Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Marriage

৫০ পেরিয়ে বিয়ে, খুশি নবদম্পতি

গাজলের মাধাইডাঙা গ্রামের বাসিন্দা বিরসা কিস্কু।

অভিভাবক: বরের টোপর ঠিক করে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গাজলে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

অভিভাবক: বরের টোপর ঠিক করে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গাজলে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহা 
গাজল শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০২:১৯
Share: Save:

কেউ বাবা-মায়ের বিয়ের তদারকি করলেন। কেউ বিয়ের সময় দাঁড়িয়ে রইলেন বাবা-মায়ের পাশে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মালদহের গাজলে পুলিশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আদিবাসীদের গণবিবাহ ধরা পড়ল এমনই ছবি। পঞ্চাশের গণ্ডি পার করে নতুন করে বিয়ের পিঁড়িতে বসার সুযোগ হওয়ায় খুশি নবদম্পতিরা। পঞ্চাশোর্ধ্ব দম্পতিদের সঙ্গেই বিয়ে করলেন একঝাঁক যুবক-যুবতীও।

গাজলের মাধাইডাঙা গ্রামের বাসিন্দা বিরসা কিস্কু। প্রায় ১৮ বছর আগে ধিনু হাঁসদার সঙ্গে ঘর বাঁধলেও সামাজিক মতে বিয়ে করা হয়নি বিরসার। তাঁদের দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করে। এ দিন দুপুরে গাজলের কলেজ ময়দানে বিয়ের অনুষ্ঠান সারেন তাঁরা। কেন এই বয়সে বিয়ে? বিরসা, ধিনুরা বলেন, ‘‘বিয়ে করতে গেলে গ্রামের সকলকে খাওয়াতে হয়। হাজার হাজার টাকার বিষয়। দিনমজুরি করে সংসার চলে। বাড়তি খরচ করার মতো টাকা ছিল না। পুলিশ বিয়ের আয়োজন করায় গাজলে হাজির হয়ে গেলাম।’’ বাবা-মায়ের বিয়ে দেখতে এসেছিল ঝিমলি, সরলারাও। তারা বলে, ‘‘গ্রামে তেমন বিয়ে হয় না। এক সঙ্গে প্রায় ৩০০ বিয়ে দেখতে পেয়ে খুব ভাল লাগছে। আর বাবা-মায়ের বিয়ে হওয়ায় তো খুবই ভাল লাগছে।’’

বিরসার মতোই পঞ্চাশের কোঠায় দাঁড়িয়ে বিয়ে করেন গাজলেরই মাইকেল সোরেন। তিনি বলেন, “আমাদের বিয়ে যে হবে তা কখনও ভাবতে পারেনি। তবে চিন্তায় ছিলাম। কারণ আমাদের বিয়ে না হলে ছেলে-মেয়েদেরও সামাজিক মতে বিয়ে হত না। আমাদের রীতি অনুযায়ী, ছেলে-মেয়েদের বিয়ের এক ঘণ্টা আগে হলেও বাবা-মাকে বিয়ে করতে হবে। তাই সামাজিক মতে বিয়ের অনুষ্ঠানটা খুবই জরুরি।”

তবে শুধু প্রবীণেরাই নয়, যুবক-যুবতীরাও ছিলেন আসরে। চাঁচলের নিকিতা ওরাওঁ বলেন, “সামাজিক মতে বিয়ে করার ইচ্ছে সবারই থাকে। তবে অর্থাভাবে হয়ে ওঠে না। তাই গণবিবাহের কথা শুনে দেরি না করে ছুটে আসি।” এ দিন নবদম্পতিদের সঙ্গে ছিলেন পরিজনেরাও। বিয়ে দেখতে হাজির হন আদিবাসী সম্প্রদায়ের অন্য বাসিন্দারাও।

পুলিশের এক কর্তা বলেন, “নিজেকে কনেপক্ষ বলে মনে হচ্ছিল। সকাল থেকেই বিয়ের সরঞ্জাম জোগাড় করা থেকে শুরু করে অতিথিদের আপ্যায়ন, খাবারের তদারকি সবই নিজেদের হাতে করলাম তো।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Mamata Banerje
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE