Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঋতব্রতকে নিয়ে কৈলাসের কাছে মুকুল? জল্পনা তুঙ্গে

ঋতব্রত মুখে যা-ই বলুন, তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএম — এই তিন নেতার গোপন বৈঠক ভবিষ্যতে রাজ্য রাজনীতির জন্য একটি প্রতীকী ছবি তৈরি করে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৬
Share: Save:

রং বদলের জল্পনায় চাঞ্চল্য রাজনৈতিক শিবিরে! জল্পনা, বিদ্রোহের জেরে লাল রং কি এ বার বদলে যেতে চলেছে গেরুয়ায়?

সিপিএম থেকে সদ্য বহিষ্কৃত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় যখন প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে চলেছেন, তখনই উঠে এল এই প্রশ্ন। সূত্রের খবর, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন ঋতব্রত। ওই বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা মুকুল রায়। শুধু যোগাযোগ করিয়ে দেওয়াই নয়, মুকুল নিজেও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলেই খবর।

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ঋতব্রত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেছেন, ‘‘আমার সঙ্গে তো সকলেরই ভাল সম্পর্ক। আর আমি যে সংসদীয় কমিটির সদস্য, সেখানে তো মুকুলবাবু চেয়ারম্যান ছিলেন!’’ এর পরে অবশ্য তাঁর অভিযোগ, ‘‘দিল্লিতে প্রকাশ কারাট, বৃন্দা কারাট নিজেদের ‘কোটারি’ চালাচ্ছেন। আর তাঁদের এজেন্ট হিসাবে পশ্চিমবঙ্গে কাজ করছেন মহম্মদ সেলিমের মতো নেতারা। এ সব তাঁদেরই অপপ্রচার।’’

আরও পড়ুন: হামলার আশঙ্কা মাথায় নিয়েই ছন্দে ফিরছে দার্জিলিং

ঋতব্রত মুখে যা-ই বলুন, তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএম — এই তিন নেতার গোপন বৈঠক ভবিষ্যতে রাজ্য রাজনীতির জন্য একটি প্রতীকী ছবি তৈরি করে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে। এবিপি আনন্দে দু’দিন আগে সম্প্রচারিত সাক্ষাৎকারেই ঋতব্রত জানিয়েছেন, সংসদীয় সৌজন্যবশতই তিনি প্রয়োজনে তৃণমূলের সুব্রত বক্সীর সঙ্গেও কথা বলে থাকেন। অরুণ জেটলি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তাই তাঁর সঙ্গেও নিজের অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং নিয়ে সঙ্গত প্রয়োজন থাকতেই পারে তাঁর। সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হলে তৃণমূল না বিজেপি কোন পথে হাঁটবেন — এই প্রশ্নটিও তিনি এড়িয়ে গিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, বিজেপি-র পাশাপাশি তৃণমূলের এক রাজ্যসভার নেতার সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলছিলেন ঋতব্রত। কিন্তু তাঁকে দলে নেওয়ার প্রশ্নে অনাগ্রহী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং, তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পরে ঋতব্রত সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা কৈলাসের ভাল বলেই জানা গিয়েছে।

ঋতব্রত যেমন প্রকাশ্যেই নিজের দলের সমালোচনা করে চলেছেন, মুকুলবাবু অবশ্য এখনও তা করেননি। কিন্তু তাঁর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের দূরত্ব এখন স্পষ্ট। দলের সব সংসদীয় পদ থেকে একে একে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। কার্যত তাঁকে এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, আগামী এপ্রিলে মুকুলবাবুর রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হলে আর তাঁকে টিকিট দেওয়া হবে না।

তৃণমূল সূত্রের মতে, এই সসেমিরা অবস্থায় মুকুলবাবু মরিয়া চেষ্টা করছেন বিজেপি নেতৃত্বকে সন্তুষ্ট করে সরাসরি গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে। ঘরোয়া শিবিরে তাঁকে বলতেও শোনা গিয়েছে, একটি রাষ্ট্রশক্তির সঙ্গে লড়াই করতে হলে অন্য একটি রাষ্ট্রশক্তির সাহায্য নিতে হবে! কিন্তু মুকুলবাবুর সমস্যা হল, বিজেপি এখনও তাঁকে দলে টানার প্রশ্নটি ঝুলিয়ে রেখে জল মাপছে। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, মুকুল বিজেপি নেতৃত্বকে প্রথমে কথা দিয়েছিলেন অন্তত ৪০ জন বিধায়ক-সাংসদকে সঙ্গে নিয়ে দল ভাঙার। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘সেটা তো তিনি পারলেনই না। শেষ পর্যন্ত সিপিএমের এক সাংসদকে নিয়ে হাজির করলেন বিজেপি-র দরবারে!’’ আজই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পরিচয়ে মুকুলবাবু রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেটাও দলকে না জানিয়ে বলেই জানা যাচ্ছে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE