কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ারে পুলিশ অফিসারদের উপস্থিতি নিয়ে ‘অখুশি’ বিমান মন্ত্রক।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার বাগডোগরা থেকে কলকাতায় আসেন। নামার আগে বিমানকে আকাশে চক্কর কাটতে হচ্ছে কি না, তার উপরে নজরদারির জন্যই এটিসি-তে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠেছে, এ বার যখনই মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় ফিরবেন, তখনই কি পুলিশ ওই টাওয়ারে ঢুকে নজরদারি চালাবে? পুলিশের বক্তব্য, এটিসি-র সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন, ওই টাওয়ারে এ ভাবে বাইরের লোক ঢুকে পড়ার নিয়ম নেই। তা হলে পুলিশ অফিসারেরা ঢুকবেন কেন?
সোমবার বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র বলেন, ‘‘চারটি ক্ষেত্রে বিমান নামার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এক) প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির বিমান হলে। দুই) বিমানটি অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা প্রধানমন্ত্রীর হলে। তিন) যাত্রী বা বিমানকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়লে। চার) কোনও কারণে বিমানে গুরুতর যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে।’’
চেয়ারম্যানের মতে, বিশ্বের আকাশে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন’ বা আইকাও-এর নির্দেশ মেনেই এই অগ্রাধিকারের বিষয়টি স্থির হয়েছে। কোনও দেশেই এই নিয়মের বিচ্যুতি হতে পারে না। এটিসি-তে রাজ্য পুলিশের উপস্থিতি প্রসঙ্গে মহাপাত্র বলেন, ‘‘আমাদের এটিসি অফিসারেরা যথেষ্ট দক্ষ। এ ভাবে বাইরের লোক ঢুকে তাঁদের উপরে নজরদারি চালানোটা অভিপ্রেত নয়।’’
কলকাতার আকাশে পৌঁছনোর পরেও আকাশে অপেক্ষা করার ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি বাগডোগরা থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে শহরের আকাশে পৌঁছনোর পরেও ১৯ মিনিট চক্কর কাটতে হয় ইন্ডিগোর বিমানকে। অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে এটিসি-তে যায় পুলিশ। গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর নামার আগে এটিসি-তে পুলিশের উপস্থিতি ভাল চোখে দেখেননি অফিসারেরা। সে-দিন বিমান নামে চক্কর না-কেটেই।
এক এটিসি অফিসার বলেন, ‘‘এ বার তো বলা হবে, সে-দিন পুলিশ ছিল বলেই বিমানকে চক্কর কাটতে হয়নি। আসলে প্রধান রানওয়ে বন্ধ রেখে দ্বিতীয় রানওয়ে দিয়ে বিমান ওঠানামা করলেই সমস্যা দেখা দেয়। প্রধান রানওয়েতে ঘণ্টায় ৩৫টি বিমান ওঠানামা করতে পারে। দ্বিতীয় রানওয়েতে ১৫টি।’’ বিমানবন্দরের অফিসারদের বক্তব্য, এ বার থেকে মুখ্যমন্ত্রী আসার ঘণ্টা দুয়েক আগেই জানানো হলে প্রধান রানওয়েই চালু রাখা হবে। কোনও কারণে সেখানে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হলে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। তা হলেই মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে বিমানকে আর আকাশে অপেক্ষা করতে হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy