Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নবাব-জেলায় পুলিশি ভাগ!

এক শীর্য পুলিশ কর্তা জানান, এ ব্যপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে ঠিকই তবে কবে তা চূড়ান্ত করা হবে তা নিয়ে কতা এগোয়নি।  

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

বিমান হাজরা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০৩:৩১
Share: Save:

মুর্শিদাবাদ জেলা বিভাজন নিয়ে কানাঘুষো বহু দিনের। প্রশাসনিক স্তরে এ দাবি নতুন নয়। জেলা বিভাজনের প্রথম ধাপ হিসেবে এ বার পুলি‌শ জেলা বিভাজনের কথা উঠল। এ ব্যাপারে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর প্রাথমিক বৈঠকও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

এক শীর্য পুলিশ কর্তা জানান, এ ব্যপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে ঠিকই তবে কবে তা চূড়ান্ত করা হবে তা নিয়ে কতা এগোয়নি।

জঙ্গিপুর মহকুমার ফরাক্কা, শমসেরগঞ্জ, সুতি, রঘুনাথগঞ্জ, সাগরদিঘি ছাড়াও এই নতুন পুলিশ জেলার অন্তর্ভূক্ত হতে পারে লালগোলা, ভগবানগোলা এবং রানিতলা থানা এলাকা।

জঙ্গিপুরে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ও এমডিআই’য়ের মত দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, রয়েছে ফরাক্কা ব্যারাজ, এনটিপিসি ও পিডিসিএলের মত বিদ্যুৎকেন্দ্র, বেশ কিছু কল-কারখানা, চাল কল এবং সর্বোপরি শতাধিক বিড়ি কারখানা। যা এলাকার গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। তাই পৃথক পুলিশ জেলা গড়ে জঙ্গিপুরকে আরও বেশি নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছেন মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

জেলার মন্ত্রী এবং ওই এলাকার বাসিন্দা ততা বিড়ি-মালিক জাকির হোসেন বলেন, “পুলিশ যত কাছে আসবে মানুষ তত নিরাপত্তা পাবে ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য সরকার।” রাজ্য সরকারের অন্য বহু সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেও এই সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছে সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেস।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “পুলিশি জেলা যত ছোট হবে পুলিশের নজরদারি তত বাড়বে। মানুষ পুলিশকে কাছে পাবে। কিন্তু সাফল্যের সবটাই নির্ভর করছে তাদের কাজের সদিচ্ছার উপর।’’

বিজেপির (উত্তর মর্শিদাবাদ) জেলা সভাপতি সুজিত দাস বলেন, “ফরাক্কা থেকে ভগবানগোলা সবটাই প্রায় বাংলাদেশ ঘেঁষা। স্বভাবতই জঙ্গি কার্যকলাপ, পাচার, জাল নোট, আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদকের কারবার যে হারে বেড়েছে তাতে পৃথক পুলিশ জেলা গড়ার সিদ্ধান্তে নজরদারি বাড়ানো সম্ভব হবে।”

কংগ্রেসের ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হকও বলচেন, “পুলিশি জেলা বাড়লে ভাল কথা। কিন্তু পুলিশের উপর মানুষের আস্থা বাড়াতে হবে। মুর্শিদাবাদ জেলায় পুলিশের উপর আস্থা কমেছে। সেটা ফিরিয়ে আনা সবার আগে দরকার।”

জেলায় বর্তমানে ২৭টি থানা ও ২টি মহিলা থানা রয়েছে। জেলায় জনসংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় থানা রঘুনাথগঞ্জ। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ৫.৪৭ লক্ষ জনসংখ্যা সেখানে। রয়েছে ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পুরসভা। আর আয়তনে জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় থানা সাগরদিঘি ৩৪৫.২০ বর্গ কিলোমিটার। শুধু তাই নয় , জঙ্গিপুর মহকুমা অপরাধের সংখ্যাতেও রয়েছে প্রথম দিকে। গত কয়েক বছরে একাধিক সন্ত্রাসবাদী ধরা পড়েছে শমসেরগঞ্জ, রঘুনাথগঞ্জ ও লালগোলা থেকে। জাল নোট, মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারেও যথেষ্ট বাড়বাড়ন্ত এই থানাগুলিতে। ৮৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ২টি পুরসভা এলাকা পড়ছে এই নয়া পুলিশ জেলায়।

তবে জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nabanna Police Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE