প্রতীকী ছবি।
স্বাস্থ্য দফতর দরপত্র ডেকে যে-সব ওষুধ বা চিকিৎসাসামগ্রী কিনছে, তার বেশ কয়েকটিই চার-পাঁচ গুণ কম দামে খোলা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছিল। তার মধ্যে বিশেষ করে নাম ছিল ক্যানসার ও ডায়াবিটিসের কিছু দামি ওষুধের।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এ বার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনও সংস্থা ওই দফতরকে যে-দামে চিকিৎসাসামগ্রী বা ওষুধ বিক্রি করবে, তার থেকে কম দামে সে বাজারে তা বেচতে পারবে না! অর্থাৎ বাজারদরের তুলনায় কম দামে সরকারি দফতরে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহ করতে হবে। এই শর্ত মানলে তবেই কোনও সংস্থা যোগ দিতে পারবে সরকারি দরপত্রে।
সরকারি হাসপাতালে ক্যাথিটার, সিরিঞ্জ, আইভি ক্যানুলা, ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেট, ইউরিন ব্যাগ, গজ, ব্যান্ডেজ, সুতো, ছুরি, কাঁচি, তুলো, ক্ষত পরিষ্কারের সামগ্রীর মতো বিভিন্ন জিনিস সরবরাহের জন্য সর্বশেষ যে-দরপত্র (এনআইটি ৬২) ডাকা হয়েছে, তাতে এই শর্ত রেখেছে স্বাস্থ্য দফতর। গত ৩০ জানুয়ারি ছিল ওই দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এর পরে ওষুধ কেনার ক্ষেত্রেও একই শর্ত রাখা হচ্ছে।
‘‘সরকারের সঙ্গে চুক্তি হলে একটি সংস্থা প্রচুর ওষুধ বা চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহের বরাত পায়। সরকারকে তারা সব চেয়ে কম দামে জিনিস দেবে, এটাই প্রত্যাশিত,’’ বলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, কিছু সংস্থা দরপত্রের ক্ষেত্রে অনৈতিক পদ্ধতি নিচ্ছিল। তিন-চারটি সংস্থা নিজেদের মধ্যে যোগসাজশ করে দরপত্রে যোগ দিচ্ছিল। ধরা যাক, একটি সংস্থা দরপত্রে কোনও জিনিসের দাম রেখেছে ১২ টাকা। বাকি দু’টি সংস্থা ইচ্ছে করে তার থেকে এক টাকা করে বেশি রেখেছে দাম। ফলে সব চেয়ে কম দাম রাখা সংস্থাটি বরাত পেল। সে নিজেদের বোঝাপড়া অনুযায়ী ১২ টাকার মধ্যে চার টাকা বাকি দু’টি সংস্থাকে ভাগ করে দেবে। তাতেও তার লাভ থাকবে। কারণ, বাজারে ওই জিনিসটাই সে ছ’টাকায় বিক্রি করছে!
ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে রাজি নন। তাঁরা সরকারি সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, সরকার জিনিসপত্রের টাকা দিতে দেরি করে। অথচ খোলা বাজারে ব্যবসায়ীরা আগাম দাম পেয়ে যান।
কিছু অর্থনীতিবিদের বক্তব্য, সরকার এ ভাবে বাজারে জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলেন, ‘‘দরপত্রের মেয়াদ দু’তিন বছর হতে পারে। এর মধ্যে জিনিসের দাম পড়ে যেতে পারে বাজারে। ধরা যাক, একটি সংস্থা যে-দামে সরকারকে জিনিস সরবরাহ করছে, তার থেকেও বাজারে তার দাম পড়ে গেল। তখন সেই সংস্থা কী করবে? দাম কমাবে না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy