Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতা-হাওড়ার বস্তিতে বহুতল নির্মাণে বাধা দূর 

কলকাতা ও হাওড়ার ঠিকা প্রজাদের (ঠিকা টেনেন্সি) জমিতে বহুতল নির্মাণের পথে আর বাধা রইল না। আইনগত সমস্যার কারণে কলকাতায় প্রায় ২০০০ একর এবং হাওড়ায় ৫১৭ একর জমিতে এতকাল একটি নির্দিষ্ট উচ্চতার উপরে নির্মাণ করা যেত না।

ফিরহাদ হাকিম। — ফাইল চিত্র।

ফিরহাদ হাকিম। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:২৬
Share: Save:

কলকাতা ও হাওড়ার ঠিকা প্রজাদের (ঠিকা টেনেন্সি) জমিতে বহুতল নির্মাণের পথে আর বাধা রইল না। আইনগত সমস্যার কারণে কলকাতায় প্রায় ২০০০ একর এবং হাওড়ায় ৫১৭ একর জমিতে এতকাল একটি নির্দিষ্ট উচ্চতার উপরে নির্মাণ করা যেত না। এই জমিগুলি মূলত বস্তি এলাকার। বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই ধরনের জমিতেও এখন থেকে সংশ্লিষ্ট পুরবিধি মেনে বহুতল নির্মাণ করা যাবে।

কী ভাবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, তা ঠিক করতে প্রথমে কয়েকজন সচিবকে নিয়ে গঠিত কমিটি আলোচনা করবে। পরে তা মন্ত্রিগোষ্ঠীর সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হবে। বদল হবে আইন। বস্তিবাসীদের জমি কোনও ভাবেই যাতে ‘অসাধু’ প্রোমোটারদের হেফাজতে চলে না যায়, সরকার তা দেখবে বলে প্রেস বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।

কলকাতার মেয়র তথা পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘শহরাঞ্চলের জমিতে ঠিকা প্রজা, ভাড়াটিয়া এবং সরকার মিলে উন্নয়নের কাজ করবে। যেখানে ঠিকা প্রজা এবং ভাড়াটিয়া করতে পারবেন না, সেখানে রাজ্য সরকার ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের মাধ্যমে সাহায্য করবে। পাঁচতলা আবাসনে প্রতি ভাড়াটিয়াকে ৩৮৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। বহুতল নির্মাণের পরে অবশিষ্ট অংশে সবুজায়ন, শিশুদের পার্ক, প্রেক্ষাগৃহ ইত্যাদি তৈরি হবে। বহুতলের নকশা অনুমোদন, মিউটেশন, এবং ব্যাঙ্ক ঋণ পেতে সরকার সাহায্য করবে।’’

কলকাতা শহরে জমিদারেরা এক সময়ে তাঁদের প্রজাদের বিভিন্ন জায়গায় বসতের ব্যবস্থা করেছিলেন। কলকাতার বস্তি এবং খালপাড়ের দু’ধারের জমিতে ঠিকা প্রজারা বস্তি গডে় তুলেছিলেন। জমিদারিপ্রথা বিলোপের পরে ওই সব জমির মালিকানা সরকারের হাতে চলে আসে। ১৯৪৯ সালে এ নিয়ে প্রথম আইন তৈরি হয়। পরে ঠিকা প্রজাদের জমি ভাড়া দেওয়ার অধিকার দেয় সরকার। কিন্তু আইনি জটিলতায় এত দিন সেখানে বহুতল নির্মাণ করা সম্ভব হত না। কারণ, পুরসভার নির্মাণ বিধি এই জমিতে কার্যকর করা হয়নি। সরকার সেই কাজটিই এ দিন করেছে।

ভূমি দফতর প্রাথমিক ভাবে চেয়েছিল, ঠিকা প্রজারা চাইলে জমিতে নির্মাণের জন্য তৃতীয় পক্ষের (প্রোমোটার) সাহায্য নিতে পারেন। মন্ত্রিসভা অবশ্য এ দিন এই প্রস্তাবে সরাসরি সায় দেয়নি। বলা হয়েছে, ঠিকা প্রজা ও ভাড়াটিয়ারা নিজেরা বহুতল নির্মাণ করতে চান, তা হলে সরকার বাধা দেবে না। কিন্তু তাঁদের আর্থিক সামর্থ্য না থাকলে কী হবে, সে ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ভূমি দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘সচিবদের গোষ্ঠী সেই পথই বাতলাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE