বাবাকে মারের এই দৃশ্যই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সুগারে আক্রান্ত মাকে লুকিয়ে মিষ্টি খাইয়েছিলেন আশি বছরের বৃদ্ধ বাবা। জানতে পেরে বাবাকে চড়-থাপ্পড় মেরে ‘শাসন’ করল ছেলে।
২০ অক্টোবর অশোকনগর থানার বিল্ডিং মোড় এলাকার এই ঘটনা পড়শির মোবাইলে ভিডিয়ো রেকর্ডিং হয়েছে। যা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছেলের কীর্তি দেখে নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ছেলের শাস্তির দাবিতে সরব নেট-জেন।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, শীর্ণ চেহারার পাঞ্জাবি পরা বৃদ্ধের গলা ধরে গালে একটার পর একটা চড় মারছে ছেলে। বলছে, ‘‘কেন মাকে সন্দেশ খেতে দিয়েছো? জানো না, মায়ের মিষ্টি খাওয়া নিষেধ। আমাকে জিজ্ঞেস করোনি কেন?’’ মারের চোটে চশমা খুলে পড়ার জোগাড় বৃদ্ধের। তিনি কিছু বলতে চাইছেন বারবার। কিন্তু কোনও রকম কথা বলার সুযোগ না দিয়েই চলছে লাগাতার শাসন। ভিডিয়োয় বৃদ্ধকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘ভুল হয়ে গিয়েছে।’’ তাতেও থামছে না শাসানি, মার।
বুধবার পুলিশ খবর পেয়ে বাড়িতে আসে। পাড়া-পড়শিদের পীড়াপীড়িতে থানায় অভিযোগ করেছেন বৃদ্ধ মানিকলাল বিশ্বাস। এ দিনই গ্রেফতার করা হয় ছেলে প্রদীপ বিশ্বাসকে। বছর চল্লিশের প্রদীপ অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার অস্থায়ী কর্মী। তার বক্তব্য, ‘‘বাবার গায়ে হাত তোলাটা ঠিক হয়নি। ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।’’
পুলিশ অবশ্য জানতে পেরেছে, বাবার সঙ্গে এমন আচরণ প্রথম নয় প্রদীপের। মানিকবাবুকে কারণে-অকারণে প্রায়ই মারধর করে প্রদীপ। ঠিক মতো খেতে দেওয়া হয় না বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন বৃদ্ধ। তাঁর কথায়, ‘‘স্ত্রীর সুগার আছে। তা-ও ওকে ডেকে অল্প একটু মিষ্টি খাইয়ে ফেলেছিলাম। জানতে পেরে ছেলেটা কী মার মারল!’’ মানিকলাল বলেন, ‘‘আমি কিন্তু এত সবের পরেও কাউকে কিছু বলিনি। সকলে খবর পেয়ে বাড়িতে আসছেন।’’
প্রতিবেশী এক যুবকের কথায়, ‘‘প্রদীপ যে বাবাকে মারধর করে, সেটা আমরা জানতাম। কিন্তু সরাসরি কোনও প্রমাণ ছিল না। এমন ছেলেকে উচিত শিক্ষা দেওয়া দরকার।’’
অশোকনগরের বিধায়ক ধীমান রায় জানালেন, ঘটনাটা তাঁকে জানিয়েছিলেন মানিকবাবু। পুলিশের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিধায়ক। কিন্তু সে সময়ে মানিক বলেছিলেন, ‘‘পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে ছেলেটাকে কষ্ট দিতে পারে। চাকরি-বাকরি নিয়ে টানাটানি হতে পারে। অভিযোগ জানিয়ে কী দরকার!’’
মানিকবাবুর প্রতিক্রিয়া শুনে সে সময়ে বিস্মিত হয়েছিলেন ধীমান। তাঁর কথায়, ‘‘যতই হোক, পিতৃস্নেহ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy