Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বাঁধের নীল রং বদলের ‘অনুরোধ’ দুমকার

মশানজোড় বাঁধে নীলের বদলে অন্য কোনও রং করতে অনুরোধ জানিয়েছে দুমকা প্রশাসন— এমনই জানালেন বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু।

মতবিনিময়: মশানজোড় বাঁধের রং নিয়ে দুমকার জেলাশাসকের ঘরে চলছে বৈঠক। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

মতবিনিময়: মশানজোড় বাঁধের রং নিয়ে দুমকার জেলাশাসকের ঘরে চলছে বৈঠক। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০১:৫৯
Share: Save:

মশানজোড় বাঁধে নীলের বদলে অন্য কোনও রং করতে অনুরোধ জানিয়েছে দুমকা প্রশাসন— এমনই জানালেন বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু।

বুধবার সন্ধেয় মৌমিতাদেবী জানান, এ দিন দুমকায় জেলা প্রশাসনিক ভবনে বীরভূমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন দুমকার জেলাশাসক মুকেশ কুমার। সেখানেই দুমকা প্রশাসন ওই অনুরোধ জানায়। মুকেশবাবুর বক্তব্য ছিল, বাঁধে নীল রং করা নিয়ে দুমকা প্রশাসনের আপত্তি না থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দা এবং রাজনৈতিক তরফে ক্ষোভ রয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার পরে যদি ওই রং নষ্ট করে দেওয়া হয়, তবে পরিশ্রমই সার হবে।

এ নিয়ে বীরভূমের জেলাশাসকের মন্তব্য, ‘‘আমাদের তরফে জানানো হয়েছে, সরকারি সিদ্ধান্তেই বাঁধে ওই রং করা হচ্ছে। তা-ই নীল রংই করতে দিতে হবে মশানজোড় বাঁধে।’’

এ দিন দুপুরে বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমকে দুমকার জেলাশাসক বলেছিলেন, ‘‘এটা ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বা বীরভূমের সঙ্গে দুমকার লড়াই নয়। দুমকা প্রশাসন কোনও ভাবে মশানজোড় বাঁধের রং নিয়ে আপত্তি তোলেনি। স্থানীয় মানুষ ও রাজনৈতিক ভাবে আপত্তি তোলা হয়েছে।’’

মশানজোড় বাঁধের রং ঘিরে চলতি বিতর্ক মেটাতে এ দিন দুমকা ও বীরভূম জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা বৈঠকে বসেছিলেন। দুমকা জেলা প্রশাসনিক ভবনে জেলাশাসকের ঘরে ওই বৈঠকে বীরভূম প্রশাসনের তরফে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রঞ্জনকুমার ঝা, ময়ূরাক্ষী ক্যানাল সেচের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কিংশুক মণ্ডল। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন দুমকার জেলাশাসক মুকেশ কুমার, ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট কমিশনার বরুণ রঞ্জন।

বেলা ১টা থেকে ২টো পর্যন্ত বৈঠকের পরে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাননি বীরভূমের দুই আধিকারিক। রঞ্জনকুমার বলেন, ‘‘যা কিছু আলোচনা হয়েছে, তা সবিস্তারে বীরভূমের জেলাশাসককে জানাব। তিনিই পরের পদক্ষেপ ঠিক করবেন।’’

দুমকার জেলাশাসক পরে সংবাদমাধ্যমকে জানান, মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে কথা বলা হয়। বাঁধের রং, স্বাগত তোরণ দু’টির অবস্থান এবং এ সব ঘিরে আইনশৃঙখলা পরিস্থিতি। বীরভূমের প্রতিনিধিরা তাঁদের নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন। উল্লেখ করেছেন, যে বাঁধে রংয়ের কাজ আটকে দেওয়া হয়েছে। দুমকা প্রশাসনের তরফেও নিজেদের কথা জানানো হয়। মুকেশবাবু বলেন, ‘‘দ্রুত কী ভাবে সমস্যা মেটানো যায়, তা দেখা হচ্ছে। বীরভূম প্রশাসন কয়েক দিন সময় চেয়েছে। তাঁরা কী সিদ্ধান্ত নেন, তা নিয়ে পরের বৈঠকে আলোচনা করা হতে পারে।’’ তিনি জানান, প্রয়োজনে বীরভূমের জেলাশাসকের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে পারেন।

মশানজোড়ের স্বাগত তোরণে বিশ্ববাংলার লোগো বসানোর জন্য ঝাড়খণ্ডের কাছে অনুমতি কি নেওয়া হয়েছিল? মুকেশবাবু বলেন, ‘‘এ বিষয়টি বীরভূম প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছি।’’ তবে বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের চুক্তিপত্রের সঙ্গে চলতি বিতর্কের সম্পর্ক নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি জানান, মশানজোড় বাঁদ সংলগ্ন রাস্তায় থাকা স্বাগত তোরণে ঝাড়খণ্ড সরকারের স্টিকার খুলে নিয়েছিলেন বীরভূম পুলিশের কয়েক জন কর্মী। তা নিয়ে সেই জেলা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে দুমকা প্রশাসন। বীরভূমের জেলাশাসকের মন্তব্য, ‘‘স্বাগত তোরণ নিয়ে এ রাজ্যের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। উত্তর মেলেনি। দুমকার ডিএম অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে তোরণে বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কথা লেখা হয়। আমরা দ্রুত বিষয়টি মেটাতে আগ্রহী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE