Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কালীমন্দির গড়তে সাহায্য আব্দুল, মনিজাদের

রাজ্য রাজনীতিতে নানুর তথা বাসাপাড়া এক পরিচিত নাম। সেই বাম আমল থেকে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে বারবার তেতে উঠেছে বাসাপাড়া। সেই হানাহানি আজও থামেনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অর্ঘ্য ঘোষ 
নানুর শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:০৮
Share: Save:

বছর দুয়েক আগে রাস্তা চওড়া করার সময় ভাঙা পড়েছিল কালীমন্দির। তার পর থেকেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে পুজো করা। মুশকিল আসান হয়ে এগিয়ে এসেছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। তাঁদের আর্থিক এবং অন্য সহযোগিতায় তৈরি হচ্ছে আর্কষণীয় কালীমন্দির। নবনির্মিত সেই মন্দিরেই এ বার কালীপুজোয় মেতে উঠবেন নানুরের বাসাপাড়ার হিন্দুরা।

রাজ্য রাজনীতিতে নানুর তথা বাসাপাড়া এক পরিচিত নাম। সেই বাম আমল থেকে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে বারবার তেতে উঠেছে বাসাপাড়া। সেই হানাহানি আজও থামেনি। রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাসাপাড়ার এই সম্প্রীতি ব্যতিক্রমী—বলছেন এলাকার মানুষজনই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিরিশেক আগে প্রয়াত রামজীবন পাঁজার উদ্যোগে বাসাপাড়া বাজারে সর্বজনীন কালীপুজোর প্রচলন। ওই পুজোর জন্য নানুর-বাসাপাড়া সড়ক লাগোয়া চৌরাস্তার কাছে ইটের গাঁথনি দেওয়া খড়ের চালের মন্দির নির্মিত হয়। কিন্তু, বছর দুয়েক আগে রাস্তা সম্প্রসারণের সময় মন্দিরটি ভাঙা পড়ে। পরের বছর কোনও রকমে প্যান্ডেল করে পুজো হয়। কিন্তু প্রতি বছর প্যান্ডেল তৈরি করে পুজো করা ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। পুজো বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দেয়। মন খারাপ হয়ে যায় উদ্যোক্তাদের।

সেই সময় পাশে এসে দাঁড়ান ওই এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন। তাঁদের অন্যতম স্থানীয় বাসিন্দা তথা বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান, স্থানীয় থুপসড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মীরমাখন আলি, নানুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মনিজা বিবি, প্রাক্তন প্রধান আলম চৌধুরী, সমাজকর্মী বাপ্পা চৌধুরী প্রমুখ। তাঁদের সঙ্গে হাত মেলান স্থানীয় বাসিন্দা হাফেজ শেখ নাসিরুদ্দিন, বাসাপাড়া মাদ্রাসার সম্পাদক মনসুর শেখ, নিখিল ভট্টাচার্য, ভরত মাঝি, বরকা হাঁসদা, বন্যেশ্বর থান্দার প্রমুখ। নিজেরা তো টাকা দেনই, সঙ্গে গ্রামে গ্রামে চাঁদা তুলে প্রথমে সংগ্রহ করেন মন্দির নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি। নামমাত্র মূল্যে মন্দির তৈরির জন্য কাঠা পাঁচেক জমি দেন প্রয়াত শিশুপদ দে। সেই জমিতেই প্রায় সাত লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে কালীমন্দির।

পুজো কমিটির সভাপতি সুনীল সাহা, সম্পাদক কাশীনাথ কুণ্ডু বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু ভাইবোনেরা পাশে না দাঁড়ালে হয়তো বেশি দিন পুজো চালাতে পারতাম না।’’ আব্দুল কেরিম খানের কথায়, ‘‘রাস্তা সম্প্রসারণের সময় মন্দির নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। তখনই আমরা চাঁদা তুলে অন্যত্র মন্দির তৈরি করে দেব বলে কথা দিয়েছিলাম। সেই কথা রাখতে পেরে ভাল লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Temple Muslim Communty Nanur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE