Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ডিঙি চেপে ভোট দিল বুনিয়াদপুর

চারদিকে জল থইথই করছে। মাঝখানে দ্বীপের মতো জেগে রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জয়দেবপুর শিশুশিক্ষা কেন্দ্র। বাড়ি থেকে বেরিয়ে জলে ভরা মাঠের ধারে এসে দাঁড়িয়েছিলেন লক্ষ্মীদেবীরা। ব্লক প্রশাসন নৌকের ব্যবস্থা করেছিল।

জল-ভোট: বুনিয়াদপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভেসে গিয়েছে টাঙন নদীর জলে। তাই নৌকায় চেপেই বুথের পথে। রবিবার। ছবি: অমিত মোহান্ত

জল-ভোট: বুনিয়াদপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভেসে গিয়েছে টাঙন নদীর জলে। তাই নৌকায় চেপেই বুথের পথে। রবিবার। ছবি: অমিত মোহান্ত

অনুপরতন মোহান্ত ও পার্থ চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩০
Share: Save:

স্কুলের বারান্দায় ধাক্কা খেয়ে কিছুটা সরে গেল নৌকা। বারান্দা থেকে ছুটে এসে হাত বাড়িয়ে নৌকা ধরলেন কয়েক জন। ডিঙিতে বসে লক্ষ্মীরানি রায়। বয়স প্রায় আশি। হাত ধরেই নেমে বারান্দা পেরিয়ে বুথে। ইভিএমে বোতাম টিপে, হাতে কালি লাগিয়ে ফের উঠলেন নৌকায়। বারান্দায় লগি ঠেকিয়ে ঠেলা দিলেন মাঝি।

চারদিকে জল থইথই করছে। মাঝখানে দ্বীপের মতো জেগে রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জয়দেবপুর শিশুশিক্ষা কেন্দ্র। বাড়ি থেকে বেরিয়ে জলে ভরা মাঠের ধারে এসে দাঁড়িয়েছিলেন লক্ষ্মীদেবীরা। ব্লক প্রশাসন নৌকের ব্যবস্থা করেছিল। ৫-৬ জন করে নিয়ে ডিঙি জলভরা মাঠ পেরিয়ে পৌঁছচ্ছিল স্কুলের বারান্দায়। স্বপ্না বিশ্বাস বললেন, ‘‘আগে চড়া রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু নৌকায় চেপে ভোট এই প্রথম।’’

আরও পড়ুন: বিক্ষিপ্ত অশান্তি, ‘উধাও’ কমিশন

বৃষ্টি শুরু হয় শনিবার থেকে। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির নয় নম্বর ওয়ার্ডের কিছু কেন্দ্রেও জল পেরিয়ে পৌঁছতে হয়। উত্তর বোরাগড়ি জুনিয়র হাইস্কুল চত্বরে বালির বস্তায় পা দিয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছন বাসিন্দারা। নেতাজিপাড়া, বৈরাতিগুড়ি, ঘোষপাড়ার ভোট কেন্দ্রর চারপাশেও জল থইথই। তবে বুনিয়াদপুর ও ধূপগুড়িতে ভোট ব্যাহত হয়নি। ধূপগুড়িতে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ৮৮.৭% ভোট পড়েছে। বুনিয়াদপুরে ভোট পড়েছে ৮০.৮%। তার মধ্যে জয়দেবপুরে বিকেল চারটের মধ্যেই ৮০ শতাংশের উপরে ভোট পড়ে।

ভোট শেষে তাই স্বস্তির নিঃশ্বাস প্রশাসনিক কর্তাদের। আবার তোড়ে বৃষ্টি নামলে অথবা জল বাড়লে ফের শহরে জল ঢোকার আশঙ্কা ছিল। কুমলাই নদী থেকে কয়েকশো মিটার দূরে ধূপগুড়ি হাইস্কুল। শনিবার রাতে কুমলাইয়ের জল ঢুকেছিল শহরে। কিন্তু তার পরে বৃষ্টির তেজ কমলে, জল নামতে থাকে। দুপুর বারোটা নাগাদ ওয়াকিটকিতে এক পুলিশ অফিসার কর্তাদের জানাচ্ছিলেন, ‘‘নদীর জল বাড়েনি, স্যার।’’ পরে বললেন, ‘‘এত দিন ভোটে কর্তাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জানাতে হতো। এ বার নদীর জল বাড়ছে কি না, ঘনঘন সেই রিপোর্ট পাঠালাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE