Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Marriage

নীরব নয়নে সম্মতি, সাত পাকে বাঁধা যুবক-যুবতী

তবে দু’জনের সম্পর্ককে একসূত্রে গাঁথার কাজটি করেছেন পাত্র-পাত্রীর মায়েরাই। দুই মায়ের আলাপ প্রায় বছর আঠারো আগে।

—বিয়ের আসরে নবদম্পতি।

—বিয়ের আসরে নবদম্পতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৪
Share: Save:

এ যেন সযত্নে লেখা নীরব ডায়েরির কোনও এক পাতা!

প্রেম প্রকাশের জন্য ‘শব্দ’ বিষয়টা যে একান্তই অপ্রয়োজনীয়, তা আরও একবার প্রমাণ করলেন ওঁরা। প্রতীক দাস এবং বর্ণালী কাজলি। অগ্নিকে সাক্ষী রেখে সাত পাকে বাঁধা পড়লেন যুগল। শুভদৃষ্টির পর লাজুক চোখে মুচকি হেসে দিলেন একে অপরের পাশে থাকার নীরব প্রতিশ্রুতিও। ঘটনাচক্রে প্রতীক এবং বর্ণালী ছোটবেলা থেকেই মূক এবং বধির।

‘ভালবাসার সপ্তাহ’-এর শেষে এক মানবিক অনুষ্ঠানের সাক্ষী রইল হলদিয়া। তবে দু’জনের সম্পর্ককে একসূত্রে গাঁথার কাজটি করেছেন পাত্র-পাত্রীর মায়েরাই। দুই মায়ের আলাপ প্রায় বছর আঠারো আগে। দুর্গাচক এলাকার খঞ্জনচকের বাসিন্দা ২৪ বছরের প্রতীকের বাবা বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। বাবা-মার একমাত্র সন্তান প্রতীকের প্রাথমিক পড়াশোনা হলদিয়ার মূক ও বধির স্কুল ‘শ্রুতি’তে। এরপর মুকুন্দপুরের হেলেন কেলার মূক ও বধির বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক। তারপর রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। অন্যদিকে, ২১ বছরের বর্ণালীর বাবাও বেসরকারি সংস্থার কর্মী। বাবা-মায়ের আদরের ছোট মেয়ে বর্ণালীও ছোটবেলা থেকেই মূক ও বধির। তিনিও ‘শ্রুতি’-রই ছাত্রী।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে অভিভাবকদের ডাকা হলে স্কুলে যেতেন প্রতীক এবং বর্ণালীর মায়েরা। সেখানে যেতে যেতেই আলাপ হয় প্রতীকের মা যমুনা এবং বর্ণালী মা অনিমার। ১৮ বছর আগের আলাপ অবশেষে বাঁধা পড়ল পারিবারিক সম্পর্কের বন্ধনে। শুভবিবাহের দিন ঠিক হয়েছিল ১৬ ফেব্রুয়ারি। অগ্নিসাক্ষী রেখে চার হাত এক হয়। ব্রাহ্মণ পুরোহিত উচ্চারণ করেন হৃদয়-বন্ধনের মন্ত্র। আকার-ইঙ্গিতে সেই সকল মন্ত্রের ব্যাখ্যা বুঝিয়ে দেওয়া হয় নবদম্পতিকে। হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী, যাবতীয় আচার-নিষ্ঠা মেনেই সম্পন্ন হয় বিয়ের অনুষ্ঠান। তবে বিয়ের অনুষ্ঠানের শত ব্যস্ততার মধ্যেও মনটা ভার বর্ণালীর মা অনিমার! বলছিলেন, ‘‘ওকে কখনও একা কোথাও ছাড়িনি। কাল মেয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে যাবে, এটা ভেবেই খুব কষ্ট হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Valentines Day Deef and Dumb Marriage Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE