ছবি পিটিআই।
কয়লা উত্তোলনে ১০০% বিদেশি বিনিয়োগে ছাড়পত্র এবং কোল ইন্ডিয়ার চারটি শাখা সংস্থার দফতর কলকাতা থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে কয়লা ক্ষেত্রে ১০০% বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত সরকার যাতে পুর্নবিবেচনা করে, সেই অনুরোধও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এক দিকে মোদী সরকার যখন আত্মনির্ভর ভারত গঠনের ডাক দিচ্ছে, তখন কয়লা উত্তোলনে বিদেশি বিনিয়োগ চাইছে কেন্দ্র। এমন স্ববিরোধী সরকার আগে আসেনি।’’
মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ১৯৭৩ সালে দেশের প্রয়োজনীয় জ্বালানি ও শক্তি নিরাপত্তার কৌশলগত দিকটি মাথায় রেখেই কয়লা খনিগুলি সরকারি হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিছু অহেতুক কারণ দেখিয়ে যে ভাবে কয়লা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে, তার বিরোধিতা করতে হচ্ছে। দুনিয়াজুড়ে অপ্রচলিত শক্তি বা বিদ্যুতের উৎপাদনে বিনিয়োগের ঝোঁক দিন দিন বাড়ছে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের ১০০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কয়লাকেন্দ্রিক লগ্নি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। ফলে এই সময়ে কয়লা ক্ষেত্রে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আসা দূরঅস্ত্।
মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কোল ইন্ডিয়া দেশের মোট উৎপাদিত কয়লার ৮০% উত্তোলন করে। ২০১৮-১৯ সালেও কর দেওয়ার আগে তাদের লাভের অঙ্ক ছিল ২৭ হাজার কোটি টাকা। সংস্থার হাতে ৩১ হাজার কোটি টাকার নগদ মজুত রয়েছে। এমন দেশীয় লাভজনক সংস্থা থাকা সত্ত্বেও কয়লা খনির জন্য ১০০% বিদেশি বিনিয়োগ চাওয়া মোটেই ভাল বার্তা দিচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারত গঠনের যে তত্ত্ব, তার চেয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে বলেছেন, উন্নত বা অনুন্নত দু’ধরনের দেশেই খনিজ সম্পদ উত্তোলনের প্রশ্নে স্থানীয় মানুষ বার বার বিরোধিতা করে থাকেন। তাঁদের শোষণ করেই মুনাফা করা হচ্ছে, এই ধারণা থেকেই বহু স্থানে টানা বিরোধিতা হয়। দীর্ঘমেয়াদে যা দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করে।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতার আরও একটি কারণ, ৩০ জুনের মধ্যে কলকাতা থেকে কোল ইন্ডিয়ার ৪টি শাখা সংস্থার দফতর সরানোর সিদ্ধান্ত। মোদীকে চিঠিতে তিনি লিখেছেন, দেশের কয়লা উৎপাদনের ৮০ ভাগ আসে পূর্ব ভারত থেকে। কোল ইন্ডিয়ার সদর দফতর তাই কলকাতায়। ওই ৪টি সংস্থায় কর্মরত ঠিকা বা চুক্তি শ্রমিকেরা মূলত কলকাতা ও আশপাশের বাসিন্দা। দফতর সরলে তাঁদের কাজ চলে যাবে। ৪টি সংস্থার দফতর কোল ইন্ডিয়ার সদর দফতরের কাছাকাছি একই শহরে থাকায় সমন্বয়েও সুবিধা হত। দফতর সরলে সমস্যা হতে বাধ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy