Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

লহমায় লোপাট হাজার হাজার টাকা, এটিএমে আতঙ্ক

ব্যাঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষুব্ধ উপভোক্তারা। ছবি: রণজিৎ নন্দী

ব্যাঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষুব্ধ উপভোক্তারা। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০৫:২৪
Share: Save:

কানাড়া ব্যাঙ্ক থেকে ২৯ জুলাই আসা একটি মোবাইল-মেসেজ দেখে চমকে উঠেছিলেন বালিগঞ্জ পার্ক রোডের গৃহবধূ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। মেসেজে লেখা, তাঁর ডেবিট কার্ড থেকে ২০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। অনিন্দিতাদেবী জানান, তিনি বাড়িতে ছিলেন। ডেবিড কার্ড তাঁর কাছেই ছিল। তা হলে কী করে তাঁর ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে টাকা তোলা হল? ব্যাঙ্কের কাস্টমার সার্ভিসে ফোন করে তাঁর মাথায় হাত। কাস্টমার সার্ভিসের তরফে জানানো হয়, ২০ নয়, দু’দফায় তাঁর এটিএম কার্ড ব্যবহার করে দিল্লির কোনও এটিএম থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ৪০ হাজার টাকা!

পুলিশি সূত্রের খবর, গত চার দিনে শতাধিক গ্রাহকের টাকা লোপাট হয়েছে। তা হলে কি ফের হ্যাকার হানা এটিএম কাউন্টারে, উঠছে প্রশ্ন।

শুধু অনিন্দিতাদেবী নন, একই অভিজ্ঞতা হয়েছে সল্টলেকের আইটি সংস্থার কর্মী ও গড়িয়াহাটের বাসিন্দা কৌশিক বসু, গড়িয়াহাটের গাড়িচালক সতীশ মোদী, গোল পার্কের কাছে মোবাইল সংস্থায় কর্মরত দেবপ্রিয় দাস, গোল পার্কের বাসিন্দা নিবেদিতা রায়চৌধুরী এবং তাঁর স্বামী অমিতকুমার মজুমদারের।

মঙ্গলবার সকাল থেকে গড়িয়াহাটে কানাড়া ব্যাঙ্কের সামনে আতঙ্কিত গ্রাহকের ভিড়। সকলেই চান এটিএম কার্ড ব্লক করে দিতে। পুলিশ জানায়, সব গ্রাহক টাকা ফেরত পাবেন বলে কানাড়া ব্যাঙ্কের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: জেনে রাখুন, এটিএমে কী ভাবে ফাঁদ পাতছে দুর্বৃত্তরা

গড়িয়াহাট, রবীন্দ্র সরোবর, বেনিয়াপুকুর, তিলজলা ও লেক থানা এলাকার গ্রাহকেরা টাকা লোপাটের অভিযোগ দায়ের করেছেন। কানাড়া ব্যাঙ্ক ছাড়াও স্টেট ব্যাঙ্ক, এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ইউবিআইয়ের গ্রাহকেরা এটিএম থেকে ১০ হাজার, ৫০ হাজার, এমনকি এক লক্ষ টাকা লোপাটের অভিযোগ করেছেন। গোয়েন্দা-প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘আমাদের কাছে তিনটি নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে জেনারেল ডায়েরির সংখ্যা প্রচুর। থানার সঙ্গে লালবাজারের প্রতারণা বিভাগও তদন্ত শুরু করেছে।’’

কী ভাবে টাকা লোপাট হল? সাইবার সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্তের বক্তব্য, সম্ভাবনা অনেক। হ্যাকারেরা রক্ষী-হীন এটিএমে ঢুকে ক্লোনিং মেশিন লাগিয়ে রাখতে পারে। গ্রাহক মেশিনে ডেবিট কার্ড ঢোকালেই তাঁর কার্ড ক্লোন হয়ে যাবে এবং কার্ডের সব তথ্য পেয়ে যাবে হ্যাকার। হ্যাকারেরা অনেক সময় এটিএম কাউন্টারে ঢুকে মেশিনের বোতাম খারাপ করে রাখে। তার পরে কাউন্টারের সামনে ওত পেতে থাকে। মেশিন কাজ করছে না বলে কেউ অভিযোগ করলে তারা বোতাম ঠিক করার নামে গ্রাহকের পিন নম্বর জেনে নেয় এবং পরে টাকা হাতায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE