্ষেত্রে আইনজীবীকে সংশ্লিষ্ট দফতর ঠিক মতো বিষয়টি সম্পর্কে জানাচ্ছে না। ফলে সরকারের যুক্তি তুলে ধরতে না পারায় হারতে হচ্ছে বহু ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে কাজ শেষ করতে নির্দেশ মমতার
সমস্যা আরও আছে। আইন দফতর সূত্রে খবর, অনেক মামলায় দেখা যায় সরকারপক্ষের আইনজীবীর কোনও আত্মীয় বিরোধী পক্ষের আইনজীবী। আইন দফতরের এক কর্তা উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘‘সম্প্রতি খাদ্য দফতরের একটি মামলায় সরকারের আইনজীবী ছিলেন শীর্ষান্ন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিরোধীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন তাঁর বাবা এবং সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকার মামলা হারলে আইনজীবীর মনোভাব নিয়ে তো প্রশ্ন উঠবেই!’’ এ দিনের বৈঠকে অবিলম্বে এর সমাধানের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী এ নিয়ে কোনও কথা না বললেও দফতরের একাধিক কর্তা দায় চাপিয়েছেন বিভিন্ন আদালতে জমে থাকা মামলা এবং পর্যাপ্ত কর্মী না থাকাকেই। এই শীর্ষ কর্তা জানান, এই মুহূর্তে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি থাকার কথা ৭৪ জন। রয়েছেন ৩১ জন! জমে থাকা মামলার সংখ্যা ২ লক্ষেরও বেশি। বিচারপতি নিয়োগ না হওয়ায় সম্প্রতি আইনজীবীদের একাংশ ও বিচারপ্রার্থীরা অবস্থান-বিক্ষোভ করেছেন। দিন কয়েক আগে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচারপতি নিয়োগের দাবি জানান। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মামলার পাহাড় শুধু সরকারের ঘরে নয়, হাইকোর্টেও জমছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy