‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির অন্তর্গত স্বাস্থ্যসাথীর আবেদনপত্র নিতে দূরত্ব-বিধির বালাই নেই। ফাইল চিত্র।
বাড়ল শিবির। পাল্লা দিল ভিড়। বেশির ভাগই খোঁজ নিলেন ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প নিয়ে। রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন, বুধবার প্রায় গোটা রাজ্যেই কাটল এ ভাবে।
উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং, দুই দিনাজপুর ও মালদহে বাসিন্দারা মূলত স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড, একশো দিনের কাজের জব-কার্ড, বার্ধক্যভাতার সমস্যা নিয়ে হাজির হয়েছেন সরকারি শিবিরে। ছবিটা আলাদা নয় নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, বীরভূম, দুই মেদিনীপুরে। শিবির বেড়েছে পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
সরকারি সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার শিবিরগুলিতে আবেদনকারীর সংখ্যাও বেড়েছে। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে চলতে থাকা শিবিরগুলিতে ২ লক্ষ ৭৬ হাজার ৭৫০ জন যোগাযোগ করেছিলেন। পরিষেবা চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৩ লক্ষ ৭ হাজার ৩৮১টি। তার মধ্যে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আবেদন ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ১৮৭টি। ‘খাদ্যসাথী’তে ৩২,৪৮৯ ও একশো দিনের প্রকল্পে ২৪,৮৯৩টি আবেদনপত্র পড়েছে। মঙ্গলবারও আবেদনের সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে ছিল ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প।
হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানান, এ দিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ শিবিরে যান। অর্ধেক এসেছিলেন ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে নাম তুলতে। হাওড়ায় প্রায় ২০ হাজার মানুষের অধিকাংশই নাম লেখান ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবির পরিদর্শন করেন রাজ্যের কারিগরি, প্রশিক্ষণ ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট দফতরের সচিব অনুপ আগরওয়াল। ভিড় দেখে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র জন্য আরও চারটি কাউন্টার বাড়ানোর পরামর্শ দেন ।
রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এত দিন ‘স্বাস্থ্যসাথী’ নির্দিষ্ট কিছু অংশের উপভোক্তাদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল। সম্প্রতি রাজ্য সব মানুষের জন্য প্রকল্পটি উন্মুক্ত করেছে। সরকার ঘোষণা করেছিল, শিবিরগুলিতে নাম লেখালেই প্রকল্পে নথিভুক্ত হওয়া যাবে। তাই এত দিন প্রকল্পের বাইরে থাকা মানুষেরা নাম লেখাতে যাচ্ছেন শিবিরগুলিতে।
অন্যান্য সুবিধা নিতেও অনেকে এসেছেন শিবিরে। এ দিন কর্মসূচির অগ্রগতি নিয়ে ভিডিয়ো বৈঠক করেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও বেশি উপভোক্তার আসা নিশ্চিত করতে প্রচারে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নথিভুক্ত-কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো, স্বাস্থ্যসাথীর কাউন্টারের সংখ্যাবৃদ্ধি, নথি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া দ্রুত সেরে পরের ক্যাম্পে উপভোক্তাকে সুরাহা দেওয়া নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। বিদ্যুৎ সংযোগ, ফায়ার লাইসেন্সের জন্য পৃথক কাউন্টার রাখা এবং প্রতিদিনের তথ্য নিয়ে রিপোর্ট প্রস্তুতেও জোর দেওয়া হয়েছে।
তবে শিবির নিয়ে রাজনীতির অভিযোগও উঠেছে। বাম পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকায় কোথায়, কখন শিবির হচ্ছে তার প্রচার নেই বলে অভিযোগ তৃণমূলের। অভিযোগ মানেনি পুর-কর্তৃপক্ষ। কালনায় পুরশ্রী মঞ্চে শিবির চলাকালীনই তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তরফে সমাবেশের আয়োজন করা হলে কিছু ক্ষণ কর্মসূচি থমকে থাকে বলে অভিযোগ। যদিও সংগঠনের নেতাদের দাবি, কর্মসূচির মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে সমাবেশ করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy