মগ্ন: জয়পুরে মানস। নিজস্ব চিত্র
নেপাল মাহাতোর তালুকে এসে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতাদের হুঁশিয়ারি দিতে শুনেছে পুরুলিয়ায়। এ বার তৃণমূল কর্মীদের চাঙ্গা করতে কর্মিসভায় অন্য সুর শোনা গেল খাতায়-কলমে কংগ্রেস বিধায়ক থাকা মানস ভুঁইয়ার গলায়। ঝালদায় এসে দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা কংগ্রেস জেলা সভাপতি নেপালবাবুকে মানসবাবু ‘ভাই’ বলে তৃণমূলে টানার ডাক দিলেন। সেই সঙ্গে কিছুটা শ্লেষও মিশেছিল।
সোমবার বাঘমুণ্ডি বিধানসভার কর্মিসভা ছিল ঝালদা শহরে। সেখানে মানসবাবু বলেন, ‘‘আমার একজন ভাই এখানে আছেন। খালি এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কখনও রাঁচি যাচ্ছেন, কখনও কলকাতা যাচ্ছেন, কখন অধীরবাবুর কাছে যাচ্ছেন, কখনও মান্নান সাহেবের কাছে যাচ্ছেন। বলছেন, ‘কী যে করি’। শান্তিরাম মাহাতোর সঙ্গে হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব তিনি তৈরি করেছেন। অথচ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাছে ডাকছেন। ঝালদাতে যদি এ ভাবে কংগ্রেস চলে, তাহলে ওই দলটা কর্পূরের মতো উবে যাবে। আইসক্রিমের মতো গলে গলে পড়বে।’’ নৈহাটির বিধায়ক যুব তৃণমূল নেতা পার্থ ভৌমিক অবশ্য নেপালবাবুর সম্পর্কে চড়া সুরেই বক্তব্য দিয়েছেন।
এই এলাকাতে সভা করতে এসে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নেপালবাবুকে নেপালে উৎখাত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিধানসভা ভোটের আগে নেপালবাবুকে পরাজিত করার ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু ভোট ব্যাঙ্কে কিছুটা ধস নামলেও নেপালবাবুর কাছ থেকে বাঘমুণ্ডি বিধানসভা ছিনিয়ে নিতে পারেনি তৃণমূল। কংগ্রেসের ঘরভাঙার কৌশলও অবশ্য এখনও এলাকায় চালিয়ে যাচ্ছে শাসকদল। মাঝখানে নেপালবাবু দল পরিবর্তন করবেন কি না তা নিয়ে কানাঘুষোও ঘুরতে থাকে। রাজনীতির নিয়ে সচেতন লোকজনের মতে, মানসবাবু সেই জল্পনায় ধোঁ য়া দিয়ে গেলেন।
নেপালবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘উনি (মানস) মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার (রাজ্যসভার সাংসদের জন্য তৃণমূল মানসবাবুর নাম ঘোষণা করেছে) পেয়েছেন। উনি নিজের কথা বলুন। আমাকে নিয়ে আবার কেন পড়ে রয়েছেন? রাঁচি, কলকাতা যেতেই পারি। পরিষদীয় দলের ডেপুটি লিডার হিসেবে দলের নেতৃত্বের কাছেও যাই। উনি কেন এ সব নিয়ে পড়ে রয়েছেন, বুঝতে পারছি না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঝালদার মানুষই ওঁদের দেখাবেন কী ফল হয়।’’
এ দিনের কর্মিসভায় ছিলেন দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো, মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু, সৃষ্টিধর মাহাতো, যুব সভাপতি সুশান্ত মাহাতো, দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম রায় প্রমুখ। যদিও রবিবার থেকে শুরু হওয়া তৃণমূলের অন্য কর্মিসভাগুলির মতো ঝালদার সভায় তেমন ভিড় হয়নি। দলীয় নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, তীব্র গরমেই ভিড় কিছুটা কম হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy