কম্পনের কেন্দ্র হুগলিতে।
কেন্দ্রস্থল হুগলি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখান থেকেই উদ্ভূত মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দক্ষিণবঙ্গের একাংশ। দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, হুগলি ও কলকাতায় কম্পন অনুভূত হয়। ভূকম্প হয়েছে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডেও।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল পাঁচ। কম্পনের উৎস ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার নীচে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র হুগলিতে হলেও খানাকুল ও গোঘাটের কিছু এলাকা ছাড়া জেলার অন্যত্র কম্পন তেমন বোঝা যায়নি। দুই মেদিনীপুরের এগরা, গড়বেতা, হলদিয়া, মেদিনীপুর শহর, খড়্গপুর ও ঝাড়গ্রামে কম্পন মালুম হয়েছে। এগরায় একটি বাড়ির একাংশ ভূমিকম্পে ভেঙে পড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
খড়্গপুর আইআইটির ভূতত্ত্ববিদ শঙ্করকুমার নাথ জানান, দক্ষিণবঙ্গে ভূকম্প অস্বাভাবিক নয়। কারণ, এই অঞ্চলে ভূস্তরের নীচে একাধিক ‘ফল্ট’ বা ‘চ্যুতি’ রয়েছে। এ দিন ভূকম্পের উৎসস্থল ছিল গড়ময়না-খণ্ডঘোষ নামে একটি চ্যুতি। ভূতত্ত্ববিদেরা জানাচ্ছেন, ভূস্তরের নীচে একাধিক পাত ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। সেগুলি পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কা খেলে বা দূরত্ব বাড়ালে শক্তি উৎপন্ন হয় এবং তা এক সময় নির্গত হয়ে ভূস্তরে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
শঙ্করবাবু জানান, ভারতীয় পাত ক্রমশ ইউরেশীয় পাতের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। তার ফলে এই সব চ্যুতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত হয়। সেই শক্তি চ্যুতির ধারণক্ষমতা ছাড়িয়ে গেলে তা বেরিয়ে আসতে চায়। তখনই হয় ভূকম্প। আইআইটির ভূতত্ত্ববিদদের পূর্বাভাস, এ দিনের কম্পনই শেষ নয়। আগামী কয়েক দিন রিখটার স্কেলে দুই থেকে চার মাত্রার ‘আফটার শক’ বা ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পন মালুম হতে পারে।
ভূতত্ত্ববিদেরা জানান, দক্ষিণবঙ্গে আগেও ভূকম্প হয়েছে এবং খাস কলকাতাতেও ভূমিকম্প হতে পারে। কম্পনে মহানগরীর কোন কোন এলাকার কতটা ক্ষতি হতে পারে, সেই বিষয়ে সমীক্ষা করেছে খড়গপুর আইআইটি ও কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান মন্ত্রক। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘হুগলি জেলায় যে ৪.৫ থেকে ৫.৫ মাত্রার ভূকম্প হতে পারে, আমরা তা আগেই গবেষণাপত্রে লিখেছিলাম।’’ বিজ্ঞানীরা জানান, কোন এলাকায় ভূকম্প হতে পারে, তা আঁচ করা গেলেও কবে কখন তা হবে, তার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। বলছেন, কোন এলাকায় ভূকম্প হতে পারে তা আঁচ করা গেলেও কবে কখন হবে সেই পূর্বাভাস এখনো সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy