আল কায়দার সঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশি জঙ্গি আবদুল্লা আল মামুনের সঙ্গে মেদিনীপুর এলাকার এক খারিজি মাদ্রাসার যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। গত ৬ অগষ্ট মুজফ্ফরনগর থেকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আনসারুল্লা বাংলা টিমের এই জঙ্গিকে
গ্রেফতার করেছে। তার কাছ থেকে বিস্ফোরক বানানোর ১২ পাতার একটি বই, টেলিফোন ডায়েরি, বিভিন্ন ব্যাক্তির ১৩টি পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে।
গোয়েন্দাদের দাবি, শুধু মধ্যবঙ্গের ওই খারিজি মাদ্রাসাই নয়, ধৃত ওই জঙ্গির ডায়েরিতে নাম রয়েছে এ রাজ্যের বেশ কয়েকজনের। অসমের করিমগঞ্জ এবং মেঘালয়েরও বেশ কিছু ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের প্রমাণ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তাঁকে জেরার সূত্রেই দিল্লি পুলিশ বৃহস্পতিবার রেজাউল আহমেদ নামে আরও এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে। নকল টাকা ছড়ানোর মামলায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তাকে বেশ কিছু দিন ধরেই খুঁজছিল। তবে এদের মাথা অপর বাংলাদেশি জঙ্গি ফয়জান এখনও অধরা।
নিরাপত্তা সংস্থার একাংশ জানাচ্ছেন, আবদুল্লা বাংলাদেশের মোমিনশাহী জেলার হুসেনপুরের বাসিন্দা। সে অন্তত সাত-আট বছর ধরে ভারতে রয়েছে। তবে মূলত উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দ, সহারানপুর এলাকাতেই তার গতিবিধি ছিল। গত এক মাস আবদুল্লা মুজফ্ফরনগরে ডেরা বেঁধেছিল। তার কাছে আধার কার্ড এবং ভারতীয় পাসপোর্টও পাওয়া গিয়েছে। বাংলা, অসম, উত্তর পূর্ব থেকে দেওবন্দ-সহারানপুরের বিভিন্ন মাদ্রাসায় পড়তে আসা ছাত্রদের জঙ্গি দলে টানার কাজ করত সে। জেরায় আবদুল্লা তা স্বীকার করেছে বলেও গোয়েন্দাদের দাবি।
এক গোয়েন্দা কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের বরাবর ধারণা ছিল বাংলাদেশি জঙ্গিরা মূলত সীমান্তঘেঁষা এলাকাতেই সক্রিয়। কিন্তু
বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের পর
যে ভাবে মেদিনীপুর এলাকার মাদ্রাসার সঙ্গে আল কায়দার শাখা সংগঠনের যোগসূত্র মিলছে, তা চিন্তার।’’
কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?
ওই গোয়েন্দা কর্তা জানান, আবদুল্লার সঙ্গে যোগাযোগ থাকা এ রাজ্যের যাদের খোঁজ মিলেছে তাদের সম্পর্কে তদন্ত শুরু হয়েছে। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে ওই মাদ্রাসার বিষয়ে। তবে তার চেয়েও চিন্তার বিষয় আবদুল্লার নেতা ফয়জান এখনও অধরা। গত ছ’মাস আগেই সে উত্তরপ্রদেশ থেকে চম্পট দিয়েছে। ফলে এ রাজ্যেও সে পালিয়ে এসে থাকতে পারে বলে খোঁজ চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
তাঁদের একাংশের দাবি, বাংলাদেশে সক্রিয় আনসারুল্লা বাংলা টিমের অন্যতম চাঁই ফয়জান। আবদুল্লা বা রেজাউলকে সেই জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এসে উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দ, সহারানপুর, মুজফ্ফরনগর এলাকাতেই তারা কয়েক বছর ধরে কাজকর্ম চালাচ্ছিল বলে গোয়েন্দারা জেনেছেন। আনসারুল্লা বাংলা টিমই বাংলাদেশে আল কায়েদার শাখা সংগঠন হিসাবে কাজ করে। সে দেশে বেশ কয়েকজন নাস্তিক এবং যুক্তিবাদীদের খুনের ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ আনসারুল্লা টিমের যোগসূত্র পেয়েছে। তাড়া খেয়ে ওই জঙ্গিদের অনেকেই এ দেশে গা ঢাকা দিয়েছে বলে বাংলাদেশ সরকার দিল্লিকে জানিয়েছিল। কিন্তু আল কায়েদার সঙ্গে যুক্তদের কেউ কেউ যে পশ্চিমবঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপন করেছে তা জেনে তাজ্জব গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy